আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
74 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (9 points)
আসসালামু আলাইকুম
আমি 7মাসের গর্ভবতী এবং অসুস্থতার জন্য বাবার বাড়িতে এসেছি এবং দীর্ঘ কয়েক মাসের জন্যই থাকবো ইনশা আল্লাহ। স্বামী দূরে থাকেন চাকরীর জন্য। তিনি প্রতি সপ্তাহে আসতে চেয়েছেন কিন্তু সবসময় পারেন না। আমাদের দুইজনেরই শারীরিক চাহিদা অনেক,বিয়ের কেবল 1বছর হয়েছে। আমার স্বামী একদিনের বেশি থাকতে পারেন না সহবাস ছাড়া,আমার শারীরিক অসুস্থতার সময় আমি তাকে হস্তমৈথূন করে দিতাম। আমি যতটুক জানি স্বামী স্ত্রী একে অপরকে হস্তমৈথূন করে দিতে পারবেন,সেজন্যেই এটা নিয়ে কোনো কনফিউশন ছিল না। কিন্তু এখন দূরে চলে আসায় আমার স্বামী প্রায় এক সপ্তাহ পার হয়ে গিয়েছে আসতে পারেন নাই আমার এখানে। উনি বারবার বলতেন তার অনেক কষ্ট হচ্ছে,তিনি আর পারছেন না,ভিডিও কলে হস্তমৈথূন করা যাবে কিনা! তিনিও দ্বীন মেনে চলেন। দুইজনেই ভয় পাচ্ছিলাম এটা হারাম হয়ে যায় কিনা। শেষমেষ তিনি আর পারেন নি থাকতে,আমারও অনেক খারাপ লাগছিল তাই একরকম খারাপ লাগা নিয়েই গতকাল ভিডিও কলে আমাকে দেখে দেখে তিনি হস্তমৈথূন করেছেন। তিনি থাকতে পারছেন না,বিয়ের পর কখনোই আমরা আলাদা থাকিনি। এখন বাধ্য হয়ে এভাবে আলাদা থাকতে হচ্ছে। তিনি বারবারই ফোন দিয়ে আমাকে বলেন তার প্রচুর চাহিদা আসছে,তিনি থাকতে পারছেন না,কিছুতে মন বসাতে পারেন না এটা না করতে পারলে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে এভাবে স্বামী স্ত্রী ভিডিও কলে কি হস্তমৈথূন করতে পারবে? এটা জায়েজ হবে? কোন পর্যায়ে গেলে জায়েজ হতে পারে? আমাকে বিস্তারিত বলবেন। মনের ভিতরে অনেক অশান্তি কাজ করছে সবকিছু নিয়ে


উল্লেখ্য,আমার স্বামী দ্বীন মানেন,আমিও মেনে চলি। কখনোই অশ্লীল কিছু উনি দেখেন না,আমিও দেখিনা। বিয়ের আগেও উনার কোনো হস্তমৈথুনের বদভ্যাস ছিল না,খারাপ কিছু দেখার অভ্যাস ছিল না। দ্বীনের পথে চলার চেষ্টা করেছি দুইজনেই। কিন্তু বিয়ের পর এখন আর থাকতে পারি না শারীরিক চাহিদার জন্য,বিশেষ করে আমার স্বামী

1 Answer

0 votes
by (583,020 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

মহান আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেনঃ

نِسَآؤُكُمْ حَرْثٌ لَّكُمْ فَأْتُواْ حَرْثَكُمْ أَنَّى شِئْتُمْ وَقَدِّمُواْ لأَنفُسِكُمْ وَاتَّقُواْ اللّهَ وَاعْلَمُواْ أَنَّكُم مُّلاَقُوهُ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ

তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্য ক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর। আর নিজেদের জন্য আগামী দিনের ব্যবস্থা কর এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাক। আর নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ যে, আল্লাহর সাথে তোমাদেরকে সাক্ষাত করতেই হবে। আর যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সুসংবাদ জানিয়ে দাও।(সূরা বাকারা-২২৩)

আল্লাহ অত্র আয়াতে স্ত্রীর সাথে সহবাস ও স্ত্রীর নিকট থেকে ফায়দা গ্রহণের মূলনীতি মূলক আলোচনা করছেন।সুতরাং পিছনের রাস্তা ব্যতীত স্ত্রীর কাছ থেকে যেকোনো পদ্ধতিতে ফায়দা গ্রহণ করা যাবে, এ অনুমতি রয়েছে।

সুতরাং স্ত্রীর শরীরের যেকোনো অঙ্গ দ্বারা ফায়দা গ্রহণ জায়েয।এজন্য উলামায়ে কেরাম বলেন,কোনো কারণে স্ত্রী সহবাস অসম্ভব হলে,তখন স্ত্রীর হাত দ্বারা হস্তমৈথুনের অনুমোদন রয়েছে।

https://ifatwa.info/46220/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
বিয়ে শাদীর মূল মাকসাদ শুধুমাত্র আনন্দ ফুর্তি নয়।বরং বিয়ে শাদীর প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ মাকসাদ হল,সন্তান জন্ম দেয়া ও নবীর উম্মত বাড়ানো।তাই বিনা প্রয়োজনে এমনটা করা যাবে না।বরং সর্বদা নির্দিষ্ট রাস্তায়ই সহবাস করতে হবে।হ্যা বিশেষ প্রয়োজনে পরস্পর পরস্পরের মাধ্যমে হস্তমৈথুনের অনুমোদন ও রুখসত রয়েছে।এ রুখসত শুধুমাত্র প্রয়োজন পর্যন্ত।এটাকে আম হুকুম ভাবা যাবে না।

তাই গর্ভাবস্থায় স্ত্রীর বা বাচ্চার সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে স্বামী তার স্ত্রীর হাত দ্বারা হস্তমৈথুন করাতে পারবে।
স্ত্রী স্বামীর হাত দ্বারা হস্তমৈথুন করাতে পারবে।
,
আরো জানুনঃ


গর্ভাবস্থায় স্ত্রীর বা বাচ্চার সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে কিংবা তার হায়েজ চলাকালে কিংবা অসুস্থতার কারণে স্ত্রী সহবাস অসম্ভব হলে,তখন স্ত্রীর হাত দ্বারা হস্তমৈথুনের অনুমোদন রয়েছে।

উল্লেখ্য, বিশেষ প্রয়োজনে পরস্পর পরস্পরের মাধ্যমে হস্তমৈথুনের অনুমোদন ও রুখসত রয়েছে।এ রুখসত শুধুমাত্র প্রয়োজন পর্যন্ত।এটাকে আম (ব্যাপক আকারে) হুকুম ভাবা যাবে না।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এভাবে স্বামী স্ত্রী ভিডিও কলে হস্তমৈথূন করতে পারবেনা। এটা জায়েজ হবেনা।

হাত বা অন্য কিছুর মাধ্যমে বীর্যপাত, স্বমৈথুন বা হস্তমৈথুন
করা কোরআন সুন্নাহ ও সুস্থ বিবেকের নির্দেশ মতে হারাম ও কবিরা গুনাহ।

আব্দুল্লাহ ইবন আমর ইবন আস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
عبد الله بن عمرو بن العاص عن النبي صلى الله عليه وسلم سبعة لا ينظر الله عز وجل إليهم يوم القيامة ولا يزكيهم ويقول : ادخلوا النار مع الداخلين : الفاعل والمفعول به ، والناكح يده ، وناكح البهيمة ، وناكح المرأة في دبرها ، وناكح المرأة وابنتها ، والزاني بحليلة جاره ،والمؤذي لجاره حتى يلعنه
“সাত শ্রেণীর লোকের উপর আল্লাহ অভিশাপ বর্ষণ করেন, কিয়ামতের দিন এদের দিকে তাকাবেন না এবং এদেরকে জাহান্নামে প্রবেশের আদেশ দিবেন। এরা হল–সমকামী, হস্তমৈথুনকারী, জীবজন্তুর সাথে সঙ্গমকারী, স্ত্রীর সঙ্গে পুংমৈথুনকারী, কোন মহিলা ও তার কন্যাকে একসাথে বিবাহকারী, প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে ব্যভিচারকারী এবং প্রতিবেশীকে এমন কষ্টদানকারী যে, যার কারণে সে তাকে অভিশাপ দেয় । তবে এরা যদি তাওবা করে তাহলে তারা সবাই হয়ত ক্ষমা পেতে পারে।” (বাইহাকী, শুয়াবুল ঈমান৭/৩২৯)

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: يَجِيءُ النَّاكِحُ يَدَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيَدُهُ حُبْلَى 
হযরত আনাস বিন মালেক রাঃ বলেন, কিয়ামতের ময়দানে হস্তমৈথুনকারী এমনভাবে উঠবে যে, তার হাত গর্ভবতী থাকবে। [শুয়াবুল ঈমান, বর্ণনা নং-৫০৮৭]

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
এভাবে হস্তমৈথুন যেহেতু জায়েজ নয়,সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি নিজ স্বামীর বাসায় থাকতে পারেন, এক্ষেত্রে  আপনি যেহেতু ৭ মাসের গর্ভবতী এবং অসুস্থতাও আছে,তাই নিজের মাকে কাছে রাখতে পারেন,চাইলে নিজের জন্য খাদেমাহ রাখতে পারেন।

এটা সম্ভব না হলে সেক্ষেত্রে অন্য কোনো উপায়ে স্বামীকে যেভাবেই হোক প্রতি সপ্তাহে আসতে হবে।

সেটি সম্ভবপর না হলে সেক্ষেত্রে তিনি আগত সন্তানের সুস্বাস্থের চিন্তায় সহবাসের চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলবেন।

নিয়মিত নামায আদায় করতে হবে এবং আল্লাহর কাছে মুনাজাত করে, তাঁকে স্মরণ করে, তাঁর কিতাব তেলাওয়াত করে স্বাদ অনুভব করতে হবে। 

আল্লাহ্ তাআলা বলেন,
اتْلُ مَا أُوحِيَ إِلَيْكَ مِنَ الْكِتَابِ وَأَقِمِ الصَّلَاةَ إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاء وَالْمُنكَرِ وَلَذِكْرُ اللَّهِ أَكْبَرُ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا تَصْنَعُونَ
আপনি আপনার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব পাঠ করুন এবং নামায কায়েম করুন। নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন তোমরা যা কর। (সূরা আনকাবুত ৪৫)

তারপরেও তিনি নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পারলে সেক্ষেত্রে ২য় বিবাহ করতে পারেন।
দ্বিতীয় বিবাহের শর্তাবলী জানুনঃ-


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...