আসসালামু আলাইকুম।
আমার বিয়ে হয় ২০২৩ এর অক্টোবর মাসে।বিয়ের শুরু থেকে আমি জানতাম তালাক দিতে হয় কোর্টের মাধ্যমে। স্বামী /স্ত্রী কে নোটিশ পাঠাতে হয়।এভাবেই তালাক হয় আর হাসবেন্ড কে মুখে তালাক দিতে হয়।কেনায়া শব্দ,খুলা তালাক,তালাকে তাফভীজ এসব আমি জানতাম না।আমার স্বামী জানতো স্বামীরা ই কেবল তালাক দিতে পারে।স্ত্রীরা পারে না।কাবিননামার ১৮ নং কলাম সম্পর্কে ও তিনি অবগত ছিলেন না।বিয়ে পড়ানোর আগে ও কাজী সাহেব তাকে এই বিষয়ে জানান নি।তালাকে তাফভীজ নিয়ে ও তার কোনো জ্ঞান ছিলোনা। কাবিননামার ১৮ নং কলাম আমার হাসবেন্ড এর সাইন করার সময় ফাঁকা ছিলো।
বিয়ের পর আমাদের আলাদা থাকা লাগতো জবের কারণে। এজন্য দূরে থাকলেই আমাদের প্রচুর ঝগড়া হতো মেসেজ এ।তখন একদিন আমার স্বামী তার কিছু ব্যক্তিগত সমস্যার জন্য আমাকে বলেছেন, "তুমি আমাকে তালাক দিয়ে দিও"।পরে ওই সমস্যা সাময়িক ভাবে মিটে যায়।এভাবে ঝগড়া হতো আর আমি তার কাছে তালাক চাইতাম।।উনি বলতো, "তোমার দেয়ার হলে তুমি দাও।আমি দিতে পারবো না।" তখন উনার নিয়ত ছিলো / জানা ছিলো যে মহিলারা তালাক দিতে পারে না।
তখন আমি বলতাম, "তোমার মোহর আমি মাফ করে দিসি।এখন দাও"।তখন উনি আরও রেগে যেতো আর বলতো উনার মোহর দেয়ার সামর্থ্য আছে।উনার দেয়ার হলে উনি মোহর পরিশোধ করেই দিবে।কিন্তু উনি আমাকে কোনোদিন তালাক দেন নি। আমি পরে জানতে পারসিলাম যে মহিলারা তালাক দিতে পারে না।
এরপরে ঝগড়া হলেই আমি বলতাম, "তোমার সংসার করবো না, তোমার ভাত খাবো না,তোমার সাথে থাকবো না,থাকতে চাই না। আমার বাসায় কল দিয়ে বলতাম আমি এই ছেলের সাথে থাকতে পারতেসি না।তোমরা আমাকে নিয়ে ফেলো / ব্যবস্থা করো।," এসব আমি নিজের উপর তালার গ্রহণ করার নিয়তে বলতাম না।তবে তালাকের ব্যবস্থা হোক এই চিন্তা করে বলতাম।কারন আমি ও পরের দিকে জানতাম মহিলা রা তালাক দিতে পারে না।আর আমার হাসবেন্ড এসবের উত্তরে বলতো," না করার হলে না করো।নোটিশ পাঠানোর হলে তুমি ই পাঠাও।আমি তোমাকে তালাক দিবো না।তোমার দেয়ার হলে তুমি দাও।"এসব নাকি উনি আমাকে থামানোর জন্য বলতেন।উনি তো জানতেন না যে এসব কথা দ্বারা ও তালাকের অধিকার দেয়া হয়ে যেতে পারে।তো উনি তালাকের অধিকার দেয়ার নিয়ত নিয়ে নাকি এসব বলতেন না।শুধু ঝামেলা এড়ানোর জন্য এসব বলতেন। আমি ও উনার এসব কথায় উত্তর দিতাম, "হ্যাঁ করবো না সংসার।" নিজের উপর তালাক প্রদানের নিয়তে কোনোদিন এসব বলি নি।তবে তালাক হয়ে যাক মানে হচ্ছে আমার হাসবেন্ড / আমার ফ্যামিলি তালাকের ব্যাপার এ ব্যবস্থা নিক এসব চিন্তা করে বলতাম এবং এসব কথা বলার সময় আমার আর সংসার এবং এই সম্পর্ক টানার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা থাকতো না।
পরে সেপ্টেম্বর মাসের দিকে আমি জানতে পারসি তালাকের তাফবীজ নিয়ে।এরপর থেকে এধরনের কথা বললে ও মনে মনে বলতাম তালাক গ্রহন করিনি।করবো না।কিন্তু উনারা ব্যবস্থা নিক এটার চাওয়া থাকতো কখনো কখনো। রাগ করে বাপের বাড়ি যেতে চাইলে ও মনে মনে বলতাম তালাক গ্রহন করছিনা।করবো না।তালাকে তাফবীজে নিয়ে ওয়াস ওয়াসা ও কাজ করতো।কিছু বললেই মাথায় অধিকার গ্রহণ করার বিষয় চলে আসতো।কিন্তু আমি কোনোদিন মুখে / লিখে তালাক গ্রহন করিনি।করবো ও না।
আমার প্রশ্ন হলো আমি কি তালাকের অধিকার প্রাপ্ত হইসি?
আমার কোনো কথার দ্বারা কি তালাক হইসে?
বিদ্রঃ আমার হাজব্যান্ড কে তাহবিজ সম্পর্কে জানার পর জিজ্ঞাসা করেছি যে তুমি কি আমাকে কোনদিন অধিকার দিয়েছ? তখন সে বলেছে কোনদিনই অধিকার দেয় নি।কিন্তু উনি জানতেন শরিয়ত অনুযায়ী মহিলা রা তালাক দিতে পারে না।তবে বাংলাদেশের আইনে মহিলাদের এই অধিকার আছে। কাবিন নামার এই ব্যাপারে কাজি কোন কিছু বলে নেন নি।তবে মৌখিক ভাবে আমার স্বামী বলেছেন উনি এই অধিকার দেন নি।
কিন্তু ঝগড়া হলেই উপরোক্ত কথা সমূহ বলেছেন। কথাগুলো বলার সময় তার নিয়ত ছিল ঝগড়া থামানো।অধিকার দেয়া নয়।
মুফতি সাহেবের সাথে সরাসরি অথবা ফোনে কথা বলার কি কোন সুযোগ আছে?