আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
14 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ ওয়া বারকাতুহ।
আমার বাবা একজন হাফেজের কাছ থেকে শরীরে থাকা বিয়েতে বাধা দানকারী  জীন, জাদু নষ্টের জন্য তদবির এনেছেন। উনি যা দিয়েছেন -

১) ৪০দিন সুরা নিসা এবং সুরা আহজাব তিলওয়াত করতে হবে এবং ফজরের পর ইয়া ফাত্তাউ পড়তে হবে ৪০বার।

২)৪০ দিন অয়েল ম্যাসাজ,পানি দিয়ে গোসল এবং পান করতে হবে।
৩)৪০ দিন ২ রাকাআত নামাজ পরে দুরুদ শরীফ পড়ে বড়োপীড়ের উসিলা দিয়ে আল্লাহর নিকট দোয়া করতে বলেছেন।
৪) মঙ্গলবার একটা রোজা রেখে রাত ১২টায় পরা পানি দিয়ে গোসল দিতে হবে।
৫)সাথে একটি তাবিজ নিতে হবে।
৬) কিছু একটা আগুনে গরম করতে হবে। তবে এটা জিন সরানোর জন্য না মনে হচ্ছে।
শেষের ৩ টায় চরম আপত্তি আছে আমার।

 আমার সমস্যা বলছি।আমার সমস্ত শরীরে জীন চলাচল করে। সরাসরি  ৩ সেশন রুকিয়াহ করার পরও বাবা টানা ১৫ দিন ঝাড়ছিল গড়ে ৪৫মি.। তখন এক্টিভ হয়ে কান্না করে কিন্তু কিছু বলে না। আম্মু ও ৩০মি.এর মতো ঝাড়ছে তাও এক্টিভ হয়। কিন্তু উনারা বয়স্ক মানুষ অসুস্থ, অনভিজ্ঞ।এখন আর  ঝাড়তে চায় না+ পারেও না।  চিন্তায় উনারা স্ট্রোক হবার উপক্রম। তাবিজ নিব না বলার পর আম্মু আরও অসুস্থ হয়ে যায়।আমি সুস্থ হলেই উনারা সুস্থ, চিন্তামুক্ত হয়। আম্মু দোয়া করতে করতে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। আম্মু,আমি ২ জানেরই সব দোয়া কবুল হচ্ছে কিন্তু জিনের সমস্যা আল্লাহ  এখনো দূর করছেননা। সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার পড়তে পড়তে তাবিজ হাতে নিছি। আবার খুলে ফেলছি।এরমধ্যে ২বার চেক করেছে খুলে ফেলছি কিনা।আমাকে কেন্দ্র করে  বাসায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় আম্মু অসুস্থ হয়ে যায়।।সবাই আমার বিপক্ষে।আগে রাগারাগি, কান্নাকাটি করতাম কিন্তু তাদের ধারণা জিন তাবিজ নিতে দেয়না তাই এবার চুপ করে তাবিজটা নিয়েছি।মেয়ে মানুষ পরিবার ছেড়ে কোথায় যাবো? ঘরে থাকলেও এগুলো পোহাতে হবে।
১) কিছু না বলে তাবিজ নেয়ার জন্য কি আমার ইমান চলে গেছে ? তওবা করতেছি।

২)এই  তদবির কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে? আমি শুধু পানি,  তেল এবং তিলওয়াত করতে চেয়েছিলাম।
৩)তাবিজ নষ্ট করে শুধু মাদুলি রাখলে গুনাহ হবে? সেটা না পাড়লে তাবিজ সাথে নিয়ে আমল,ইবাদত করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে?

 ৪) কুরআন মাজিদে/ওজিফার শুরুতে সুরার নকশা আছে সংখ্যা দিয়ে। এগুলো কি ব্যবহার করা জায়েজ?
৫)নজর,হিংসা, জাদু, পেটের মধ্যে জাদু, গীট আছে। একটার পর একটা ট্রিটমেন্ট করছি। আমি দিনে ২ঘন্টার মতো তিলওয়াত +আমল,গোসল ইত্যাদি  সব করতেছি।রুকিয়াহর আয়াতগুলো প্রিন্ট করে নিয়ে পড়তেছি।বেশিরভাগ দোয়া মুখস্থ হয়ে গেছে। আর কি করবো??

খুটিয়ে খুঁটিয়ে সব বর্ননা দিলাম।

  আমার পরিস্থিতিটা একটু অনুধাবন করে অসহায় দীনী বোনকে উত্তম পরামর্শ দিন প্লিজ। (উল্লেখ্য পরিবারের জন্য সব সময় দোয়া চলমান)

পয়েন্টগুলো ব্যতীত আরো কোনো পরামর্শ থাকলে সেটা বলার অনুরোধ রইলো।

1 Answer

0 votes
ago by (605,820 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
আল্লাহ সবকিছুর খালিক ও মালিক,জগতের সব কিছু উনার হুকুমেই সংগঠিত হয়,তাবিজ বা ঔষধের অদ্য কোনো ক্ষমতা নেই। এমন আক্বিদা পোষণ করে জায়েয ও বৈধ কালামের মাধ্যমে চিকিৎসা হিসেবে ঝাড়-ফুক ও তাবিজ ব্যবহার বৈধ আছে।বিস্তারিত জানুন-
https://www.ifatwa.info/226

সুতরাং আকিদা বিশুদ্ধ তথা শে'ফা দানকারী একমাত্র আল্লাহ তা'আলা এমন আকিদা বিশ্বাস রেখে ঔষধী গাছের অংশ বিশেষ দ্বারা তাবিজ ব্যবহার করতে পারবেন।

নিম্নোক্ত হাদীসে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযি নিজ নাবালিগ সন্তাদিকে তাবিজ লঠকিয়ে দিতেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়-
আমর ইবনে শুয়াইব তার সনদে বর্ণনা করেন,
ﻋﻦ ﻋَﻤْﺮِﻭ ﺑْﻦِ ﺷُﻌَﻴْﺐٍ ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ ، ﻋَﻦْ ﺟَﺪِّﻩِ ، ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻗَﺎﻝَ : ( ﺇِﺫَﺍ ﻓَﺰِﻉَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨَّﻮْﻡِ ﻓَﻠْﻴَﻘُﻞْ : ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻜَﻠِﻤَﺎﺕِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺍﻟﺘَّﺎﻣَّﺎﺕِ ﻣِﻦْ ﻏَﻀَﺒِﻪِ ﻭَﻋِﻘَﺎﺑِﻪِ ﻭَﺷَﺮِّ ﻋِﺒَﺎﺩِﻩِ ، ﻭَﻣِﻦْ ﻫَﻤَﺰَﺍﺕِ ﺍﻟﺸَّﻴَﺎﻃِﻴﻦِ ﻭَﺃَﻥْ ﻳَﺤْﻀُﺮُﻭﻥِ ﻓَﺈِﻧَّﻬَﺎ ﻟَﻦْ ﺗَﻀُﺮَّﻩُ ) . . ﻓَﻜَﺎﻥَ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦُ ﻋَﻤْﺮٍﻭ ، ﻳُﻠَﻘِّﻨُﻬَﺎ ﻣَﻦْ ﺑَﻠَﻎَ ﻣِﻦْ ﻭَﻟَﺪِﻩِ ، ﻭَﻣَﻦْ ﻟَﻢْ ﻳَﺒْﻠُﻎْ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﻛَﺘَﺒَﻬَﺎ ﻓِﻲ ﺻَﻚٍّ ﺛُﻢَّ ﻋَﻠَّﻘَﻬَﺎ ﻓِﻲ ﻋُﻨُﻘِﻪِ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, যখন তোমাদের মধ্যে কেউ ঘুমে ভয় পায়, তখন সে যেন পড়ে-  'আউযু বিকালিমা-তিল্লাহিত-তাম্মাতি মিন গাদাবিহি ওয়া ই'ক্বাবিহি ওয়া শাররি ইবাদিহি ওয়া মিন হামাযাতিশ-শায়াতিনি,ওয়া আইয়াহদুরুন'  এই দু'আ পড়লে শয়তান কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযি, তার সাবালক সন্তানাদিকে তা শিক্ষা দিতেন।এবং নাবালক সন্তাদির গলায় উক্ত দু'আ তাবিজ আকারে লিখে ঝুলিয়ে দিতেন।(মিশকাতুল মাসাবিহ-২৪৭৭)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
(১) কিছু না বলে তাবিজ নেয়ার জন্য ইমানে কোনো সমস্যা হবে না।
(২) পানি, তেল এবং তিলওয়াত করাই উত্তম।
(৩)তাবিজ নষ্ট করে শুধু মাদুলি রাখলে গুনাহ হবে না।  তাবিজ সাথে নিয়ে আমল,ইবাদত করলে তাও গ্রহণযোগ্য হবে।
(৪) কুরআন মাজিদে/ওজিফার শুরুতে সুরার নকশা দেওয়া থাকে। আল্লাহর হুকুম ব্যতিত কিছুই হয়না।সেই আকিদা বিশ্বাস রেখে এগুলো ব্যবহার করা যাবে।
(৫) নজর,হিংসা, জাদু, পেটের মধ্যে জাদু, এসবের জন্য বেশী বেশী কুরআন তিলাওয়াত করুন।

তাবিজ ব্যবহারের চেয়ে কুরআন তিলাওয়াত করাই বেশী কার্যকরী। সবকিছু খুলে ফেলে দিয়ে নিয়মিত কুরআন তিলাওয়াত করুন। আল্লাহ অবশ্যই শেফা দিবেন।আমীন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...