উনি যা বলছে তা কী সঠিক?

Question

আসসালামু আ'লাইকুম

উস্তাদ আমার স্বামীর বড় ভাই মাদক সংক্রান্ত কারণে জেলে ছিলেন। আমার ননদের অসুস্থতার কারণে আমার শাশুড়ি তার বাসায়। তো এমন অবস্থায় আমার স্বামী গ্রামে যেতে চান। উনি বলেন ফিরেসআসার দিন তার ভাবীর সাথে দেখা করে আসবে। আমি বলি আম্মা বাড়ি নেই তুমি থাকবা কোথায় আর খাবে কী? আবার উনি তো নন-মাহারাম। তো আমার স্বামী রাগান্বিত হয়ে বলেন তার মানে তুমি কী বলতে চাচ্ছো আমি ভাবীর সাথে দেখা করবোনা? তো আমি বললাম কথা শেষ করতে দাও। আসলে আমি বলছিলাম যাওয়ার সময় আমরা সবাই মিলে দেখা করে যাই। তাহলে সবার সাথেই দেখা হলো।
তো এরপর আমরা গেলাম দেখা করতে কথার মাঝে হুট করেই  ভাবী আমার স্বামীর গালে হাত বুলিয়ে নিয়ে নিজের হাতে চুমু খায়। তো স্ত্রী হিসেবে আমার গাইরতে লাগাটা স্বাভাবিক। এ নিয়ে পরবর্তিতে আমার স্বামীকে বললে তিনি বলেন আর কখনো এমন করলে নিষেধ করে দিবো।

এর আগেও ভাবী আমার স্বামীর সম্পর্কে নানা ধরণের মন্তব্য করেছেন যেমন, তোর স্বামীর ঠোঁট খুব লাল। শরীর একেবারে সাদা। তুই তো নিশ্চিন্তে থাকিস তোর স্বামী হুজুর, কোনো মেয়ের দিকে তাকাবেও না ইত্যাদি। এইসব কথা আমার গাইরতে লাগে খুবই। তাদের বাড়ি আমার স্বামীর বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে তো তিনি যখন এখানে আসেন আমার স্বামী, শাশুড়ি, ভাবী ও তার স্বামী সহ গল্প করে। কখনো কখনো তার স্বামী অনুপস্থিত থাকে।

আজকে কথায় কথায়  আমি বলি তুমি তো ভাবীর সাথে ফোনে কথা বলো। হাদিসে আছে নির্জনে নারী পুরুষ কথা বলা নাজায়েজ। ভাবীর সাথে এভাবে কথা বলা কী উচিত? তুমি তো আমার মাধ্যমে তার খোঁজ খবর নিতে পারো। কী কী জানতে হবে বলে দিবা। সে বলে তুমি কী বলতে চাচ্ছো আমি আত্মীয়তার সম্পর্ক নষ্ট করে ফেলি। তোমার হাদীস নিয়ে তুমি থাকো। তুমি তোমার হাদীস অনুযায়ী আমল করো আর আমাকে আমার হাদীস অনুযায়ী আমল করতে দাও। আমাকে এতো হাদীস জানাতে  এসো না। সব হাদীস যে জানতেই হবে তার কী দরকার আছে!
আমার প্রশ্ন হলো:
১.আত্মীয়তার সম্পর্ক কিংবা সামাজিকতার নামে  আমার স্বামী যা করছে তা কী জায়েজ? নাকি আমিই ভুল!

২. হাদীস সম্পর্কে এমন মন্তব্য করার কারণে তার ইমানের কোন ক্ষতি হয়েছে কী?

৩. আসলেই কী সব হাদীস জানার দরকার নেই? বিশেষ করে ফরজ সংক্রান্ত হাদীস।

Answer 1

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

আলহামদুলিল্লাহ!

হযরত উকবাহ ইবনে আমের রাযি থেকে বর্ণিত,

عن عقبة بن عامر: أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «إياكم والدخول على النساء» فقال رجل من الأنصار: يا رسول الله، أفرأيت الحمو؟ قال: «الحمو الموت»

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,তোমরা গায়রে মহিলাদের ঘরে প্রবেশ থেকে বেঁচে থাকো।একজন আনসারি সাহাবী জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ সাঃ! দেবরের সম্পর্কে আপনি কি মনে করেন/কি হুকুম?

রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,দেবর হল,মৃত্যু।(সহীহ বোখারী-৫২৩২) এখানে দেবর বলা হলেও নিকটাত্মীয় গায়রে মাহরাম সকল প্রকার আত্মীয় উদ্দেশ্য।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

(১) আত্মীয়তার সম্পর্ক কিংবা সামাজিকতার নামে  আপনার স্বামী যা করছে, তা কখনো জায়েয হবে না। এটা সম্পূর্ণ ভুল।

(২) হাদীস সম্পর্কে এমন মন্তব্য করার কারণে, তাকে অবশ্যই তাওবাহ করতে হবে। যদি সে হাদীসকে অস্বীকার বা অগ্রাহ্য করার নিয়তে এমনটা করে থাকে, তাহলে তার ঈমান বাকী থাকবে না। তাকে ঈমান নবায়ন করতে হবে।

(৩) সব হাদীসকেই জানতে হবে এবং মানতেও হবে।