আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
32 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

Kfc, bfc এর চিকেন, চিকেন বার্গার এই গুলো খাওয়া যাবে কিনা?? এই গুলো হারাম না হালাল বুঝার উপায় কি? আর খেয়ে ফেললে করণীয় কি যদি একটু বলতেন উস্তাদ। আমার স্বামী প্রায় এই bfc, kfc এর বার্গার এনে থাকেন। তখন খাওয়া হয়, কিন্তূ মনে সন্দেহ থাকে যে কি খাচ্ছি। জায়েজ আছে নাকি এই গুলো খাওয়া?

1 Answer

0 votes
by (583,020 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://www.ifatwa.info/686 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,
মুসলমান মালিকাধীন হোটেলের গোশত ভক্ষণ করা যাবে। কেননা মুসলমান যবেহের সময় বিসমিল্লাহ্ বলবে, এটাই স্বাভাবিক। এবং এমন ধারণা পোষণ করাই সকলের উচিৎ। তাছাড়া মুসলমান যদি যবেহের সময় অনিচ্ছাকৃত ভাবে বিসমিল্লাহকে ভূলেও যায়,তদুপরি মুসলমানের অন্তরে আল্লাহর নাম থাকার দরুণ ঐ যবেহকৃত জন্তুকে ভক্ষণ করা জায়েয রয়েছে।

হাদিস শরিফে এসেছে, আয়েশা রাযি. বলেন, একদল লোক নবী রাসুলুল্লাহ ﷺ -কে জিজ্ঞেসা করল, ‘এক নও মুসলিম সম্প্রদায় আমাদের নিকট গোশত নিয়ে আসে। আমরা জানি না যে, তার জবেহকালে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয়েছে কি না।’ তিনি বললেন, ﺳَﻤُّﻮﺍ ﻋَﻠَﻴﻪِ ﺃَﻧﺘُﻢ ﻭَﻛُﻠُﻮﻩُ ‘তোমরা আল্লাহর নাম নিয়ে তা ভক্ষণ কর।’ (বুখারি ২০৫৭, ৫৫০৭ )


উক্ত হাদিসের ব্যাখ্যায় হাফেজ ইবন হাজার আসকালানী রহ. বলেন,
ﻭﻳﺴﺘﻔﺎﺩ ﻣﻨﻪ ﺃﻥ ﻛﻞ ﻣﺎ ﻳﻮﺟﺪ ﻓﻲ ﺃﺳﻮﺍﻕ ﺍﻟﻤﺴﻠﻤﻴﻦ ﻣﺤﻤﻮﻝ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺼﺤﺔ ، ﻭﻛﺬﺍ ﻣﺎ ﺫﺑﺤﻪ ﺃﻋﺮﺍﺏ ﺍﻟﻤﺴﻠﻤﻴﻦ … ﻷﻥ ﺍﻟﻤﺴﻠﻢ ﻻ ﻳﻈﻦ ﺑﻪ ﻓﻲ ﻛﻞ ﺷﻲﺀ ﺇﻻ ﺍﻟﺨﻴﺮ ، ﺣﺘﻰ ﻳﺘﺒﻴﻦ ﺧﻼﻑ ﺫﻟﻚ
‘এই হাদিস থেকে বুঝা যায়, মুসলমানদের বাজারে যে গোশত পাওয়া যায় তা হালাল হিসেবে গণ্য হবে। কেননা, মুসলমানের সব বিষয়ে ততক্ষণ পর্যন্ত ভালো ধারণা রাখতে হয় যতক্ষণ পর্যন্ত এর বিপরীত স্পষ্ট প্রমাণ না পাওয়া যায়।’(ফাতহুল বারী ৯/৭৮৬)

সুতরাং মুসলিম দেশের হোটেল-রেস্তোরাঁ গুলোতে  গোশত খাওয়া জায়েয রয়েছে।এক্ষেত্রে সন্দেহ প্রবণতা পরিহার করা উচিত।মুসলমানকে এবং মুসলিম সমাজের মানুষকে বিশ্বাস করাই স্বাভাবিকতা। অবশ্য কোনো অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেলে নিশ্চয়ই এসব থেকে দূরে থাকতে হবে।অন্যদিকে অমুসলিম রেস্তোরাঁ থেকে গোস্ত ভক্ষণ করতে হলে মালিককে জিজ্ঞাসা করতে হবে।সে যদি বলে ইসলামি ত্বরিকায় হালালভাবে যবেহ করা হয় নাই,তাহলে এমতাবস্থায় উক্ত গোশতকে ভক্ষণ করা যাবে না। কিন্তু যদি সে বলে যে এটাকে হালাল ত্বরিকায় যবেহ করা হয়েছে,তাহলে এমতাবস্থায় করণীয় কি?
সে সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে
যদি কোনো মুশরিক দাবী করে যে তার কাছে  হালাল যবেহ করা গোস্ত রয়েছে। তাহলে সেটা খাওয়া জায়েয রয়েছে।(কিতাবুল ফাতাওয়া ৪/১৯৯)আরো বর্ণিত রয়েছে,(আবকে মাসাঈল -৭/২৯২,জা'মেউল ফাতাওয়া-৩/১৩৭) 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

★যদি মুসলিম মালিকানাধীন কোনো রেস্টুরেন্ট হয়,তাহলে সেই হোটেলের গোশত খাওয়া জায়েজ আছে।

★যদি অমুসলিম মালিকানাধীন কোনো রেস্টুরেন্ট হয়, এবং যদি তাতে মুসলিম দ্বারা বিসমিল্লাহ বলে জবাই করা হয় বলে জানা যায়, তাহলে উক্ত হোটেলে খাওয়া যাবে।নতুবা খাওয়া যাবে না।
এজন্য খাওয়ার পূর্বে জবাইয়ের পদ্ধতি নিয়ে অবশ্যই আলোচনা করতে হবে।

★মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় যাচাইবাচাই না করেই হোটেলে গোশত খাওয়া যাবে।

মুসলমান মালিকানাধীন রেস্টুরেন্টের বার্গার,চিকেন ফ্রাই এগুলো হালাল।সুতরাং মুসলমান হিসেবে আমাদেরকে প্রথমেই মালিক সম্পর্কে সুষ্পষ্ট ধারণা নিতে হবে।কোনো রেষ্টুরেন্ট খাওয়ার পূর্বে তার মালিক সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে।মালিকের ধর্ম সম্পর্কে যাচাই বাচাই করা ওয়াজিব।যদি মালিকের ধর্ম সম্পর্কে কিছুই জানা না যায়,তাহলে সেই হোটেলকে পরিত্যাগ করতে হবে।

রেস্টুরেন্টের মাংসের বিভিন্ন আইটেম সম্পর্কে মালিক পক্ষ কে জিজ্ঞাসা করে সুষ্পষ্ট ধারণা নিতে হবে যে,তারা প্রাণীর কোন অঙ্গ এই আইটেমে ব্যবহার করেছে।যদি হালাল অঙ্গ দ্বারা তৈরী করা হয়ে থাকে,তাহলে হালালই হবে।যদি এ সম্পর্কে সুষ্পষ্ট ধারণা না পাওয়া যায়,তাহলে এমন খাদ্যকে পরিত্যাগ করতে হবে।

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
Kfc, bfc এর চিকেন, চিকেন বার্গার খাওয়ার ক্ষেত্রে দেখতে হবে যে এগুলো আমাদের বাংলাদেশেই তৈরিকৃত? নাকি বিদেশ থেকে নিয়ে আসা হয়?

যদি আমাদের বাংলাদেশেই তৈরিকৃত হয়, সেক্ষেত্রে উক্ত রেস্টুরেন্টের মালিক মুসলমান হয়ে থাকলে সেখানে হচ্ছে চিকেন, চিকেন বার্গার ইত্যাদি খাওয়া যাবে।
কোনো সমস্যা নেই।

আর যদি রেস্টুরেন্টের মালিক অমুসলিম হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে সতর্কতামূলক জেনে নিতে হবে যে কোন মুসলিম দ্বারা সে মুরগিগুলো বিসমিল্লাহ বলে জবাই করা হয়েছে কিনা?

যদি তারা বলে হ্যাঁ এভাবেই জবাই করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে সেখান হতে চিকেন, চিকেন বার্গার ইত্যাদি খাওয়া যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 47 views
...