১। আমার স্ত্রী তালাকসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে চিন্তিত ছিল। তাই আমি একজন হুজুরের সঙ্গে কথা বলি।
হুজুরের সঙ্গে কথা বলার পরে তাকে বোঝানোর জন্য বলি,
"যদি আমি তোমাকে তালাক দিই, সেক্ষেত্রে গ্রহণের প্রয়োজন হবে না। আমি তোমাকে তালাক দিলাম সেক্ষেত্রে তুমি হ্যাঁ বা না বলো, তাতে কিছু যায় আসে না। কিন্তু আমি তালাকবাচক শব্দ বলে তোমাকে সিদ্ধান্ত নিতে বললে, তোমার গ্রহণ বা বর্জনের ব্যাপার আছে।"
এটাই বলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমার স্ত্রী শুধু "যদি আমি তোমাকে তালাক দিই";এই লাইনটা শোনার পরই উত্তেজিত হয়ে পাগলের মতো আচরণ শুরু করে। আমার স্ত্রীর দাবি করতেসে যে আমি বলেছি, " এরকম করতেসো কেনো।আমি বলসি নাকি যে আমি তোমাকে তালাক দিয়ে দিসি।
কিন্তু সম্পূর্ণ কথোপকথন আমি উদাহরণ স্বরুপ বলসি।আমার স্ত্রীকে তালাক দেয়ার কোনো ইচ্ছা/ নিয়ত আমার ছিলোনা।
এজন্য কি কোনো সমস্যা হবে?
২। আমি বলেছি,
"তুমি কি সংসার করবে না? না করলে বলো, তোমাদের সবাইকে রেহাই দিয়ে দিই।"
এক্ষেত্রে আমি "রেহাই দেওয়া" দিয়ে তালাক বা এমন কিছু বুঝাইনি।
৩। আমি বলেছি,
"তুমি সংসার করবে না, এটাই তো? তুমি ডিভোর্স চাইছো, এটাই তো?"
এ কথা বললে কি তালাক হয়ে যায়?
৪। বিয়ের শুরুর দিকে বলেছিলাম,
"আজ থেকে আমরা সেপারেশনে থাকবো।
৬ মাস পর তালাকের ব্যাপারে যা করার করবো।"
এসব তালাকের নিয়তে বলিনি।
৫। আমার স্ত্রী রাগ করে বাপের বাড়ি যেতে চাইলে প্রথমে বাধা দিয়েছি। পরে বলেছি,
"তুমি যেটাই চাইছো, সেটাই হবে।"
৬। আমার স্ত্রী তালাক গ্রহণের নিয়ত ছাড়া বলেছে,
"আমি তোমার সঙ্গে থাকবো না, বাপের বাড়ি চলে যাবো।"
৭। তালাকের অধিকারপ্রাপ্ত স্ত্রী তালাক গ্রহণের জন্য কি স্পষ্টভাবে "তালাক গ্রহণ করছি" বলতে হবে? নাকি ইংগিতপূর্ণ কথা, যেমন "তালাক হয়ে যাক" এই নিয়তে যদি বলে;"সংসার করবো না", "থাকবো না";তাহলে কি তাও তালাক হবে?
৮। পারিবারিক ঝামেলার দরুন আমি আমার স্ত্রীকে বলেছি,
"তুমি একবার বাপের বাড়ি গেলে, ওরা তোমাকে আসতে দেবে না। তালাক করিয়ে নেবে।"
স্ত্রী বলেছে,
"আমি না নিলে হবে না।"
আমি তাও বলেছি,
"ওরা জোর করে করিয়ে নেবে।"
তখন স্ত্রী বলেছে,
"আল্লাহ যদি এটাই কপালে রাখেন বা চান, তাহলে এটাই হবে।"
এটার জন্য কি কোনো সমস্যা হবে?
৯। আমি স্ত্রীকে বলেছি,
"এই কাজটা যদি আমি আবার করি, তাহলে তুমি আলাদা হয়ে যেও। যেভাবে চাও, সেভাবে আলাদা হয়ে যেও।"
এটা কি আজীবনের জন্য তালাকের অধিকার দেওয়া হয়ে যাবে?
১০। আমার স্ত্রী মানসিক রোগী। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তায় হুঁশ হারিয়ে বলেছে,
"আল্লাহ অবিচারক। আল্লাহ আমাদের ক্ষতি করতে চান।"
এছাড়া আল্লাহর তালাকের নিয়মকে কঠিন এবং অন্যায় বলে গালমন্দ করেছে।
এতে কি আমার স্ত্রী ঈমানহারা হয়ে গেছে?
আমার স্ত্রী কালিমা পড়ে নিয়েছে এবং তওবা করেছে।
আমার কি বিবাহ নবায়ন করতে হবে?
প্রসঙ্গত: আমি কোনো কথার দ্বারাই তালাক ভেবে কিছু বলিনি। আমার বা আমার স্ত্রীর কারোই তালাক গ্রহণের নিয়ত ছিল না। শুধুমাত্র এসব কথার দ্বারা নিয়ত ছাড়া কি তালাক হয়?