আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
51 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।
আমি আমার এক কাছের বান্ধবীর বিষয়টা হুবহু পেশ করছি। উত্তর দিলে মুনাসিব হতো।
ঘটনার বিবরণ-

স্বামী স্ত্রী এর মাঝে ভীষণ ঝগড়া চলছিলো। একপর্যায়ে স্বামী বলতে শুরু করেছে যে তোমাকে আমি আজ দিয়ে দিব দেইখো, আজ রাতের ভিতরই দিয়ে দিব, দিয়ে দিলাম, আজকের ভেতরই দিব। এরকম অনেকবার বলেছে।
ঝগড়া শেষে ব্যক্তিকে এব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন "দিয়ে দিলাম" শব্দটা সে বলে নি৷ কিন্তু তার স্ত্রী এটা স্পষ্ট শুনেছে যে দিয়ে দিব বলতে বলতে একপর্যায়ে দিয়ে দিলাম শব্দটা সে বলেছে।
হাজবেন্ড এর কথা হবহু লিখে দিচ্ছি যা সে এই ঘটনার পরে বলেছে।

❝tui jodi ar ekbar anr sathe torko korish tore ami talak dibo ajkei ,tui ei kotha ar ekbar bollei tore ami ekbar talak diye dilam, tui dekh ami ajkei toke talak diye dibo. ❞

আর এটা দ্বিতীয় ঘটনা-

❝Ar 5 din kono text dibi na, text, call, vedio call kicchu dibi na. samneo ashbina. kotha bolle tui talak, ❞

এই কথাটা কিছুদিন আগে বলেছে। মানে মোট ঘটনা দুটো, এবং এই কথাটা বলার পরও তারা দুজন কথা বলেছে। বস্তুত স্বামীই প্রথম কল দিয়ে কথা বলেছে। এরপর টেক্সট, কল সবকিছুই হয়েছে তাদের।  কি তালাক হয়েছিলো?

উস্তাদ খুবই পেরেশান আছে আমার বান্ধবী। ঘটনাগুলো হবহু তুলে ধরেছি। মাসয়ালা জানাটা খুব জরুরি.

1 Answer

0 votes
by (581,370 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

তালাক এটি খুবই মারাত্মক একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

তালাককে শর্তের সাথে সংযুক্ত করলে শর্ত পাওয়া গেলেই বক্তব্য অনুপাতে তালাক পতিত হয়ে যাবে।

ألفاظ الشرط إن … ومتی ومتی ما ففي ہٰذہٖ الألفاظ إذا وجد الشرط انحلت الیمین وانتہت؛ لأنہا لا تقتضي العموم والتکرار، فبوجود الفعل مرۃ تم الشرط وانحلت الیمین فلا یتحقق الحنث بعدہ۔ (الفتاویٰ الہندیۃ ۱؍۴۱۵) 
সারমর্মঃ
শর্তের কিছু বাক্য আছে,যখন শর্ত পাওয়া যাবে,কসম ভেঙ্গে যাবে এবং শেষ হয়ে যাবে।
সেই শর্ত অনুপাতে হুকুম ফিরে আসবেনা।
কেননা এটি বারংবার কে চায়না।  

وشرط الحنث في قولہ إن خرجت مثلاً فأنت طالق أو إن ضربت عبدک فعبدي حر لمرید الخروج والضرب فعلیہ فورًا؛ لأن قصدہ المنع عن ذٰلک الفعل عرفًا ومدار الأیمان علیہ، وہٰذہ تسمی یمین الفور۔ (درمختار، الأیمان / باب الیمین في الدخول والخروج والسکنیٰ، مطلب في یمین الفور ۵؍۵۵۳-۵۵۴ زکریا، ۳؍۷۶۱-۷۶۲ دار الفکر بیروت، وکذا في البحر الرائق / باب الیمین في الدخول ۴؍۳۱۵ کوئٹہ)
সারমর্মঃ
কেহ যদি বলে তুমি যদি বের হও,,তাহলে তুমি তালাক, অথবা তুমি যদি তোমার গোলামকে প্রহার করো,তাহলে আমার গোলাম আযাদ,তাহলে এটির বিধান তাৎক্ষনিক হবে।
কেননা তার উদ্দেশ্য ছিলো ঐ কাজ থেকে সেই সময়েই বিরত রাখা,( সারাজীবন এর জন্য নয়)।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রথম ঘটনায় স্বামী বলেছে তুই এই কথা আর একবার বললেই তোরে আমি একবার তালাক দিয়ে দিলাম।

দ্বিতীয় ঘটনায় স্বামী বলেছে আর পাঁচ দিন আর পাঁচ দিন কোন টেক্সট দিবি না, কল, ভিডিও কল কিছুই দিবি না, সামনেও আসবি না,কথা বললেই তুই তালাক।

★সুতরাং উক্ত দুটি বাক্যই শর্ত যুক্ত তালাকের বাক্য।

প্রথম ঘটনায় স্বামী বলেছিলোঃ 
তুই এই কথা আর একবার বললেই তোরে আমি একবার তালাক দিয়ে দিলাম।

এখানে "এই কথা" দ্বারা মূলত কোন কথা উদ্দেশ্য নিয়েছিল?

স্বামী "এ কথা" দ্বারা যে কথা উদ্দেশ্য নিয়ে ছিল সে কথা যদি স্ত্রী বলে থাকে, তাহলে উক্ত বোনের উপর এক তালাকে রজয়ী পতিত হবে।

আর দ্বিতীয় ঘটনা অনুপাতে স্ত্রী যদি পাঁচ দিনের মধ্যে স্বামীর সাথে কথা বলে থাকে, সেক্ষেত্রে উক্ত বোনের উপর দ্বিতীয় তালাক দিতে হবে। মোট দুই তালাকে রজয়ী পতিত হবে।

এরপর উক্ত স্বামীর কাছে শরীয়তের বিধান মেনে ফিরিয়ে যাওয়ার পর উক্ত শর্ত আবার পাওয়া গেলেও আর তালাক পতিত হবেনা।
এরপর সেই বোন নির্ভয়ে স্বামীকে ফোন মেসেজ দিতে পারবেন,কথা বলতে পারবেন। 
ভয়ের কোনো কারন নেই।

১/২ তালাকে রজয়ী পতিত হওয়ার পর স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়ার পদ্ধতি জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...