বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।
জবাবঃ
পেশাব-পায়খানার পর; পবিত্রতা অর্জন করার তিনটি পদ্ধতি বর্ণিত হয়েছে।
■ প্রথম পদ্ধতি: শুধু ঢিলা/টিস্যু ব্যবহার করা: এক্ষেত্রে তিনটি
টিলা/টিস্যু ব্যবহার করা সুন্নাহ। এ বিষয়ে বহু হাদীস বর্ণিত হয়েছে।
قَدْ عَلّمَكُمْ
نَبِيكُمْ كُلّ شَيْءٍ حَتى الْخِرَاءَةَ قَالَ: فَقَالَ: أَجَلْ لَقَدْ
نَهَانَا أَنْ نَسْتَنْجِيَ بِأَقَلّ مِنْ
ثَلَاثَةِ أَحْجَارٍ
সালমান ফারসী রা.-কে বলা হল, তোমাদের নবী তোমাদের
সবকিছু শিক্ষা দিয়েছেন; এমনকি শৌচাগার ব্যবহারের পদ্ধতিও! আব্দুর রহমান বিন ইয়াযীদ রাহ.
বলেন, সালমান রা. বললেন, ‘হাঁ, অবশ্যই! তিনি আমাদেরকে নিষেধ করেছেন, আমরা যেন ডান
হাত দ্বারা ইস্তিঞ্জা না করি এবং ইস্তিঞ্জার সময় তিন পাথরের কম ব্যবহার না করি ।’ সহীহ
মুসলিম, হাদীস ২৬২
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উক্ত আমল ও বাণী
মুতাবেক অনেক সাহাবা ও তাবেয়ীনের আমল ছিল। তাঁরা পানি থাক বা না থাক শুধু ঢিলা দ্বারা
ইস্তিঞ্জা করতেন।
এ অনুযায়ীই উম্মাহর ইমামগণের ফতোয়া। সকল ইমামের মত হল, পানি থাকুক বা
নাই থাকুক সর্বাবস্থাই শুধু ঢিলা দ্বারা তাহারাত হাসিল করা জায়েয। আল ইসতিযকার ১/১৪৩
,
■ দ্বিতীয় পদ্ধতি: শুধু পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা। পেশাব-পায়খানার
পর শুধু পানি দ্বারা ইস্তিঞ্জা করার বিষয়ে
সাহাবা ও তাবেয়ীন-যুগে দু-একজনের ভিন্নমত থাকলেও পরবর্তীতে এ বিষয়ে কোনো ইমামের মতবিরোধ
নেই যে, পেশাব-পায়খানার পর শুধু পানি দ্বারা ইস্তিঞ্জা করা যাবে।
শুধু পানি দিয়ে ইস্তিঞ্জা করার ব্যাপারে আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
كَانَ
رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
يَدْخُلُ الْخَلاَءَ، فَأَحْمِلُ أَنَا وَغُلاَمٌ نَحْوِيْ إِدَاوَةً مِنْ مَاءٍ
وَعَنَـزَةً، فَيَسْتَنْجِيْ بِالْمَاءِ
“রাসূলুল্লাহ
সা. পায়খানায় গেলে আমি এবং আমার সমবয়সী একটি ছেলে এক লোটা পানি ও একটি হাতের লাঠি নিয়ে
রাসুল সা. অপেক্ষায় থাকতাম। অতঃপর তিনি পানি দিয়ে ইস্তিঞ্জা করতেন।” সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫০
,
■ তৃতীয় পদ্ধতি: টিস্যু/ঢিলা ও পানি উভয়টা দ্বারা ইস্তিঞ্জা করা।
ঢিলা ব্যবহার করে পানি দ্বারা ধৌত করা কুরআন-সুন্নাহ ও সালাফে সালেহীনের আমল দ্বারা
প্রমাণিত। কারণ, তাতে অধিক পরিচ্ছন্নতা অর্জিত হয় এবং এই পদ্ধতিটাই সবচেয়ে উত্তম।
তবে টিস্যু/ঢিলা ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি
করা কখনোই ঠিক হবে না। যেমন,
প্রস্রাবের পর টিস্যু/ঢিলা হাতে নিয়ে শৌচাগারের বাইরে চল্লিশ
কদম দেওয়া, লেফট-রাইট করা, বার বার উঠা-বসা করা, কেউ পানির পূর্বে ঢিলা ব্যবহার না করলে তাকে পশুর সাথে তুলনা
ও ঘৃণা করা কিংবা কটু বাক্য বলে তাকে জর্জরিত করা ইত্যাদি ইত্যাদি।
,
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
,
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মূল
বিষয় হলো, নাপাকি দূর হয়েছে কি না? যদি এর দ্বারা নাপাকি খুব ভালো ভাবে দূর হয়ে
যায় তাহলে এভাবে পবিত্রতা অর্জন করা যাবে বা ঠিক আছে। আর যদি ভালো ভাবে নাপাকি দূর
না হয় তাহলে এভাবে পবিত্রতা অর্জন করা যাবে না।