আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
16 views
ago in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (11 points)
১)আমার সিজার হয়েছে ডিসেম্বর ৪ তারিখ রাত ১২:৩০ টার পর। ব্লিডিং প্রথম কয়েকদিন অনেক হয় পরে কম হয়েছে গ্যাপ দিয়ে দিয়ে মানে ২/৩ দিন হত না আবার হুট করে হয়ে যেত। নেফাসের ৩৫ তম দিনে হঠাৎ করে দেখি সাদা স্রাব। তার কিছুদিন আগে চেক করেছিলাম তখনও ভালো হয়নি।  সম্ভবত ৩৫ তম দিনের  ২/৩ দিন আগে ভালো হয়েছে। আমি ৩৫ তম দিনে চেক করি সাদা হ্যান্ড টিস্যু দিয়ে। হাতে স্রাব একদম সাদা লাগে কিন্তু টিস্যু তে একদম হালকা হলুদ বর্নের দেখায়। এটা কি সাদা স্রাব নাকি আমি এখনও সুস্থ হইনি??
২) আমার বিয়ের মোহরানা ধরেছিলাম ৫ হাজার। কিন্তু বিয়েতে আড়াই লক্ষ টাকা লেখা হয় আর সেই সুবাদে মোহরানা হিসেবে কিছু গহনা পাই। আমার শশুর, শাশুড়ী দিয়েছেন। কিন্তু আমার শশুর ব্যাংকের জি এম ছিলেন আর সেই টাকা দিয়েই তার বাড়ি করা। আমার শাশুড়ী বাড়ি ভাড়া নিজের কাছে রাখেন সংসার চালাতে। এখন এই গহনা কি আমার জন্য নেওয়া জায়েজ? ২ জনের টাকাই তো হারাম। এখন আমি কি গহনা ফেরত দিব?
বিঃদ্রঃ গহনা  পাওয়ার পর আমার উপর কুরবানী ওয়াজিব হয়।

1 Answer

0 votes
ago by (580,140 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
عَنْ أَنَسٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «وَقَّتَ لِلنُّفَسَاءِ أَرْبَعِينَ يَوْمًا، إِلَّا أَنْ تَرَى الطُّهْرَ قَبْلَ ذَلِكَ

হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নেফাসওয়ালী মহিলাদের মেয়াদ সাব্যস্ত করেছেন চল্লিশ দিন। তবে যদি এর আগে পবিত্র হয়ে যায়, তাহলে ভিন্ন কথা। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৬৪৯, আলমুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৮৩১১, সুনানে দারাকুতনী, হাদীস নং-৮৫২, সুনানে কুবরালিলবায়হাকী, হাদীস নং-১৬১৯]


فى تنوير الابصار: والنفاس لغة : دمن ويخرج عقب ولد، لا حد لاقله، واكثره أربعين يوما (رد المحتار، كتاب الطهارة، باب الحيض-1/496-497)
সারমর্মঃ সন্তান ভুমিষ্ঠের পর যেই রক্ত বের হয়,সেটাকে নেফাস বলা হয়,তার সর্বোচ্চ মেয়াদ হল চল্লিশ দিন। 
,

নেফাস এর সর্বোচ্চ মেয়াদ হল চল্লিশ দিন। যদি চল্লিশ দিনের মধ্যে রক্ত বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে যেদিন বন্ধ হবে, সেদিন গোসল করে নামায পড়া শুরু করে দিতে হবে।
 কিন্তু বন্ধ না হয়, তাহলে এর সর্বোচ্চ মেয়াদ হল চল্লিশ দিন। যদি চল্লিশ দিনেও বন্ধ না হয়, তাহলে চল্লিশ দিন পর বন্ধ না হলেও নামায পড়তে হবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে এক্ষেত্রে যেহেতু টিস্যু তে একদম হালকা হলুদ বর্নের দেখায়,সুতরাং এটিও নেফাস।

আপনি পূর্ণ সাদা দেখার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

এমনটি আসতেই থাকলে সেক্ষেত্রে ৪০ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।  তারপর ফরজ গোসল করে নামাজ আদায় করবেন।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
উম্মে আলক্বামাহ তথা মার্জনা (مَوْلاَةِ عَائِشَةَ) হইতে বর্ণিত,

عن أم علقمة أَنَّهَا قَالَتْ : " كَانَ النِّسَاءُ يَبْعَثْنَ إِلَى عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ بِالدُّرْجَةِ فِيهَا الْكُرْسُفُ فِيهِ الصُّفْرَةُ مِنْ دَمِ الْحَيْضَةِ يَسْأَلْنَهَا عَنْ الصَّلَاةِ فَتَقُولُ لَهُنَّ لَا تَعْجَلْنَ حَتَّى تَرَيْنَ الْقَصَّةَ الْبَيْضَاءَ تُرِيدُ بِذَلِكَ الطُّهْرَ مِنْ الْحَيْضَةِ "

তিনি বলেনঃ (ঋতুমতী) স্ত্রীলোকেরা আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট ঝোলা বা ডিবা (دُرْجَة) পাঠাইতেন, যাহাতে নেকড়া বা তুলা (كُرْسُفْ) থাকিত। উহাতে পাণ্ডুবৰ্ণ ঋতুর রক্ত লাগিয়া থাকিত। তাহারা এই অবস্থায় নামায পড়া সম্পর্কে তাহার নিকট জানিতে চাহিতেন। তিনি [আয়েশা (রাঃ)] তাহাদিগকে বলিতেনঃ তাড়াহুড়া করিও না, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ সাদা (বর্ণ) দেখিতে না পাও। তিনি ইহা দ্বারা ঋতু হইতে পবিত্রতা (طُهْر) বুঝাইতেন।(মুয়াত্তা মালিক-১২৭)
,
أن النساء کن یبعثن بالکرسف إلی عائشۃ رضی اللہ تعالیٰ عنھا فکانت تقول : لا حتی ترین القصۃ البیضاء‘‘ ( المؤطأ للإمام مالک : ۱/۵۹۱ ،  : مصنف ابن عبد الرزاق، حدیث نمبر : ۱۱۵۹ )
সারমর্মঃ আয়েশা সিদ্দিকা রাঃ সেই সমস্ত মহিলাদের বলিতেনঃ তাড়াহুড়া করিও না, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ সাদা দেখিতে না পাও। 

(০২)
আপনার বিয়েতে যেহেতু আড়াই লক্ষ টাকা মোহরানা হিসাবে লেখা আছে,সুতরাং সে আড়াই লক্ষ টাকায় মোহরানা হিসেবে নির্দিষ্ট হবে হ্যাঁ যদি আপনি নিজের সন্তুষ্টি চিত্তে তা কমিয়ে দেন বা মাফ করে দেন, সেক্ষেত্রে সেটি আপনার ব্যাপার।

আপনি কমিয়ে দিলে সেটা কম হিসেবেই সাব্যস্ত হবে।

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার শ্বশুর শাশুড়ি যে গহনা আপনাকে দিয়েছেন,
এটা কি আপনার স্বামী আপনাকে মোহরানা আদায় বাবদ দিয়েছিলেন কিনা?

যদি আপনার স্বামী আপনাকে উক্ত গহনা মোহরানা আদায় বাবদ দিয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে সেই গহনা নেওয়া আপনার জন্য জায়েজ আছে।

এক্ষেত্রে ধরা হবে যে আপনার শ্বশুর শাশুড়ি সেই গহনার মালিক আপনার স্বামীকে বানিয়ে দিয়েছেন,আর আপনার স্বামী নিজ মালিকানা হতে সেই গহনা আপনাকে মোহরানা বাবদ দিয়ে দিয়েছেন।

আর যদি উক্ত গহনা মহরানা আদায় বাবদ তিনি না দিয়ে থাকেন, এমনিতেই গহনা হিসেবে দিয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে তাহা নেওয়া আপনার জন্য বৈধ নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...