আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
22 views
ago in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।
আমার সামনে বিবাহ ইন শা আল্লাহ।
ছাত্রজীবন শেষ করেছি মাত্র। মাস্টার্স করছি। টুকটাক পার্টটাইম কাজ করি। সব মিলে মাসে ৭ হাজার টাকা হাতে আসে আলহামদুলিল্লাহ।
আমি বিশ্বাস করি বিয়ের মোহরানা আদায় করা একটা ওয়াজিব বিষয়। এবং এটা একজন নারীর হক এবং তার অধিকার এবং সর্বোপরি আল্লাহর বিধান। তাই আমি বিয়েতে সম্পূর্ণ মোহর পরিশোধ করতে চাই। এতে করে আমাকে যতটুকু সাহায্য করা যায় আমার পরিবার তা করতে রাজি। তবে পরিবারেরও খুব বেশি সামর্থ্য নেই।
কিন্তু আমার পরিবারের এবং আমার সামর্থ্যের তুলনায় বেশি মোহরানা ধার্য করতে চান মেয়ের পরিবার। তারা চান সব না দিলেও আমি তো পরে তা আদায় করবোই। এবং মেয়ে চায় আমি যেন তাকে হজ্জ্ব করাই। এটাই তার মোহর বা এর সমপরিমাণ অর্থ। আমি নিজেও বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করতে চাই। কোন মুসলিম তা না চায়? আমিও রবের কাছে খুব করে চাই যেন তিনি আমার জন্য হজ্জ নসিব করেন।
মেয়ের পরিবারের মোহরানা ধার্যের ব্যপারে একটা উদাহরণ দেই। >>

আমার সামর্থ্য আছে বর্তমানে সবমিলে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেয়ার। এবং তা নগদ। কিন্তু মেয়ের পরিবার মনে করেন আমি ভবিষ্যতে ১০ লাখ টাকা দেয়ার সামর্থ্য অর্জন করবো। এবং তা কবে পারবো, তার কোনো সীমা সেই, সেই ভবিষ্যতের কথা ভেবে তারা এখন আমার কাছে এতো টাকা মোহর ধার্য করতে চান।
আমার ২ টি প্রশ্ন:
১. আমার সামর্থ্য অনুযায়ী আমি নগদ যত টাকা মোহরানা আদায় করতে পারবো। ভবিষ্যতের কথা বলে তাদের, তার চেয়ে অধিক পরিমাণে বেশি মোহর ধার্য করার বিষয়ে আমার দ্বীন কি বলে? আমি জানি মোহর নারীর হক।
২. ওই একই বিষয়। মোহর হিসেবে হজ্জ করতে চায়। এর বিষয়ে দ্বীন কি বলে। যখন আমি মোহর নগদ পরিশোধ করতে চাই।

1 Answer

0 votes
ago by (580,230 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

স্ত্রীর অনুমতি সাপেক্ষে মোহর কিছু দেওয়া এবং কিছু অংশ বাকি রাখা শরীয়ত সম্মত। 
,
পবিত্র কুরআন শরীফে এসেছে  
আল্লাহ তায়ালা বলেন 
وَآتُوا النِّسَاءَ صَدُقَاتِهِنَّ نِحْلَةً ۚ فَإِن طِبْنَ لَكُمْ عَن شَيْءٍ مِّنْهُ نَفْسًا فَكُلُوهُ هَنِيئًا مَّرِيئًا [٤:٤] 
আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশীমনে। তারা যদি খুশী হয়ে তা থেকে অংশ ছেড়ে দেয়, তবে তা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর। [সূরা নিসা-৪] 


فَمَا اسْتَمْتَعْتُم بِهِ مِنْهُنَّ فَآتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ فَرِيضَةً ۚ وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا تَرَاضَيْتُم بِهِ مِن بَعْدِ الْفَرِيضَةِ ۚ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا [٤:٢٤] 
অনন্তর তাদের মধ্যে যাকে তোমরা গ্রহণ করবে,তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর। তোমাদের কোন গোনাহ হবে না যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পরে সম্মত হও। নিশ্চয় আল্লাহ সুবিজ্ঞ, রহস্যবিদ। [সূরা নিসা-২৪] 
,
★আলোচ্য আয়াত দ্বারা একথা স্পষ্ট হয় যে যদি মোহরানা নির্ধারন হওয়ার পর স্ত্রী যদি (মোহরানা মাফ করে দেওয়া বা কম করে দেওয়া বা বাকি রেখে অন্য সময়ে দেওয়া) কোনো বিষয়ের উপর স্বামীর সাথে একমত হয়, তাহলে কোনো সমস্যা নেই।   
সুতরাং স্ত্রীর সম্মতিতে মোহরানা বাকি রাখা জায়েজ আছে।     

لَا خِلَافَ لِأَحَدٍ أَنَّ تَأْجِيلَ الْمَهْرِ إلَى غَايَةٍ مَعْلُومَةٍ نَحْوَ شَهْرٍ أَوْ سَنَةٍ صَحِيحٌ وَإِنْ كَانَ لَا إلَى غَايَةٍ مَعْلُومَةٍ فَقَدْ اخْتَلَفَ الْمَشَايِخُ فِيهِ قَالَ بَعْضُهُمْ يَصِحُّ وَهُوَ الصَّحِيحُ وَهَذَا؛ لِأَنَّ الْغَايَةَ مَعْلُومَةٌ فِي نَفْسِهَا وَهُوَ الطَّلَاقُ أَوْ الْمَوْتُ أَلَا يَرَى أَنَّ تَأْجِيلَ الْبَعْضِ صَحِيحٌ، وَإِنْ لَمْ يَنُصَّا عَلَى غَايَةٍ مَعْلُومَةٍ، كَذَا فِي الْمُحِيطِ.

এ বিষয়ে কারো কোনো মতভেদ নেই যে,নির্দিষ্ট সময়ে পরিশোধযোগ্য সম্পূর্ণ মহরকে বাকী রাখা জায়েয।যেমনঃ- এক মাস বা এক বৎসর।কিন্তু যদি নির্দিষ্ট দিন-তারিখ উল্লেখ না থাকে, তাহলে এ সম্পর্কে উলামায়ে কেরামদের মতবিরোধ রয়েছে,কিছুসংখ্যক উলামায়ে কেরাম জায়েয বলে থাকেন।এটাই বিশুদ্ধ মত।কেননা বাস্তবে একটি দিন-তারিখ অবশ্যই নির্দিষ্ট রয়েছে।আর ইহা হল,তালাক বা মৃত্যু।কেননা দিন-তারিখ উল্লেখ ব্যতীত মহরের কিছু অংশ বাকী রাখা জায়েয[মুহিত]
(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩১৮)

স্ত্রীর অনুমতি সাপেক্ষে মোহরানার কিছু অংশ বাকি রাখা জায়েজ হবে।   
স্ত্রীর অনুমতি থাকলে এটি অনুচিত হবেনা।
তবে উত্তম হলো একেবারে নগদ পরিশোধ করে দেওয়া।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
মোহরানা যা দিবেন,নগদ দিবেন,এটিই সবচেয়ে উত্তম পন্থা।

মোহরানা যেহেতু স্ত্রীর হক, আর প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে পাত্রি যেহেতু হজ্ব করানোকে মোহরানা হিসেবে ধরতে চাচ্ছেন, সুতরাং আপনি যদি এ বিষয়টির উপর রাজি হন সে ক্ষেত্রে হজ্ব করানোকে মোহরানা হিসেবে নির্ধারণ করতে পারেন।

সেটি আপনার ইচ্ছা, আপনি যদি প্রবল আশা রাখেন যে পরবর্তীতে অবশ্যই আপনার স্ত্রীকে হজ্ব করাতে নিয়ে যেতে পারবেন, সেক্ষেত্রে আপনি হজ্ব করানোকে মোহর হিসেবে নির্ধারণ করতে পারেন।

এটা একান্তই আপনার ইচ্ছা।

আপনি যদি হজ্ব করানো কে মোহরানা হিসেবে নির্ধারণ করে পরবর্তীতে আর হজ্ব না করাতে পারেন, সেক্ষেত্রে কিন্তু আল্লাহ তা'আলা আপনাকে পাকড়াও করবেন।

(তাই ভালো হবে আপনি এই মুহূর্তে যতটুকু টাকা দিতে পারতেছেন ততটুকুই মোহরানা হিসেবে নির্ধারণ করুন। এক্ষেত্রে কোনোভাবেই পাত্রী রাজি না হলে সেক্ষেত্রে তাকে বাদ দিয়ে অন্যত্রে পাত্রী দেখতে পারেন।)

(০২)
আপনি যদি রাজি হন, সে ক্ষেত্রে শরীয়ত তো কোন বাধা দেবে না।

এক্ষেত্রে লক্ষনীই বিষয় হলো আপনি স্ত্রীকে হজ্ব করাতে সামর্থ্যবান কিনা?
বা পরবর্তীতে এমন সামর্থ্যবান হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রাখেন কিনা?

আপনি যদি তাকে হজ্ব করাতে সামর্থ্যবান হোন,বা পরবর্তীতে এমন সামর্থ্যবান হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রাখেন সেক্ষেত্রে তো মনে হয়  সমস্যা নেই।

আর যদি সামর্থ্যবান না হোন, সেক্ষেত্রে এ কঠিন একটি শর্ত মোহরানার মধ্যে যুক্ত করে বিবাহ করা আদৌ যুক্তিসঙ্গত নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...