আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
32 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (33 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। আমি ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি(IUT) এর একজন শিক্ষার্থী। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়টি OIC অধিভুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান যার মূল মোটো "Creating global citizens with islamic values"।বিশ্ববিদ্যালয়টি গাজীপুরের বোর্ডবাজারে ৩০ একর জায়গার উপর অবস্থিত। এখানে শুধুমাত্র মুসলিম (ছেলে এবং মেয়ে) শিক্ষার্থীরাই পড়াশোনার সুযোগ পায়।ক্যাম্পাসের ভেতরে মেয়েদের  জন্য একটি আবাসিক হল রয়েছে। আমাদের ক্যম্পাসে মেয়েদের জন্য 'Sunset law' নামক একটি আইন রয়েছে অর্থাৎ মেয়েদের কে মাগরিবের আযানের সাথে সাথে হলের ভেতরে প্রবেশ করতে হয়, আর যে সকল মেয়েরা হলের বাইরে থাকে তাদের কে মাগরিবের আযানের সাথে সাথে ক্যাম্পাস পরিত্যাগ করতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি ক্যাম্পাসে মেয়েদের নিরাপত্তা ও যে কোন ধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঠেকাতে এই আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এই আইন নিয়ে গার্জিয়ান ও অথোরিটির মধ্যে একটা মিটিং হয় এবং সেখানে সম্মিলিতভাবে এই আইন বহাল রাখার সিদ্ধান্ত হয়। এমনকি কিছু গার্জিয়ান তাদের মেয়ের নিরাপত্তার স্বার্থে এই ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি করে, Sunset Law কে তারা এর অন্যতম কারণ মনে করে। বাংলাদেশের অন্যান্য ইউনিভার্সিটিতেও মেয়েদের হলে প্রবেশের এরকম আইন/টাইম লিমিট করা আছে।

কিন্তু এই সানসেট ল এর কারণে মেয়েদের কিছু অসুবিধা ও হয়ে থাকে। বিশেষ করে শীতকালে বিকাল ৫ টায় ক্লাস শেষ হওয়ার পর ৫ টা ১৫ তেই (কারণ মাগরিব তখন ৫:১৫ তে) তাদের কে হলে প্রবেশ করতে হয় ফলে তারা নিজেদের প্রয়োজনীয় কেনাকাটা কিংবা অন্য কোন কাজে ক্যাম্পাসের বাইরে যেতে পারে না। এমতাবস্থায় অনেক শিক্ষার্থী বিশেষ করে মেয়েদের অনেকেই চাচ্ছে এই সানসেট ল বাতিল করা হোক এবং রাত ৭/৮ টা কিংবা ৯ টা পর্যন্ত মেয়েদের কে হলের বাইরে থাকার পারমিশন দেওয়া হোক। তাদের আরো একটি যুক্তি হচ্ছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলে মেয়ে উভয়ে সমপরিমাণ অর্থ প্রদানের মাধ্যমে পড়াশুনার সুযোগ পেয়ে থাকে তাহলে মেয়েরা কেন সন্ধ্যার পর ফিমেইল হল ব্যতিত ক্যম্পাসের বাকি অংশে ঘোরাফেরা করতে পারবে না।
আবার কারো কারো দাবী, সানসেট ল উঠে গেলে সন্ধ্যার পর মেয়েদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে এবং ক্যাম্পাসে ফ্রি মিক্সিং তথা ছেলেমেয়েদের একসঙ্গে গল্প, আড্ডা, ঘুরাঘুরি বেড়ে যাবে এবং অশ্লীলতা, ব্যহায়াপনা কিংবা অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটার সুযোগ তৈরী হবে। স্পেশাল ঘটনায় এটার যথেষ্ট প্রমাণও পাওয়া গেছে। কাজেই সানসেট ল বহাল রেখে ফিমেল হলের অভ্যন্তরে অবস্থিত ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে প্রয়োজনীয় যাবতীয় দ্রব্যাদি মজুদ রাখা এবং প্রয়োজনে আরো একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর নির্মাণ করা যেতে পারে। তাদের আরেকটি যুক্তি হচ্ছে, একটি সমস্যা সমাধান করতে গিয়ে আমরা আরো কয়েক্টি সমস্যার দ্বার উন্মোচন করে দিতে পারি না।

এমতাবস্থায় ইউনিভার্সিটির একজন সাধারণ শিক্ষার্থী ও মুসলিম হিসেবে আমার প্রশ্ন হচ্ছে-
1. যদি সানসেট ল উঠিয়ে টাইম বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর দাবী পেশ করা হয়, আমার সেখানে মৌন সমর্থন কিংবা সক্রিয় অংশগ্রহণ করা জায়েজ হবে কি না?
2. যদি শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কোন আন্দোলন করা হয় এবং সেখানে অনেকগুলো দাবীর পাশাপাশি সানসেট ল উঠিয়ে সময় বৃদ্ধি করে দেওয়ারও দাবী করা হয়, তবে সেই আন্দোলনে আমার সক্রিয় অংশগ্রহণ কিংবা মৌন সমর্থন জায়েজ আছে কি না?
3. যদি আমি আন্দোলনে অংশগ্রহণ করি কিংবা আন্দোলনের প্রতি আমার মৌন সমর্থন থাকে আর এই আন্দোলনের ফলে যদি সানসেট ল উঠে যায় তবে সন্ধ্যার পর রাতের অন্ধকারে ক্যম্পাসে যত ফ্রি মিক্সিং ও গুনাহের কাজ হবে (সানসেট ল বহাল থাকলে যেসব গুনাহ হত না), সেটার দায় আমার উপর বর্তাবে কি না এবং আমার আমলনামায় গুনাহ যুক্ত হতে থাকবে কি না?
4. একজন সাধারণ মুসলিম ও উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে এই দাবীর বিরুদ্ধে কথা বলা আমার কর্তব্য কি না?

1 Answer

0 votes
ago by (603,000 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
জেনারেল শিক্ষা অর্জন সম্পর্কে আমরা ইতি পূর্বে বলেছিলাম যে,
বলা যায় মুসলিম দেশের মুসলিম সরকারের জন্য ওয়াজিব যে,অচিরেই পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা।
প্রয়োজনে এ জন্য শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করা সমস্ত মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব ও কর্তব্য।
কিন্তু যতদিন পর্যন্ত এই পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু না হচ্ছে ,ততদিন প্রয়োজনের তাগিদে নিম্নোক্ত শর্তাদির সাথে কলেজ-ভার্সিটিতে শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেয়া যেতে পারে।

১/শিক্ষা অর্জন দেশ ও মুসলিম জাতীর খেদমতের উদ্দেশ্যে হতে হবে।
২/চোখকে সব সময় নিচু করে রাখতে হবে,প্রয়োজন ব্যতীত কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকার দিকে তাকানো যাবে না।মহিলা/পুরুষ তথা অন্য লিঙ্গের  সহশিক্ষার্থীদের সাথে তো কোনো প্রকার সম্পর্ক রাখা যাবেই না।সর্বদা অন্য লিঙ্গর শিক্ষার্থী থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে।(ফাতাওয়া উসমানী ১/১৬০-১৭১)(শেষ)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/434

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়টির সানসেট আইনটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই আইনটি দ্বারা ফ্রি মিক্সিং পরিবেশ অনেকা কমে যাবে, যে ফ্রি মিক্সিং পরিবেশের কারণে জেনারেল শিক্ষাকে অনেক শর্তাদির মাধ্যমে বৈধতা প্রদাণ করা হয়ে থাকে।

সানসেট ল কে অবশ্যই অবশ্যই বহাল রাখতে হবে।

(২) যেই আন্দোলন সানসেট ল উঠিয়ে সময় বৃদ্ধি করার   দাবী করা হয়,  সেই আন্দোলনে আমার সক্রিয় অংশগ্রহণ কিংবা মৌন সমর্থন কোনোটাই জায়েয হবে না।

(৩)যদি আপনি আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন কিংবা আন্দোলনের প্রতি আমার মৌন সমর্থন আপনার থাকে আর এই আন্দোলনের ফলে যদি সানসেট ল উঠে যায় তবে সন্ধ্যার পর রাতের অন্ধকারে ক্যম্পাসে যত ফ্রি মিক্সিং ও গুনাহর কাজ হবে (সানসেট ল বহাল থাকলে যেসব গুনাহ হত না), সেটার দায় আপনার উপর বর্তাবে। এবং এর গোনাহ আপনার আমলনামায় যুক্ত হতে থাকবে।

(৪) একজন সাধারণ মুসলিম ও উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে, আপনার উপর অত্যাবশকীয় হল, এই দাবীর বিরুদ্ধে কথা বলা । এবং সেনসেট ল বহাল রাখার যাবতীয় চেষ্টা প্রচেষ্টা করা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...