আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
22 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম।মানুষ গুনাহ করলে আমার মনে হয় আল্লাহ তাকে মৃত্যু দিক।এরপর আমার নিজের যা গুনাহ হয় তারাও যদি সে গুনাহর অংশীদার হয় তাও আমার মনে হয় যে তাদের জন্য আমার গুনাহ হচ্ছে আল্লাহ তাদের মৃত্যু দিক।আমি মুখ দিয়ে এমন কিছু চাইনি কিন্তু আমার মনে মনে কামনা হয় এরপর আমি আবার আল্লাহর কাছে বলি যাতে আল্লাহ তাদের মৃত্যু না দেয় এই সম্বলিত কারণে।তারপরেও আমার মনে অনেক অশান্তি কাজ করে,আমার প্রিয়জনেরা কোনো দূরবর্তী স্থানে ভ্রমণ করলেও তাদের জন্য মনে মনে মৃত্যু কামনা আসে তাদের গোনাহর উসিলা দেখিয়ে বা তাদের জন্য আমার গুনাহ হয় কিছু সে উসিলা দেখিয়ে এরপর আমি অনেক পেরেশান হয়ে যাই আল্লাহর কাছে আবার মুখ দিয়ে চাইতে থাকি যে তাদের গুনাহের কারণে আল্লাহ মৃত্যু না দিক।আমার এইসকল কথার কারণে কি তাদের বিপদ/মৃত্যু হতে পারে?গুনাহর উসিলা দেখানোর কারণে কি আল্লাহ তাদের মৃত্যু দিয়ে দিবে?

বি:দ্র:এমন না যে তারা অনেক খারাপ কাজে লিপ্ত।তারা যে গুনাহ করে আমিও তাই ই করি।তারপরেও আমার এইসব কথা মৃত্যু কামনা মাথায় আসতেই থাকে।মাঝে মাঝে জীবনটা শেষ করে দিতে ইচ্ছে করছে এইসকল কারণে।কি করতে পারি?

1 Answer

0 votes
by (579,240 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم

অভিশাপ দেওয়া সংক্রান্ত হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ أنَّ رَجُلًا اِسْمُه عَبْدُ اللّٰهِ يُلَقَّبُ حِمَارًا كَانَ يُضْحِكُ النَّبِىَّ ﷺ وَكَانَ النَّبِىُّ ﷺ قَدْ جَلَدَه فِى الشَّرَابِ فَأُتِىَ بِهِ يَوْمًا فَأَمَرَ بِه فَجُلِدَ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ : اَللّٰهُمَّ الْعَنْهُ مَا أَكْثَرَ مَا يُؤْتٰى بِه فَقَالَ النَّبِىُّ ﷺ : «لَا تَلْعَنُوْهُ فَوَ اللهِ مَا عَلِمْتُ أَنَّه يُحِبُّ اللّٰهَ وَرَسُوْلَه». رَوَاهُ البُخَارِىُّ

‘উমার ইবনুল খত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তির নাম ছিল ‘আবদুল্লাহ, কিন্তু তাকে ‘হিমার’ (গাধা) উপাধিতে ডাকা হতো। সে (অবোধের ন্যায় কথাবার্তা বলে) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে হাসাতো। একদিন মদ্যপায়ীর জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ওপর দণ্ড প্রয়োগ করেছিলেন। এরপর আবার একদিন তাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আনা হলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে চাবুক মারার নির্দেশ করলেন। তখন এক ব্যক্তি বলে উঠল, হে আল্লাহ! তার ওপর তোমার অভিসম্পাত বর্ষিত হোক। কতবারই না তাকে এ অপরাধে আনা হলো? এমতাবস্থায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাকে অভিশাপ দিও না। আল্লাহর শপথ! আমি তার সম্পর্কে জানি যে, সে আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে ভালোবাসে।
 (সহীহ : বুখারী ৬৭৮০,মিশকাত ৩৬২৫)
,
নির্দিষ্ট ভাবে কোনো মুসলিম ব্যক্তির উপর অভিশাপ দেওয়া জায়েজ নেই।

 কেননা হাদিসে বর্ণিত হয়েছে:

سَالِمٌ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنْ الرُّكُوْعِ فِي الرَّكْعَةِ الْآخِرَةِ مِنَ الْفَجْرِ يَقُوْلُ : اللهُمَّ الْعَنْ فُلَانًا وَفُلَانًا وَفُلَانًا بَعْدَ مَا يَقُوْلُ سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ فَأَنْزَلَ اللهُ {لَيْسَ لَكَ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ} إِلَى قَوْلِهِ {فَإِنَّهُمْ ظَالِمُوْنَ} رَوَاهُ إِسْحَاقُ بْنُ رَاشِدٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ.

সালিম (রহ.) থেকে বর্ণিত, তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে শুনেছেন যে, তিনি ফজরের সলাতের শেষ রাকআতে রুকু থেকে মাথা তুলে ‘সামি‘আল্লাহু লিমান হামিদাহ্ (আল্লাহ তাঁর প্রশংসাকারীর প্রশংসা শোনেন। হে আমাদের প্রতিপালক! তোমার জন্য সমস্ত প্রশংসা)’, ‘রব্বানা ওয়ালাকাল হামদ’ বলার পর এটা বলতেনঃ হে আল্লাহ! অমুক, অমুক এবং অমুককে লানত করুন। তখন আল্লাহ এ আয়াত অবতীর্ণ করলেনঃ لَيْسَ لَكَ مِنَ الأَمْرِ شَيْءٌ ….. فَإِنَّهُمْ ظَالِمُونَ “তিনি তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হবেন অথবা তাদের শাস্তি দিবেন, এ বিষয়ে তোমার করণীয় কিছুই নেই। কারণ তারা জালিম।”(সূরা আলু ‘ইমরান ৩/১২৮)

[সহিহ বুখারী, অধ্যায়: তাফসীর, অনুচ্ছেদ: আল্লাহর বাণীঃ এই বিষয়ে আপনার করণীয় কিছুই নেই।]
এ হাদিস থেকে জানা গেল, আল্লাহ তাআলা নির্দিষ্টভাবে কোন কাফিরকেও অভিশাপ দেয়ার অনুমতি দেন নি।
এ মর্মে আরেকটা হাদিস:
উমর ইবনুল খত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তির নাম ছিল ‘আবদুল্লাহ, কিন্তু তাকে ‘হিমার’ (গাধা) উপাধিতে ডাকা হতো। সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে হাসাতো। একদিন মদপানের অপরাধের জন্য নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ওপর দণ্ড প্রয়োগ করেছিলেন। এরপর আবার একদিন তাকে নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আনা হলে তিনি তাকে চাবুক মারার নির্দেশ করলেন। তখন এক ব্যক্তি বলে উঠল, হে আল্লাহ, এই লোকের উপর তোমার অভিসম্পাত হোক। কতবারই না তাকে এ অপরাধে আনা হল!
তখন নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন:
«لَا تَلْعَنُوْهُ فَوَ اللهِ مَا عَلِمْتُ أَنَّه يُحِبُّ اللّٰهَ وَرَسُوْلَه»
“তাকে অভিশাপ দিও না। আল্লাহর শপথ! আমি তার সম্পর্কে জানি যে, সে আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে ভালোবাসে।” (বুখারী)
এ হাদিসে দেখা গেলো ,প্রিয় নবি সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নির্দিষ্টভাবে একজন পাপী ব্যক্তিকে অভিশাপ দেয়ার অনুমতি দেন নি।
,
তবে মাজলুম জালেমের প্রতি বদ দুয়া করতে পারবে,অভিশাপ দিতে পারবে।
,
বিস্তারিত জানুনঃ  

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনি তো তাদের মৃত্যু মনে মনে চেয়েছিলেন,মৌখিক নয়।
সুতরাং এটি অভিশাপের অন্তর্ভুক্ত হবেনা।

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এ ধরনের চিন্তাভাবনার দরুন তাদের ক্ষতি হবেনা।
এ ধরনের কথার দরুন তাদের মৃত্যু হবেনা।

আল্লাহ তায়ালা যখন তাদের মৃত্যু লিখে রেখেছেন তখনই তাদের মৃত্যু হবে তার আগে নয়।

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এ ধরনের বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনা না করার পরামর্শ থাকবে।
নিজেকে নিজে গুনাহ মুক্ত থাকার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...