আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
31 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
১। আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। হায়েজ অবস্থায় সূরা মূলক রাতে শোয়ার আগে তেলাওয়াত করা যাবে কিনা। আবার সুরা ইয়াসিন সকালবেলা, সূরা ওয়াকিয়া সন্ধ্যাবেলা দেখে দেখে তেলাওয়াত করা যাবে কিনা??
২।ওস্তাদ  আমার কাছ থেকে কেউ যদি একটা শাড়ি নিয়ে বেপর্দা হয়ে ওই শাড়ি পড়ে বাইরে ঘুরতে যায় এবং আমি জানি যে সে বেপর্দা হয়েই বাহিরে  যাবে তবু্ও শাড়িটা দিই। শাড়ি দেওয়ার কারণে কি আমি গুনাগার হবো??
৩।ওস্তাদ ট্রেনে টিকেট এক  স্টেশন  থেকে করা আছে আমি যদি সে স্টেশনের আগেই গাড়িতে উঠি তাহলে কি আমার কোন গুনাহ হবে?  উল্লেখ্য যেখান থেকে আমি ট্রেনে উঠবো ওখান থেকে টিকেট কাটা যায় না।
৪। স্ত্রী যদি স্বামী  আসার আগেই ঘুমিয়ে যায়,, তাহলে কি ওই স্ত্রী    গুনাগার হবে?

1 Answer

0 votes
by (583,020 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
শরীয়তের বিধান হলো মহিলাদের হায়েজ অবস্থায় কুরআন শরিফ স্পর্শ করা, তেলাওয়াত করা জায়েজ নেই। 
,
হায়েজ,নেফাস,গোসল ফরজ থাকা অবস্থায় কুরআনে কারীম পড়া হারাম। 
তবে যিকির,দোয়া সম্বলিত আয়াত,দ্বীনি কিতাব সমুহ পড়তে কোনো সমস্যা নেই।   
(কিতাবুন নাওয়াজেল ৩/১১০) 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ   
عن ابن عمر : عن النبي صلى الله عليه و سلم قال لا تقرأ الحائض ولا الجنب شيئا من القرآن (سنن الترمذى، ابواب الطهارات، باب ما جاء في الجنب والحائض : أنهما لا يقرأن القرآن، رقم الحديث-131

অনুবাদ-হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-ঋতুবতী মহিলা এবং গোসল ফরজ হওয়া ব্যক্তি কোরআন পড়বে না।
(সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-১৩১,
সুনানে দারেমী, হাদীস নং-৯৯১,
মুসনাদুর রাবী, হাদীস নং-১১,
মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১০৯০,
মুসন্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-৩৮২৩)

ولا بأس لحائض وجنب بقراء ۃ أدعیۃ ومسہا وحملہا وذکر اللّٰہ عز وجل وتسبیح۔ (درمختار ۱؍۲۹۳ کراچی، ۱؍۴۸۸ زکریا، الفتاویٰ التاتارخانیۃ ۱؍۴۸۱ زکریا) 
হায়েজাহ মহিলার জন্য কুরআনের দোয়ার আয়াত তেলাওয়াত করা,সেটা স্পর্শ করা,উঠানো,আল্লাহর যিকির তাসবিহ জপা জায়েজ।
,
এতে কোনো সমস্যা নেই। 
,
হায়েজ অবস্থায় মুনাজাত মূলক দোয়া মূলক আয়াত পড়া যাবে।
.
আয়াতুল কুরসি দোয়া মূলক, তিন কুল দোয়া মূলক ,আমানার রসুল দোয়া মূলক, মঞ্জিল এর ৩৩ আয়াত দোয়া, মোনাজাত মূলক আয়াতসমূহ -এসবও পড়া যাবে।
এগুলোও দোয়া মূলক আয়াত।

فتاوی شامی 

" فلو قرأت الفاتحة على وجه الدعاء أو شيئاً من الآيات التي فيها معنى الدعاء ولم ترد القراءة لا بأس به، كما قدمناه عن العيون لأبي الليث، وأن مفهومه أن ما ليس فيه معنى الدعاء كسورة أبي لهب لا يؤثر فيه قصد غير القرآنية".(1/293)
সারমর্মঃ-
যদি সুরা ফাতেহা দোয়ার উদ্দেশ্যে পড়ে,অথবা অন্য কোনো আয়াত পড়ে,যে আয়াতের মধ্যে দোয়ার অর্থ আছে,সেক্ষেত্রে কিরাআত (তিলাওয়াত) উদ্দেশ্য না হয়,তাহলে কোনো সমস্যা নেই। তবে যে আয়াতের মধ্যে দোয়ার অর্থ নেই,যেমন সুরা লাহাব,সেক্ষেত্রে কুরআন থেকে তিলাওয়াত না করার উদ্দেশ্যটি প্রতিক্রিয়াশীল হবেনা। {অর্থাৎ সেক্ষেত্রে কুরআন থেকে কিরাআত (তিলাওয়াত) উদ্দেশ্য হিসেবেই ধরা হবে।}
(ফাতাওয়ায়ে শামি ১/২৯৩)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে হায়েজ অবস্থায় সুরা মুলক,সুরা ইয়াসিন,সুরা ওয়াকিয়া তিলাওয়াত করা জায়েজ নেই।

(০২)
হ্যাঁ, এতে আপনি গুনাহগার হবেন।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢] 

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}

(০৩)
এক্ষেত্রে আপনি গুনাহগার হবেন।
প্রশ্নে উল্লেখিত সমস্যার সমাধানের জন্য কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে নিবেন।

(০৪)
এক্ষেত্রে স্ত্রী গুনাহগার হবেনা।
তবে স্বামী এসে তার শারীরিক খেদমতের প্রয়োজন হলে স্ত্রীকে ডাক দিবে। স্ত্রী এমতাবস্থায় কোনো ওযর ছাড়া ইচ্ছাকৃতভাবে  না উঠলে গুনাহগার হবে।

হাদীস শরীফে আছে,

إذا دعا الرجل زوجته لحاجته فالتأته، وإن  كانت على التنور

স্বামী যখন নিজ প্রয়োজনে স্ত্রীকে ডাকবে তখন সে যেন তাতে সাড়া দেয়, যদিও সে চুলায় (রান্নার কাজে) থাকে (জামে তিরমিযী, হাদীস : ১১৬০; সুনানে নাসাঈ, হাদীস : ৮৯৭১)।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...