আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
28 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আমরা চার বোন, ভাই নেই। আমিই বড়। আম্মু আব্বুর ছোটবেলা থেকেই আমাকে ডাক্তার বানানোর শখ ছিল, আমিও তাদের শখের সাথে সহমত ছিলাম এবং এখন একটি সরকারি মেডিকেলে দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছি। কিন্তু এখন জানতে পেরেছি কো- এজুকেশন, মাহরাম ছাড়া নির্দিষ্ট দূরত্বে সফর এবং সেখানে অবস্থান কোনোভাবেই শারিয়াহ সমর্থন করে না।আমাকে মাহরাম ছাড়াই সফর করতে হচ্ছে এবং দূরে থাকতে হচ্ছে।  তবে পরিবারকে এখন এটা বোঝানো প্রায় অসম্ভব বলা যায়, কোনোভাবেই মেনে নিতে চাইবে না। সুতরাং আমার এখন কি করা উচিৎ?

এবং আমার যেহেতু পরিবারে, আত্মীয় স্বজনদের মধ্যেও এমন কেউ নেই যারা আমার পরিবারের আর্থিক ভরণপোষণ গ্রহণ করবে, সেক্ষেত্রে আমার পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব কার উপর বর্তায়? ( উল্লেখ্য, আমার বাবা একটি প্রাইভেট জব করেন, কিছুদিনের মধ্যেই হয়তো রিটার্ন করবেন এবং  তখন আর্থিকভাবে পরিবারে সাপোর্ট দেওয়ারও প্রয়োজন পড়বে, বাবার বয়স এবং পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনায় নতুন করে কোনো কাজ করাও তার জন্য কষ্টসাধ্য.... যদিও আমি এখন বিয়ে করে সংসারে মনযোগী হতে চাচ্ছিলাম কিন্তু পরিবারের এসব কথা চিন্তা করেই সে সিদ্ধান্তও নিতে পারছি না, আমি আসলে নিশ্চিত হতে চাচ্ছি এমতাবস্থায় আমার পরিবারের দায়িত্ব আমার উপর বর্তায় কিনা এবং আমার করণীয় কি!)

1 Answer

0 votes
by (578,700 points)
জবাবঃ- 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/6603/ ফতোয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,  
পরিবারের জন্য খরচ করা,মা বাবার ভরনপোণের জন্য খরচ করা উত্তম কাজ।
মা বাবা নিজেদের ভরনপোষণের ক্ষেত্রে অসমর্থ হলে সন্তানদের জন্য তাদের ভরনপোষণের খরচ দেওয়া শুধু শরীয়তেই নয়  এটা মানবতার দিক লক্ষ্য করেও জরুরি।

হাদিস শরিফে এসেছে, 

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘খরচের ব্যাপারে তুমি আগে নিজের প্রয়োজনীয় খরচের দায়িত্বশীল, তারপর তোমার স্ত্রীর, তারপর সামর্থ্য হলে তোমার নিকটাত্মীয়ের খরচ তোমার ওপর বর্তাবে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস ৯৯৭)

মা-বাবা  ভরণ-পোষণের অধিকারী হওয়ার জন্য শর্ত হলো দুটি।
★এক. তাঁরা এমন দরিদ্র হতে হবে যে তাঁরা নিজের মালিকানার সম্পদে চলতে অক্ষম। এখন কথা হলো, যদি তাঁরা উপার্জনের শক্তি রাখে, তাহলেও তাঁদের সন্তানদের ভরণ-পোষণ দিতে হবে কি না? এ ক্ষেত্রে বিধান হলো, তাঁদের উপার্জনের শক্তি থাকলেও যদি তাঁদের কাছে চলার মতো নগদ টাকাকড়ি না থাকে, তাঁদের সন্তানদের ভরণ-পোষণ দিতে হবে। তাদের সন্তানরা এ কথা বলতে পারবে না যে আপনি তো উপার্জনে সক্ষম, আপনি নিজে উপার্জন করে চলুন। তবে যদি তাঁরা ধনী হন, তথা তাঁদের মালিকানায় নগদ এমন সম্পত্তি থাকে, যা দ্বারা তাঁরা শান্তিতে কালাতিপাত করতে পারেন, তাহলে সন্তানদের ওপর তাঁদের ভরণ-পোষণ দেওয়া ওয়াজিব নয়।

★দুই. সন্তান-সন্ততি সামর্থ্যবান ও উপার্জনে সক্ষম হতে হবে। তাদের সামর্থ্যবান হওয়ার পরিমাণ হলো, তাদের মালিকানার সম্পত্তি বা উপার্জনকৃত আয়ের দ্বারা নিজের ও নিজের স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততির স্বাভাবিক ভরণ-পোষণের পর অতিরিক্ত সম্পদ থাকতে হবে। অন্যথায় তাদের উপার্জনকৃত আয়ের মধ্য থেকে যদি তার নিজের ও স্ত্রী বা সন্তান-সন্ততির ভরণ-পোষণের অতিরিক্ত সম্পদ না থাকে, তাহলে মা-বাবা ও ঊর্ধ্বতন আত্মীয়ের ভরণ-পোষণ দেওয়া ওয়াজিব নয়। যদিও এ ক্ষেত্রে উত্তম হলো, কষ্ট হলেও যথাসাধ্য মা-বাবারও ভরণ-পোষণের খরচ চালিয়ে যাবে। (তাবঈনুল হাকায়েক : ৩/৬৪, রদ্দুল মুহতার : ২/৬৭৮)

মা-বাবার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব উপরোক্ত দুই শর্তে সব ছেলে-মেয়ের ওপর ওয়াজিব। এ দায়িত্ব সব সাবালক সামর্থ্যবান ছেলে-মেয়ের ওপর সমভাবে বর্তাবে। এ ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই, তাই কোনো মেয়ে যদি সামর্থ্যবান ও বিত্তবান হয়, তাহলে ছেলেদের মতো সমভাবে তার ওপরও মা-বাবার খরচের দায়িত্ব বর্তাবে। কেননা মা-বাবার জীবিত অবস্থায় সন্তানের জন্য খরচ ও উপহারে মেয়েরাও তাদের ভাইদের মতো সমঅধিকারী, তাই মা-বাবার খরচ বহনে তারাও সামর্থ্যের শর্তে তাদের ভাইদের সমদায়িত্বশীল হবে। ছেলে-মেয়ে না থাকলে তারপর সিরিয়াল আসবে নাতি-নাতনিদের। অতএব, তাদের ওপর সমভাবে এ দায়িত্ব বর্তাবে। (ফাতহুল কাদির : ৪/৪১৭)

আরো জানুনঃ- 
,
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এই মুহুর্তে আপনার পরিবারের দায়িত্ব আপনার উপর বর্তায়না।

তবে কোনোদিন যদি আপনার বাবা এবং মা এমন দরিদ্র হয়ে যান যে তাঁরা নিজের মালিকানার সম্পদে চলতে অক্ষম।

এবং সেই মুহুর্তে আপনার মালিকানার সম্পত্তি বা উপার্জনকৃত অর্থ আপনার প্রয়োজন অতিরিক্ত হয়,সেক্ষেত্রে প্রয়োজন অতিরিক্ত অংশ হতে আপনার বাবা মার ভরনপোষণ দেয়া আপনার উপর তখন ওয়াজিব হবে।

নারীদের মেডিকেলে পড়াশোনা করার বিধান জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...