জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
কুরআনের কোনো আয়াত,মহান আল্লাহর নাম,রাসুলুল্লাহ সাঃ, হাদীস, ও শরীয়তের কোনো জরুরি বিধান নিয়ে হাসি ঠাট্রা,গালি গালাজ করলে ঈমান চলে যায়।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
قُلْ أَبِاللهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُوْلِهِ كُنْتُمْ تَسْتَهْزِئُوْنَ، لاَ تَعْتَذِرُوْا قَدْ كَفَرْتُمْ بَعْدَ إِيْمَانِكُمْ
‘আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহর সাথে তাঁর হুকুম-আহকামের সাথে এবং তাঁর রাসূলের সাথে ঠাট্টা করছিলে? ছলনা কর না, ঈমান আনার পর তোমরা যে কাফির হয়ে গেছ’ (তওবা ৬৫-৬৬)।
فَنَذَرُ الَّذِيْنَ لاَ يَرْجُوْنَ لِقَاءَنَا فِيْ طُغْيَانِهِمْ يَعْمَهُوْنَ
‘সুতরাং যারা আমার সাথে সাক্ষাতের আশা রাখে না, আমি তাদেরকে তাদের দুষ্টামীতে ব্যতিব্যস্ত করে রাখি’ (ইউনুস ১১)।
এ ধরনের লোকদের সাথে উঠাবসা, চলাফেরা ত্যাগ করতে হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা উক্ত আচরণ পরিত্যাগ না করে।
وَقَدْ نَزَّلَ عَلَيْكُمْ فِي الْكِتَابِ أَنْ إِذَا سَمِعْتُمْ آيَاتِ اللهِ يُكْفَرُ بِهَا وَيُسْتَهْزَأُ بِهَا فَلاَ تَقْعُدُوْا مَعَهُمْ حَتَّى يَخُوْضُوْا فِيْ حَدِيْثٍ غَيْرِهِ إِنَّكُمْ إِذًا مِثْلُهُمْ إِنَّ اللهَ جَامِعُ الْمُنَافِقِيْنَ وَالْكَافِرِيْنَ فِيْ جَهَنَّمَ جَمِيْعًا-
‘আর কুরআনের মাধ্যমে তোমাদের প্রতি এই হুকুম জারী করে দিয়েছেন যে, যখন আল্লাহর আয়াত সমূহের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন ও বিদ্রূপ করতে শুনবে, তখন তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা প্রসঙ্গ পরিবর্তন করে। অন্যথা তোমরাও তাদেরই মত হয়ে যাবে। আল্লাহ মুনাফিক ও কাফিরদেরকে জাহান্নামে একই জায়গায় সমবেত করবেন’ (নিসা ১৪০)।
আরো জানুনঃ-
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তির তওবার সুযোগ আছে।
তিনি তওবা করে কালেমায়ে শাহাদাত পাঠ করে ইসলাম ধর্মে ফিরে আসতে পারবে।
তার জন্য হেদায়াতের দোয়া করা জায়েজ আছে।
(০২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَرِثُ الْمُسْلِمُ الْكَافِرَ وَلَا الْكَافِرُ الْمُسْلِمَ»
উসামাহ্ ইবনু যায়দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলিম কাফিরের ওয়ারিস হবে না, আর কাফিরও মুসলিমের ওয়ারিস হবে না।
সহীহ : (বুখারী ৬৭৬৪, মুসলিম ১৬১৪, তিরমিযী ২১০৭, ইবনু মাজাহ ২৭২৯, আবূ দাঊদ ২৯০৯, আহমাদ ২৭৭৪৭, সহীহ ইবনু হিব্বান ৬০৩৩।)
কোনো মুসলিম মৃত্যুবরণ করলে তার সম্পদ ভিন্ন ধর্মাবলম্বী তথা ইয়াহূদী-খ্রিস্টান, অগ্নিপূজকসহ অন্য ধর্মের অনুসারীরা ঐ মুসলিমের সম্পদে ওয়ারিস হবে না। তথা মুসলিম কোনো কাফিরকে ওয়ারিস বানাবে না। এ কথার উপর সকল ফাকীহ ও ‘আলিম ঐকমত্য পোষণ করেছে।
তবে কাফিরের পরিত্যক্ত সম্পদে মুসলিম ওয়ারিস অংশীদার হবে কিনা- এ ব্যাপারে ফাকীহ ও ‘আলিমদের মাঝে মতভেদ রয়েছে।
জুমহূর সাহাবী, তাবি‘ঈ ও তাবি-তাবি‘ঈগণ বলেনঃ কাফিরের সম্পদে মুসলিম ওয়ারিস হবে না।
অপরদিকে মু‘আয ইবনে জাবাল, মু‘আবিয়াহ্ (রাঃ), সা‘ঈদ ইবনে মুসাইয়্যিব ও মাসরূক (রহঃ) সহ অন্যান্যরা বলেন, কাফিরের সম্পদে মুসলিম ওয়ারিস হবে, কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ «الْإِسْلَامُ يَعْلُو وَلَا يُعْلٰى عَلَيْهِ» ‘‘ইসলাম সর্বদাই সমুন্নত, পরাভূত হবার নয়।’’
তাই মুসলিম কাফিরের সম্পদে ওয়ারিস হবে। অমুসলিম মুসলিমের সম্পদে ওয়ারিস হবে না। তবে জুমহূরের প্রামাণ্য হাদীস বিশুদ্ধ।
মুরতাদ কখনো মুসলিমদের সম্পদে ওয়ারিস হবে না। এটা সর্বসম্মত মত। অনুরূপভাবে মুসলিম কি মুরতাদের সম্পদে ওয়ারিস হবে? তা নিয়ে ফাকীহদের মাঝে মতানৈক্য রয়েছে। মালিক, শাফি‘ঈ, রবী‘আহ্ ইবনু আবূ লায়লা প্রমুখসহ অনেকেই মনে করেন মুসলিম ব্যক্তিও মুরতাদের সম্পদের ওয়ারিস হবে না। ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) বলেন, মুরতাদ হওয়ার পর যে সম্পদ অর্জিত হবে তা বায়তুল মাল (রাষ্ট্রীয় কোষাগারে) জমা হবে, আর ইসলাম অবস্থায় যা অর্জিত হয়েছে মুসলিম তার ওয়ারিস হবে। (ফাতহুল বারী ১২শ খন্ড, হাঃ ৬৭৬৪; শারহে মুসলিম ১১/১২ খন্ড, হাঃ ১৬১৪; মিরকাতুল মাফাতীহ)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
কেহ যদি মুরতাদ অবস্তায় মৃত্যবরণ করে,সেক্ষেত্রে ইসলাম ধর্মে থাকা অবস্থায় যেই সম্পত্তির সে মালিক ছিলো,ওয়ারিশরা সেই সম্পদ থেকে অংশ পাবে।