আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
56 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।
সম্প্রতি একব্যক্তি পবিত্র কাবা শরীফে গিয়ে জয় বাংলা স্লোগান দেন। ২ জন একসাথে ফেসবুকে এটা দেখার পর ১ম ব্যক্তি ২য় জনকে বলে কতটা দুর্ভাগা। না হলে আল্লাহর ঘরের কাছে গিয়েও কেউ এগুলো বলে।
তখন ২য় ব্যক্তি বলে কোনো মুসলিমের মধ্যে সামান্যতম ইমান থাকলে সে অমুক লীগ করেনা। যেসব করে ওরা। ১ম জন বলে এসব কি বলো। তখন ২য় জন বলে এক ঘটনা মনে নাই তোমার ওইযে অমুক লীগের লোকজন মানুষদের নামাজ পড়তে দিলোনা বাঁধা দিলো নামাজ পড়তে। কোনো মুসলিম কি এগুলো করতে পারে।
১.*** এরকম পুরা একটা দলকে বলায় ২য় জনের ইমানে কি কোনো সমস্যা হয়েছে? কারন বৃহৎ একটি দলের মধ্যে অবশ্যই ইমানদার মানুষও আছে.
২.জানার জন্য প্রশ্ন -
স্বামী স্ত্রী কারও ইমান চলে গেলে তাদের নাকি বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে কি তালাকের মতো ৩ বার হলে অবৈধ হয়ে যায়? নাকি যতবার ইমান নবায়ন করা হয় ততবার বিয়ে নবায়ন করা যায়?

৩. শুনেছি ওয়াসওয়াসাগ্রস্থ স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দিলেও তা হয়না৷ আবার এরকম গ্রস্থ মহিলাও যদি নিজের নফসকে দেয় তাতেও সমস্যা হয়না। কিন্তু স্ত্রী যদি ওয়াসওয়াসা রোগে আক্রান্ত হয় এবং স্বামী স্বাভাবিক থাকে আর কোনো কারনে স্বামী ওই স্ত্রীকে তালাক দিলে বা শর্তযুক্ত তালাক প্রদান করলে তখন কি স্ত্রীর উপর তা পতিত হয়ে যায়?

1 Answer

0 votes
by (583,020 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০২)
স্বামী স্ত্রী যদি উভয়ে মুরতাদ হয়ে যায়,তারপর উভয়েই যদি এক সাথে ইসলাম গ্রহন করে,তাহলে তাদের বিবাহ ঠিকই থাকবে।
নতুন করে বিবাহ পড়িয়ে নিতে হবেনা।

হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছেঃ

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ رَجُلاً، جَاءَ مُسْلِمًا عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ جَاءَتِ امْرَأَتُهُ مُسْلِمَةً بَعْدَهُ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّهَا قَدْ كَانَتْ أَسْلَمَتْ مَعِي . فَرَدَّهَا عَلَيْهِ .

উসমান  ইবন  আবূ  শায়বা ........ ইবন  আববাস  (রাঃ)  হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,  রাসূলুল্লাহ্  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর  যুগে  প্রথমে  এক  ব্যক্তি  ইসলাম  গ্রহণ  করে,  পরে  তার  স্ত্রী  ইসলাম  কবূল  করে।  সে ব্যক্তি  বলে, হে আল্লাহর রাসুল!  সে  তো  আমার  সাথেই  ইসলাম  কবূল  করেছে।  তিনি তাকে (স্ত্রীকে)  তার নিকট  ফিরিয়ে  দেন।

(আবু দাউদ ২২৩২)

الفقه الإسلامى و أدلته: (3153/4، ط: دار الفكر)
وأما الفسخ: فهو نقض العقد من أصله، أو منع استمراره، ولا يحتسب من عدد الطلاق، ويكون غالبا في العقد الفاسد أو غير اللازم.
সারমর্মঃ-
ফসখে নিকাহকে তালাকের সংখ্যার মধ্যে গণনা করা হবেনা।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
স্বামী স্ত্রী কারও ইমান চলে গেলে তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। 
তবে এটিকে তালাকের সংখ্যার মধ্যে গণনা করা হবেনা।
যতবার ঈমান নবায়ন করা হয়, ততবার বিয়ে নবায়ন করা যায়।

(০৩)
স্ত্রী যদি ওয়াসওয়াসা রোগে আক্রান্ত হয় এবং স্বামী স্বাভাবিক থাকে আর কোনো কারনে স্বামী ওই স্ত্রীকে তালাক দিলে বা শর্তযুক্ত তালাক প্রদান করলে তখন ঠিকই স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হয়ে যাবে।

(০১) 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
আবূ হারূন আল-আবদী (রহঃ) থেকে বর্ণিত।
عَنْ أَبِي هَارُونَ الْعَبْدِيِّ، قَالَ كُنَّا إِذَا أَتَيْنَا أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ قَالَ مَرْحَبًا بِوَصِيَّةِ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ . إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ لَنَا " إِنَّ النَّاسَ لَكُمْ تَبَعٌ وَإِنَّهُمْ سَيَأْتُونَكُمْ مِنْ أَقْطَارِ الأَرْضِ يَتَفَقَّهُونَ فِي الدِّينِ فَإِذَا جَاءُوكُمْ فَاسْتَوْصُوا بِهِمْ خَيْرًا "

 তিনি বলেন, আমরা আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) -এর কাছে এলেই তিনি বলতেনঃ তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওসিয়ত অনুযায়ী স্বাগতম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বলতেনঃ লোকেরা অবশ্যই তোমাদের অনুগামী। অচিরেই পৃথিবীর দিকদিগন্ত থেকে লোকেরা তোমাদের নিকট দ্বীনি ইলম অর্জনের জন্য আসবে। তারা যখন তোমাদের নিকট আসবে,তখন তোমরা তাদেরকে ভালো ও উত্তম উপদেশ দিবে।(সুনানু তিরমিযি-২৪৯,তিরমিযী ২৬৫০-৫১, মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৪৭।)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
অতীব জরুরী ও সাধারণ মাস'আলা মাসাঈল আয়ত্বে না থাকার কারণে দৈনন্দিন জীবনে দ্বীন-ইসলাম পালন করতে, যে সমস্ত দ্বীনি ভাই-বোন থমকে দাড়ান,এবং যাদের দ্বীনি ইলম অর্জনের কাছাকাছি কোনো নির্ভরযোগ্য মাধ্যম নেই, মূলত তাদেরকে দিকনির্দেশনা দিতেই আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রয়াস .....

মুহতারাম/মুহতারামাহ!
দ্বীনের পরিধি অনেক ব্যাপক, সকল বিষয়ে আলোচনা করা বা দিকনির্দেশনা দেওয়া স্বল্প পরিসরের এই ভার্চুয়ালি মাধ্যম দ্বারা আমাদের পক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে। চেষ্টা করলেও প্রশ্নকারীর পিপাসা মিটানো সম্ভব হবে না। প্রত্যেক বিষয়ে আমরা শুধুমাত্র সামান্য আলোকপাত করে থাকি।

উপরোক্ত প্রশ্নটির উত্তরের জন্য আপনার এলাকার সংশ্লিষ্ট উলামায় কেরামের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা আপনার জন্য কল্যাণকর হবে বলেই আমাদের ধারণা।

তাছাড়া ইলম অর্জনের জন্য সফর করা অত্যান্ত  জরুরী। এবং কষ্ট করে ইলম অর্জন করাই আমাদের  আকাবির আসলাফদের রীতি ও নীতি। এদিকেই কুরআনের এই আয়াত ইঙ্গিত দিচ্ছে,
 ۚفَلَوْلَا نَفَرَ مِن كُلِّ فِرْقَةٍ مِّنْهُمْ طَائِفَةٌ لِّيَتَفَقَّهُوا فِي الدِّينِ وَلِيُنذِرُوا قَوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُوا إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُونَ
তাদের প্রত্যেক দলের একটি অংশ কেন বের হলো না, যাতে দ্বীনের জ্ঞান লাভ করে এবং সংবাদ দান করে স্ব-জাতিকে, যখন তারা তাদের কাছে প্রত্যাবর্তন করবে, যেন তারা বাঁচতে পারে।(সূরা তাওবাহ-১২২)

সুতরাং আপনাকে বলবো, আপনি বিস্তারিত জানতে স্ব-শরীরে কোনো দারুল ইফতায় যোগাযোগ করবেন।
প্রশ্ন করার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।আল্লাহ তা'আলা আপনার ইলম অর্জনের স্পৃহাকে আরো বাড়িয়ে দিক, আমীন।

প্রত্যেকটা বিষয়ের সাথে নিম্নের হাদীসকে লক্ষ্য রাখবেন।
হাসান ইবনে আলী রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে।
ﻭﻋﻦ ﺍﻟﺤَﺴَﻦِ ﺑﻦ ﻋَﻠﻲٍّ ﺭﺿﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﻔِﻈْﺖُ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﷺ : « ﺩَﻉْ ﻣَﺎ ﻳَﺮِﻳﺒُﻚَ ﺇِﻟﻰ ﻣَﺎ ﻻ ﻳﺮِﻳﺒُﻚ » ﺭﻭﺍﻩُ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ﻭﻗﺎﻝ : ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ ﺻﺤﻴﺢٌ 
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি।তিনি বলেন,সন্দেহ যুক্ত জিনিষকে পরিহার করে সন্দেহমুক্ত জিনিষকে গ্রহণ করো।(সুনানু তিরমিযি-২৪৪২)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (3 points)
হুজুর ইমান ঠিক আছে কি না এইটুকু একটু বললে চিন্তা মুক্ত হতে পারতাম। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...