আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
21 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম,
একজন স্বামী দ্বীনের পথে থাকার চেষ্টা করে৷ সে চুল কাটানোর সময়, পুরো মাথায় ট্রিমার করে প্রায় নাড়ার মত করে চুল কাটিয়েছে। পরবর্তীতে তার স্রী তাকে বলে, কেমন করে চুল কাটিয়েছ, চুরের মত করে চুল কাটিয়েছ কেন?/ চুরের মত লাগতেছে। পরে স্বামী উত্তর দেয়, "জানো সাহাবীরা এভাবে চুল কাটিয়েছে,  তুমি কি সাহাবিদের চুর বললা? (নাউজুবিল্লাহ)
স্রী হয়তো জানেও না কিছু সাহাবি এভাবে চুল রাখতো, অথবা সাহাবিদের উদ্দেশ্য করেও চুলের কথা বলে নি। শুধু মাত্র এভাবে চুল তার পছন্দ না এইটা বুঝিয়েছে। আর স্বামীও এভাবে চুলের গুরুত্ব বোঝাতে সাহাবিদের কথা টেনে এনেছে, তবে সাহাবিদের কথা এভাবে বলা ঠিক হয় নি।
এতে কি সাহাবিদের কটুক্তি হয়েছে কিনা? কিভাবে তওবা করা উচিত?

1 Answer

0 votes
ago by (574,020 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

ﻋَﻦْ ﺍﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ( ﻧَﻬَﻰ ﻋَﻦْ ﺍﻟْﻘَﺰَﻉِ ) ، ﻗﺎﻝ ﻧﺎﻓﻊ – ﺃﺣﺪ ﺭﻭﺍﺓ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ – ﻓﻲ ﺗﻔﺴﻴﺮ ﺍﻟﻘﺰﻉ : ﻳُﺤْﻠَﻖُ ﺑَﻌْﺾُ ﺭَﺃْﺱِ ﺍﻟﺼَّﺒِﻲِّ ﻭَﻳُﺘْﺮَﻙُ ﺑَﻌْﺾٌ .

তরজমাঃ- হযরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত আছে যে,নবী কারীম সাঃএকটি শিশুর মাথার এক অংশের চুল ফেলে দিয়ে অন্য অংশের চুল রেখে দিতে নিষেধ করেছেন।
(সহীহ বুখারী- ৫৯২১,সহীহ মুসলিম-২১২০)


ﻋَﻦْ ﺍﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺭَﺃَﻯ ﺻَﺒِﻴًّﺎ ﺣَﻠَﻖَ ﺑَﻌْﺾَ ﺭَﺃْﺳِﻪِ ﻭَﺗَﺮَﻙَ ﺑَﻌْﻀًﺎ ﻓَﻨَﻬَﻰ ﻋَﻦْ ﺫَﻟِﻚَ ، ﻭَﻗَﺎﻝَ : ( ﺍﺣْﻠِﻘُﻮﻩُ ﻛُﻠَّﻪُ ﺃَﻭْ ﺍﺗْﺮُﻛُﻮﻩُ ﻛُﻠَّﻪُ )

তরজমাঃ-হযরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাঃ একবার একটি ছোট বালককে দেখলেন যে তার অর্ধেক মাথায় চুল মুন্ডিত এবং অর্ধেক মাথায় চুল অবশিষ্ট রয়েছে, তখন নবী কারীম সাঃএত্থেকে নিষেধ করে বললেনঃহয়তো তুমি সারা মাথা মুন্ডিয়ে ফেল নতুবা সমস্ত চুল রেখে দাও।(ইমাম আলবানী রহ ইহাকে সহীহ বলেছেন)
(সুনানু নাসায়ী-৫০৪৮,সুনানু আবি-দাউদ-৪১৯৫) 


ﻋﻦ ﺃﻧﺲ ﺑﻦ ﻣﺎﻟﻚ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻧﻪ ﺭﺃﻯ ﻏﻼﻣﺎ ﻟﻪ ﻗﺮﻧﺎﻥ ﺃﻭ ﻗﺼﺘﺎﻥ ﻓﻘﺎﻝ . ﺍﺣﻠﻘﻮﺍ ﻫﺬﻳﻦ ﺃﻭ ﻗﺼﻮﻫﻤﺎ ﻓﺈﻥ ﻫﺬﺍ ﺯﻱ اليهود ، 

তরজমাঃ- হযরত আনাছ রাঃ একবার এক বালককে দেখলেন তার মাথার মধ্যে (চুলের) দুইটি সিং বা বড় দুই গুচ্ছ চুল রয়েছে,তখন তিনি বললেনঃতুমি হয়তো এই দু'টি কে মুন্ডিয়ে নাও অথবা কেটে সমান করে দাও।
কেননা এরকম কিছু রেখে কিছু ফেলে দেয়া ইহুদীদের কৃতিকর্ম ও নিদর্শন। 
(সুনানে আবু-দাউদ, ৪১৯৭;

ইমাম তাবারানী সহ অনেক মুহাদ্দিস রাহ. হযরত ইবনে উমর রাঃথেকে নবী কারীম সাঃএর বানী বর্ণনা করেন,সিংগা লাগানোর প্রয়োজন ব্যতীত (ফ্যাশনের জন্য শুধু)ঘাড় বা গর্দনা মুন্ডন করা অগ্নিপূজারকদের কাজ-কর্ম।
,
শাইখ মুহাম্মদ বিন ইব্রাহিমকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন:
চুলের ক্ষেত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ হচ্ছে– সবগুলো চুল রেখে দেওয়া কিংবা সবগুলো চুল ফেলে দেওয়া। এমন ছিল না যে, তিনি কিছু অংশের চুল কামাই করতেন; আর কিছু অংশের চুল রেখে দিতেন।

বর্তমান যামানায় কিছু কিছু মুসলমান যা করে– মাথার কিছু অংশের চুল কামাই করে, কিছু অংশ রেখে দেয় এটি ‘কুযা’এর অন্তর্ভুক্ত, যা করতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিষেধ করেছেন। এই ‘কুযা’ কয়েক প্রকার হতে পারে:

১। মাথার কিছু কিছু জায়গার চুল কামাই করে অপর কিছু কিছু জায়গা রেখে দেওয়া।
২। মাথার সাইডের চুলগুলো কামাই করে মাঝখানের চুলগুলো রেখে দেওয়া।
৩। মাথার মাঝখানের চুলগুলো কামাই করে সাইডের চুলগুলো রেখে দেওয়া।
৪। মাথার সামনের চুলগুলো কামাই করে পিছনের চুলগুলো রেখে দেওয়া।
৫। মাথার পিছনের চুলগুলো কামাই করে সামনের চুলগুলো রেখে দেওয়া।
৬। মাথার এক পার্শ্বের কিছু চুল কামাই করে বাকীগুলো রেখে দেওয়া।
,

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,   
চুল রাখা তিন ত্বরিকার একটি ত্বরিকা হল, সকল দিক সমান করে চুল কর্তন করা ও রাখা। এখানে বাহ্যিক দৃষ্টিতে সকল দিন সমান থাকা বাঞ্চনীয়। দূর থেকে কোনো এক দিকে এত বেশী মনে হওয়া যা দৃষ্টিকটু, এমনটা গ্রহণযোগ্য হবে না। বরং সকল দিক সমান থাকতে হবে। হ্যা, কোনো একদিকে সামান্য একটু বেশী চুল হলে, আর সেটা দৃষ্টিকটু না হলে, হারামের আওতায় আসবে না। আপনি যে পদ্ধতির চুলের কথা বলছেন, সেটা পরিস্কার হারাম না হলেও সেটাকে কখনো উত্তম বলা যাবে না।বরং উত্তম হল সেই চুল, যে চুলের সকল দিক পুরোপুরি সমান থাকবে।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/53076

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,   
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সাহাবিদের কটুক্তি করা হয়নি। এর দরুন তওবা করা আবশ্যক হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...