আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
আমার এক পরিচিত গোপনে বিয়ে করেছে।এই বিয়ের ব্যাপারে কেউ জানেনা, ছেলের পরিবারর কেউও জানেনা,মেয়ের পরিবারের কেউও জানেনা।তবে ওদের সম্পর্কের ব্যাপারে সবাই জানতো।বাসায় বলার পরও বিয়ে না দেওয়ায় বা প্রতিষ্ঠিত হবে তারপর বিয়ে দিবে বলায় তারা নিজেরা কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে করে সম্পর্ক হালাল করে নেয়।২ জন ছাড়া কেউই তাদের এই বিয়ের ব্যাপারে জানেনা। কিন্তু এখন কথা হচ্ছে ছেলে অনেকক রাগী,বা অযথাই বউকে সন্দেহ করে এবং রাগে তিন তালাক দিয়েছে মেসেজে।১মে যখন ১ তালাক আর ২ তালাক দিয়েছিল তখন মেয়েটা অনেক রিকুয়েষ্ট করে যে তালাক বললেই হয়ে যায়,রাগের মাথায় আর যাই করেন না কেন তালাক শব্দটা উচ্চারণ করিয়েন না।
কিন্তু ওনি রাগের মাথায় তিন তালাক দিয়ে দিছে।তারপর ভিন্ন মুফতির থেকে জানতে পারে যে তিন তালাক হয়ে গেছে আর সংসার করা সম্ভব না,আর কখনো বিয়ে করাও সম্ভব না।তালাক দেওয়ার কিছুদিন পর্যন্ত ছেলেটা মেয়েটার পিছু ছাড়তে চায়তোনা,বলতো যে না তালাক হয়নি,আরে ফতোয়া আছে, রাগের মাথায় দিলে তালাক হয়না।আরো নানা কথা,কিন্তু ৩/৪ জন মুফতিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে সবাই বলেছে তিন তালাক হয়ে গেছে,তো যাই হোক,মেয়েটাও অনেকক কষ্ট হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহর ফয়সালা মেনে নিয়েছে,আর,ওনার হাসবেন্ডকে বুঝিয়েছে যে যা হওয়ার হয়েই গেছে,নতুন করে জীবন শুরু করুন।সারাজীবন হারামে থাকার কোনো মানে হয়না।নতুন কাউকে বিয়ে করে নিন।আমার সাথে আর সম্ভব না।এভাবে ছেলেটাকে বুঝিয়ে মেয়েটা সমস্ত যোগাযোগ ছিন্ন করে দেয়,আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। তারা ২ জনই অল্প বয়সী,অনার্স ১ম বর্ষ শেষ হলো মাত্র। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে তাদের বিয়ের বিষয়টাতো একদম গোপন ছিলো।ছেলেটা মেয়েটাকে বলেছে এই বিয়ের কথা যেন কাউকে না বলে কখনো।ওনিও নেক্সটে যাকে বিয়ে করবে তাকে বলবেনা।
কিন্তু, এখন মেয়েটা অনেককল মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।জীবনে কখনো এমন হবে তা কল্পনাও করেনি।কখনো ভাবেনি যে তাদের তালাক হয়ে যাবে, আলাদা হতে হবে।কিন্তু, ছেলের অতিরিক্ত রাগের কারণে আজকে এই দিন দেখতে হলো।
সবাই তো জানে মেয়েটা অবিবাহিত। এখন,মেয়ের পরিবার হয়তো মেয়ের জন্য বিয়ে দেখবে,পাত্র দেখবে।এখন,মেয়েটা এত খারাপ অবস্থা যে সে কি করবে তা বুঝতে পারছেনা।
ওর সাথে যার বিয়ে ঠিক হবে তাকে কি তার আগের বিয়ের ব্যাপরে জানানো প্রয়োজন না?আর না জানালে কি তাকে ঠকানো হবেনা?কি করবে মেয়েটা এখন,মেয়ের পরিবারকেও তো বলতে পারবেনা এই বিয়ের ব্যাপারে।
এখন কি করবে মেয়েটা,শুধু কি আন্তরিক তওবাহই যথেষ্ট, নাকি যার সাথে বিয়ে হবে তাকে এই অতীত জানাতে হবে।
আবার মেয়েটা ভয়েও আছে যদি অতীত জানার পর যে বিয়ের প্রস্তাব দিতে আসবে সে সবার সাথে বা মেয়ের পরিবারের কাছে বলে দেয়।তখন তো মেয়েটা আরো ঝামেলায় পড়বে।
কি করবে মেয়েটা?
আবার,মেয়েটা ভেবেছিলো তার মায়ের সাথে বিষয়টা শেয়ার করবে।কিন্তু, মায়ের সাথে শেয়ার করার পর তো মা বিষয়টা গোপন রাখতে চাওয়ার সম্ভাবনা বেশি,কারণ,এর কারণে বিয়ে ভেঙে যেতে পারে।
ওদের বিয়ে ১ বছরের মতো টিকে ছিলো।তবে বিয়ের পর ৫ মাস তাদের শুধু ফোনেই যোগাযোগ হতো।ছেলে এক জায়গায় মেয়ে আরেক জায়গায় থাকতো।আর,এরপর তারা কাছাকাছি জায়গায় থাকতো তবে একসাথে না,মাসে ১ দিন বা ২ দিন একসাথে সময় কাটাতো।আর,এরমধ্যেই ছেলেটা ১ম তালাক দিয়ে দেয়। আর,তিন তালাক দেওয়ার আগে তিন মাস তারা একসাথেই ছিলো।পরেই রাগে তিন তালাক দিয়ে দেয়,এমনকি ঐ টাইমে মেয়েটাকে অনেক প্রেসারও দিতো,গায়ে হাতও তুলতো।ছেলেটা সহ্য করতে পারতোনা মেয়ে তার পরিবারের মানুষদের সাথে বেশি কথা বলুক,বা ওদের কাছে যাক,মেয়েটা বলতো যে দেখ আমাদের বিয়েটা তো গোপন,তুমি পরিবার এনে বিয়ে করো তখন তোমার সব কথা শুনতে পারবো,মেয়ের পরিবার বলেছিলো ছেলের পরিবার আনতে,বিয়ে দিয়ে দিবে,কিন্তু ছেলের পরিবার আসেনি।যাই হোক পরে তো তালাক দিয়েই দিছে।
কিন্তু এখন মেয়েটা কি করবে?মেয়েটার জীবন যে নষ্ট হয়ে গেল,এই অতীত জানলে কেউ তো তাকে আর বিয়েও করতে চাইবেনা, এদিকে পরিবারের মানুষ বিয়ে দেখতেছে।আবার, মেয়ের অনেক খারাপও লাগে এটা ভাবলে যে অতীত না জানিয়ে বিয়ে করে ফেললে হয়তো ঠকানো হবে।এখন মেয়েটা কি করবে,একটু নসীহা করেন দয়া করে।মেয়ে চায়না পরিবারের কেউ জানুককারন,বিয়েটার ব্যাপারে একদমই কেউ জানেনা এখন তো সম্পর্কই নাই,এখন বলে আর কি হবে?কত আঘাত পাবে তারা
এখন কি করবে মেয়েটা?যার সাথে বিয়ে হবে তার সাথে অতীত কি গোপন রাখবে?নাকি অতীতের সেই বিয়ের কথা বলবে যে বিয়ে করতে চাইবে তাকে,আর বললেও কিভাবে বলবে?একটু দয়া করে জানান,অনেকক কষ্টে আর মানসিক যন্ত্রণায় আছে
আর,যদি গোপন রেখে বিয়ে করে ফেলে তাহলে কি গুনাহ হবে?নাকি সুযোগ আছে গোপন রাখার।
কি করলে আল্লাহ মেয়েটার উপর সন্তুষ্ট হবে,আল্লাহ তো ক্ষমাশীল,ইন শা আল্লাহ তিনি হয়তো ক্ষমা করে দিবেন, কিন্তু মেয়েটা কিভাবে পরিস্থিতি সামলাব। একটু জানান।