আসসালামু আলাইকুম
১। আমার আম্মু আব্বু আমাকে মহিলা মাদ্রাসায় চাকরির জন্য জোর করছে, আমি হেদায়েত পাওয়ার পরই আল্লাহর কাছে ওয়াদা করেছিলাম ইসলামের বাইরে কখনো যাবো না, যদিও এর জন্য আমাকে অন্যদের মতো অনেক পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে। আমি ঘরে থাকলে তেমন কোনো গুনাহ ই হয় না, হলেও জীবনে যাতে ২বার না হয় সেজন্য সবসময় চেষ্টা করি। কিন্তু মাদ্রাসায় চাকরি করলে প্রতিদিনই গুনাহ হবে, যেমন না চাইতেও অনেক পুরুষের দিকে চোখ পড়ে যায়, আল্লাহ তায়ালা তো একবার দুবার মাফ করবেন কিন্তু চাকরির দুহায় দিয়ে তো বারবার মাফ করবেন না। মাদ্রাসায় যদি চাকরি করি তবে বাসা থেকে মাদ্রাসায় যাওয়ার রাস্তায় ও তো পুরুষ থাকবে তখন ১০০% অন্য পুরুষের দিকে আমার চোখ না চাইলেও যাবেই, আমি কতদিন নিজেকে কন্ট্রোল করবো? আমি তো আর ফেরেশতা না। এতে তো গুনাহ হবে, নজরের হেফাজত হবে না, চোখের জেনাহ হবে, এতে ইবাদতের স্বাদ ও চলে যাবে। এতে কি আমার গুনাহ হবে, আমার গুনাহ হলে কি আম্মু আব্বু কেও এর জন্য শাস্তি পেতে হবে বা উনাদের ও গুনাহ হবে?
২। আমাকে দিয়ে চাকরি করাতো চাচ্ছে মুলত বাবার আর্থিক অবস্থার জন্য, ভালো কোনো বিয়ের প্রস্তাব আসার জন্য, কিন্তু সত্যি বলতে সত্যিকার দ্বীনদার ছেলেরা যারা পরিপূর্ণভাবে দ্বীন মেনে চলে তারা চাকরিজীবী মেয়েদের পছন্দ করে না সেটা খুব ভালো করেই জানি কিন্তু উনাদের বুঝাতে পারছি না। যদি বাবার আর্থিক অবস্থা খারাপ হয় অথবা ভালো যায়গা থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসার জন্য কি মেয়েকে বাইরে গিয়ে চাকরি করতে পিতামাতা বাধ্য করতে পারবে (যদিও সেটা মাদ্রাসা হয় যেখানে সহশিক্ষা নাই)?
আমি যদি পরিপূর্ণ দ্বীন মেনে চলি আমার উত্তম রিজিকের ব্যবস্থা তো আল্লাহ তায়ালাই করে দিবে। উপরোক্ত পরিস্থিতিতে আমি যদি চাকরি না করি তবে কি মা-বাবার কথা অমান্য করার কারণে আমার গুনাহ হবে? বা তারা কষ্ট পেয়ে অভিশাপ দিলে আমার উপর কোনো কাজ করবে? আমি তো শুধু আল্লাহর আদেশই মানতে চাচ্ছি, আল্লাহ তায়ালাই তো বলেছেন খুব প্রয়োজন ছাড়া মেয়েরা বাইরে যাবে না বা বাইরে গিয়ে ছেলেদের মতো কাজ করবে না, সেজন্যই তে চাকরি করতে চাচ্ছি না।
৩। একটা মেয়ে কিভাবে তার জীবন চালালে সে দুনিয়া এবং আখেরাত দু'দিকে শান্তি পাবে। ইসলামে নারীদের জীবন কিভাবে সাজাতে বলে।
৪। আমার মা-বাবা মোটামুটি আগপিছ করে দ্বীন মেনে চলার চেষ্টা করেন কিন্তু আমার বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্তেই তারা পশ্চিমাদের মতো সিদ্ধান্ত নেয়। অর্থাৎ পশ্চিমারা এদেশের মানুষের যেভাবে মাইন্ডসেট তৈরি করেছে সেভাবে সিদ্ধান্ত নেয় কিন্তু আমি চাই আমার প্রতিটি বিষয়েই যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে ইসলাম অনুযায়ী নিতে, রাসুলুল্লাহ সাঃ যেভাবে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছেন সেভাবে নিতে কিন্তু উনারা তেমন করে না, আগে দুনিয়া দেখে। আমি কিভাবে নসিহা করবো তাদের। মা-বাবার জন্য কোন দোয়াগুলো করলে তারা সঠিক দ্বীনের বুঝ পাবে এবং আমলও করবে, হেদায়েত ও পাবে অর্থাৎ তারা পরিপূর্ণভাবে নন-মাহরাম মানা সহ দ্বীনের সব কিছু মেনে চলবে। এমন আমলগুলো বলে দিয়েন যা করলে পিতামাতা হেদায়েত পাবে আমি করবো। মুমিন মাত্রই তো শুধু নিজে জান্নাতে যাবে না পরিবারসহ জান্নাতে জেতে চাইবে।
৫। আমি বাইরে গিয়ে ছেলেদের মতো চাকরি করলে ইসলাম থেকে আমার মন কিছুটা হলেও দূরে যাবে, দুনিয়ার চাকচিক্য আমার মনেও গেতে যাবে কিন্তু আমি এমনটা চাইনা। আমি না করার পরও মা-বাবা সহ খালারাও আমাকে কথা শুনচ্ছে। এসবে দিন দিন আমি মানসিক ট্রমায় চলে যাচ্ছি। এসবের জন্য ইবাদাতেও তেমন মন বসছে না, আমি অনলাইনে একটা কাজ করি তাতেও মন বসছে না, মন দিয়ে কাজ করতে পারছি না, কুরআন হিফজ করতাম সেটাতও মন বসাতে পারছি না। আগে গুনাহ করলে নাটক সিনেমা দেখলেও বাসায় কোনো সমস্যা হতো না এখন যেই পরিপূর্ণ দ্বীন মেনে চলতে চাচ্ছি ততই দুনিয়া আমার জন্য সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। প্রতি পদে বাধা পেতে হচ্ছে। IOM এর আলিম কোর্সে ভর্তি হতে চাচ্ছি কেননা এটাতে ভর্তি হলে দ্বীনের সকল জ্ঞানই পেয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ কিন্তু সেখানেও ভর্তি হতে পারছি না। আমাকে কিছু আমল বলে দিন যা করলে দ্বীন পালন আমার জন্য সহজ হবে, আমার ধৈর্য শক্তি বাড়বে ও আলিম কোর্সে যাতে ভর্তি হয়ে যেতে পারি, দ্রুত দোয়াগুলো কবুল হবে।
৬। জান্নাত পাওয়ার জন্য ও দুনিয়ায় একটু শান্তিপূর্ন জীবনের জন্য মেয়েদের উচ্চ শিক্ষা নেওয়া কতটা জরুরী?
ফরজ ইলম থাকলেই কি যথেষ্ট নয়। বাইরে শিক্ষা গ্রহণ না করে অনলাইনে দ্বীনি শিক্ষা নেওয়া কি যথেষ্ট নয়?
৭। ইসলামে নারীদের কতটুকু শিক্ষা নেওয়া জরুরী?
৮। মানুষ তো সবসময় একই থাকে না আগে দ্বীনের বুঝ ছিল না তাই পশ্চিমা ফ্যামিনিজদের মতো জীবনকে সাজাবো ভাবতাম, আল্লাহ তায়ালার রহমত যে আমাকে হেদায়েত দিয়েছন আমি আর হেদায়েত হারাতে চাইনা। মরে গেলে মা-বাবা ভাইবোন কোনো কাজেই আসবে না আমার গুনাহ আমাকেই বহন করতে হবে, অন্য জনের কারণে গুনাহ করে নিজের গুনাহের পাল্লা আর ভারি করতে চাই না। আমি চাচ্ছি আমার জীবন সাহাবিদের মতো করতে যদিও একটু সময় লাগবে, পুরোপুরি তাদের মতো পারবো না জানি তবুও চেষ্টা করে যাবো হয়তো এই চেষ্টাটুকুই আল্লাহ তায়ালা কবুল করে নিবেন। এজন্য কিভাবে গাইডলাইন নিবো, কোন বইগুলো পড়বো।
৯। পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে আমিও মাঝে মাঝে দিন ইসলাম থেকে কিছুটা হলেও দূরে সরে যাই তবে আবার ফিরে আসি। এটা থেকে কিভাবে ফিরে আসবো, কোন আমলগুলো করলে আমার ঈমান আরো বৃদ্ধি পাবে।
অনুগ্রহ করে প্রতিটি উত্তর একটু বিস্তারিত ভাবে দিয়েন আমি এটা আমার পরিবার কে দেখাবো ইনশাআল্লাহ।