আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
40 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম
১। আমার আম্মু আব্বু আমাকে মহিলা মাদ্রাসায় চাকরির জন্য জোর করছে, আমি হেদায়েত পাওয়ার পরই আল্লাহর কাছে ওয়াদা করেছিলাম ইসলামের বাইরে কখনো যাবো না, যদিও এর জন্য আমাকে অন্যদের মতো অনেক পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে। আমি ঘরে থাকলে তেমন কোনো গুনাহ ই হয় না, হলেও জীবনে যাতে ২বার না হয় সেজন্য সবসময় চেষ্টা করি। কিন্তু মাদ্রাসায় চাকরি করলে প্রতিদিনই গুনাহ হবে,  যেমন না চাইতেও অনেক পুরুষের দিকে চোখ পড়ে যায়, আল্লাহ তায়ালা তো একবার দুবার মাফ করবেন কিন্তু চাকরির দুহায় দিয়ে তো বারবার মাফ করবেন না। মাদ্রাসায় যদি চাকরি করি তবে বাসা থেকে মাদ্রাসায় যাওয়ার রাস্তায় ও তো পুরুষ থাকবে তখন ১০০% অন্য পুরুষের দিকে আমার চোখ না চাইলেও যাবেই, আমি কতদিন নিজেকে কন্ট্রোল করবো? আমি তো আর ফেরেশতা না। এতে তো গুনাহ হবে, নজরের হেফাজত হবে না, চোখের জেনাহ হবে, এতে ইবাদতের স্বাদ ও চলে যাবে। এতে কি আমার গুনাহ হবে, আমার গুনাহ হলে কি আম্মু আব্বু কেও এর জন্য শাস্তি পেতে হবে বা উনাদের ও গুনাহ হবে?
২। আমাকে দিয়ে চাকরি করাতো চাচ্ছে মুলত বাবার আর্থিক অবস্থার জন্য, ভালো কোনো বিয়ের প্রস্তাব আসার জন্য, কিন্তু সত্যি বলতে সত্যিকার দ্বীনদার ছেলেরা যারা পরিপূর্ণভাবে দ্বীন মেনে চলে তারা চাকরিজীবী মেয়েদের পছন্দ করে না সেটা খুব ভালো করেই জানি কিন্তু উনাদের বুঝাতে পারছি না। যদি বাবার আর্থিক অবস্থা খারাপ হয় অথবা ভালো যায়গা থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসার জন্য কি মেয়েকে বাইরে গিয়ে চাকরি করতে পিতামাতা বাধ্য করতে পারবে (যদিও সেটা মাদ্রাসা হয় যেখানে সহশিক্ষা নাই)?
আমি যদি পরিপূর্ণ দ্বীন মেনে চলি আমার উত্তম রিজিকের ব্যবস্থা তো আল্লাহ তায়ালাই করে দিবে। উপরোক্ত পরিস্থিতিতে আমি যদি চাকরি না করি তবে কি মা-বাবার কথা অমান্য করার কারণে আমার গুনাহ হবে? বা তারা কষ্ট পেয়ে অভিশাপ দিলে আমার উপর কোনো কাজ করবে? আমি তো শুধু আল্লাহর আদেশই মানতে চাচ্ছি, আল্লাহ তায়ালাই তো বলেছেন খুব প্রয়োজন ছাড়া মেয়েরা বাইরে যাবে না বা বাইরে গিয়ে ছেলেদের মতো কাজ করবে না, সেজন্যই তে চাকরি করতে চাচ্ছি না।
৩। একটা মেয়ে কিভাবে তার জীবন চালালে সে দুনিয়া এবং আখেরাত দু'দিকে শান্তি পাবে। ইসলামে নারীদের জীবন কিভাবে সাজাতে বলে।
৪। আমার মা-বাবা মোটামুটি আগপিছ করে দ্বীন মেনে চলার চেষ্টা করেন কিন্তু আমার বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্তেই তারা পশ্চিমাদের মতো সিদ্ধান্ত নেয়। অর্থাৎ পশ্চিমারা এদেশের মানুষের যেভাবে মাইন্ডসেট তৈরি করেছে সেভাবে সিদ্ধান্ত নেয় কিন্তু আমি চাই আমার প্রতিটি বিষয়েই যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে ইসলাম অনুযায়ী নিতে, রাসুলুল্লাহ সাঃ যেভাবে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছেন সেভাবে নিতে কিন্তু উনারা তেমন করে না, আগে দুনিয়া দেখে। আমি কিভাবে নসিহা করবো তাদের। মা-বাবার জন্য কোন দোয়াগুলো করলে তারা সঠিক দ্বীনের বুঝ পাবে এবং আমলও করবে, হেদায়েত ও পাবে অর্থাৎ তারা পরিপূর্ণভাবে নন-মাহরাম মানা সহ দ্বীনের সব কিছু মেনে চলবে। এমন আমলগুলো বলে দিয়েন যা করলে পিতামাতা হেদায়েত পাবে আমি করবো। মুমিন মাত্রই তো শুধু নিজে জান্নাতে যাবে না পরিবারসহ জান্নাতে জেতে চাইবে।
৫। আমি বাইরে গিয়ে ছেলেদের মতো চাকরি করলে ইসলাম থেকে আমার মন কিছুটা হলেও দূরে যাবে, দুনিয়ার চাকচিক্য আমার মনেও গেতে যাবে কিন্তু আমি এমনটা চাইনা। আমি না করার পরও মা-বাবা সহ খালারাও আমাকে কথা শুনচ্ছে। এসবে দিন দিন আমি মানসিক ট্রমায় চলে যাচ্ছি। এসবের জন্য ইবাদাতেও তেমন মন বসছে না, আমি অনলাইনে একটা কাজ করি তাতেও মন বসছে না, মন দিয়ে কাজ করতে পারছি না, কুরআন হিফজ করতাম সেটাতও মন বসাতে পারছি না। আগে গুনাহ করলে নাটক সিনেমা দেখলেও বাসায় কোনো সমস্যা হতো না এখন যেই পরিপূর্ণ দ্বীন মেনে চলতে চাচ্ছি ততই দুনিয়া আমার জন্য সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। প্রতি পদে বাধা পেতে হচ্ছে। IOM এর আলিম কোর্সে ভর্তি হতে চাচ্ছি কেননা এটাতে ভর্তি হলে দ্বীনের সকল জ্ঞানই পেয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ কিন্তু সেখানেও ভর্তি হতে পারছি না। আমাকে কিছু আমল বলে দিন যা করলে দ্বীন পালন আমার জন্য সহজ হবে, আমার ধৈর্য শক্তি বাড়বে ও আলিম কোর্সে যাতে ভর্তি হয়ে যেতে পারি, দ্রুত দোয়াগুলো কবুল হবে।


৬। জান্নাত পাওয়ার জন্য ও দুনিয়ায় একটু শান্তিপূর্ন জীবনের জন্য মেয়েদের উচ্চ শিক্ষা নেওয়া কতটা জরুরী?


ফরজ ইলম থাকলেই কি যথেষ্ট নয়। বাইরে শিক্ষা গ্রহণ না করে অনলাইনে দ্বীনি শিক্ষা নেওয়া কি যথেষ্ট নয়?
৭। ইসলামে নারীদের কতটুকু শিক্ষা নেওয়া জরুরী?


৮। মানুষ তো সবসময় একই থাকে না আগে দ্বীনের বুঝ ছিল না তাই পশ্চিমা ফ্যামিনিজদের মতো জীবনকে সাজাবো ভাবতাম, আল্লাহ তায়ালার রহমত যে আমাকে হেদায়েত দিয়েছন আমি আর হেদায়েত হারাতে চাইনা। মরে গেলে মা-বাবা ভাইবোন কোনো কাজেই আসবে না আমার গুনাহ আমাকেই বহন করতে হবে, অন্য জনের কারণে গুনাহ করে নিজের গুনাহের পাল্লা আর ভারি করতে চাই না। আমি চাচ্ছি আমার জীবন সাহাবিদের মতো করতে যদিও একটু সময় লাগবে, পুরোপুরি তাদের মতো পারবো না জানি তবুও চেষ্টা করে যাবো হয়তো এই চেষ্টাটুকুই আল্লাহ তায়ালা কবুল করে নিবেন। এজন্য কিভাবে গাইডলাইন নিবো, কোন বইগুলো পড়বো।
৯। পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে আমিও মাঝে মাঝে দিন ইসলাম থেকে কিছুটা হলেও দূরে সরে যাই তবে আবার ফিরে আসি। এটা থেকে কিভাবে ফিরে আসবো, কোন আমলগুলো করলে আমার ঈমান আরো বৃদ্ধি পাবে।
অনুগ্রহ করে প্রতিটি উত্তর একটু বিস্তারিত ভাবে দিয়েন আমি এটা আমার পরিবার কে দেখাবো ইনশাআল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)
ফ্রি মিক্সিং পরিবেশে তথা নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণস্থলে মহিলাদের জন্য চাকুরীর অনুমোদন নেই।মহিলারা সর্বদা ঘরেই থাকবে বা মহিলাদের জন্য পৃথক ব্যবস্থায় পরিচালিত কর্মক্ষেত্রে মহিলারা চাকুরী করতে পারবে। তবে নিরুপায় হলে অবশ্যই তাদের জন্য ফ্রি মিংক্সিং পরিবেশেও রুখসতের বিধান থাকবে। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/1105

(২)
একজন নারীর জন্য দ্বীনি পরিবেশে হলে চাকুরী করার সুযোগ থাকবে। ভালো পরিবার থেকে প্রস্তাব আসার জন্য মাদরাসায় দ্বীনি পরিবেশে চাকুরী করতে কোনো বাধা নেই। এক্ষেত্রে মাতাপিতার পরামর্শ গ্রহণ করাই উচিৎ।

(৩) একটা মেয়ে যদি পিতা মাতা ও পরবর্তীতে স্বামীর আদেশ নিষেধ মেনে চলে, পর্দার সাথে থাকে, স্বামীর মাল ও ইজ্জতের হেফাজত করে, তাহলে অবশ্যই সে  দুনিয়া এবং আখেরাত দু'দিকেই শান্তি পাবে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/87348

(৪) তাহাজ্জুদের নামায পড়ে খাস করে কায়মনোবাক্যে পিতামাতার জন্য দু'আ করবেন। হেকমত ও প্রজ্ঞার সাথে দু'আ করবেন।

(৫)  আপনি মাতাপিতার কথা অনুযায়ী দ্বীন শিখা ও শিখানোর নিমিত্বে মহিলা মাদরাসা জব নিতে পারেন।এতে কোনো সমস্যা হবে না।আপনি নিয়মিত তাহাজ্জুদ নামায পড়বেন।

+৬) দুনিয়ায় একটু শান্তিপূর্ন জীবনের জন্য মেয়েদের উচ্চ শিক্ষা নেওয়া জরুরী নয়। তাছাড়া ফ্রি মিক্সিং পরিবেশে হলে তো জায়েযই হবে না।

ফরজ ইলম থাকলেই যথেষ্ট হবে। বাইরে শিক্ষা গ্রহণ না করে অনলাইনে দ্বীনি শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

(৭) ইসলামে নারীদের শিক্ষা নেওয়ার ও প্রয়োজনিয়তা রয়েছে। বিশেষ করে একজন মহিলার জন্য ডাক্তার হওয়া অতীব জরুরী।

(৮) সাহাবিদের জীবনী পড়বেন। দ্বীনি কিতাবাদি বেশী করে পড়বেন। তাহাজ্জুদের নামায পড়বেন।

(৯) নেককার কাউকে শিক্ষক/ বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে নিতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...