بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
https://ifatwa.info/7316/ নং
ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,
গীবত করা কবীরা গোনাহ। এটি হারাম। তাই এটি শোনাও
হারাম। কারণ যে কাজ করা হারাম। সে কাজ করতে সহযোগিতা করাও হারাম।
কারণ যে শুনছে, সে যদি না শুনতো,
তাহলে গীবতকারী গীবত করতে
পারে না। যদি যে শ্রোতা সে যদি বাঁধা দেয়,
তাহলে গীবতকারী গীবত করতে
পারে না। তাহলে শ্রোতা শোনার দ্বারা গীবতকারীকে গীবতের মত কবীরা গোনাহ করতে সহযোগিতা
করছে। আর গোনাহের সহযোগিতা করাও নিষিদ্ধ। তাই উভয় কাজই নিষিদ্ধ ও হারাম।
وَلَا
يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا ۚ أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ
مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَّحِيمٌ
[٤٩:١٢]
তোমাদের কেউ যেন কারও
পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তার মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুতঃ তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ
তওবা কবুলকারী,পরম দয়ালু। [সূরা হুজুরাত-১২}
وَتَعَاوَنُوا
عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ
ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢]
সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে
একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে
ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। [সূরা মায়িদা-২]
وَإِذَا
رَأَيْتَ الَّذِينَ يَخُوضُونَ فِي آيَاتِنَا فَأَعْرِضْ عَنْهُمْ حَتَّىٰ
يَخُوضُوا فِي حَدِيثٍ غَيْرِهِ ۚ وَإِمَّا يُنسِيَنَّكَ الشَّيْطَانُ فَلَا
تَقْعُدْ بَعْدَ الذِّكْرَىٰ مَعَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ [٦:٦٨]
যখন আপনি তাদেরকে দেখেন, যারা আমার আয়াত সমূহে ছিদ্রান্বেষণ করে, তখন তাদের কাছ থেকে সরে যান যে পর্যন্ত তারা অন্য কথায় প্রবৃত্ত
না হয়,যদি শয়তান আপনাকে ভূলিয়ে দেয় তবে স্মরণ হওয়ার পর জালেমদের সাথে
উপবেশন করবেন না। [সূরা আল আনআম-৬৮]
ছয়টি কারণে গীবত করা জায়েজ
আছে। যথা-
১- জুলুম থেকে নিচে বাঁচতে, অন্যকে বাঁচাতে। এমন ব্যক্তির কাছে গীবত করতে পারবে, যে একে প্রতিহত করতে পারবে।
২- খারাপ কাজ বন্ধ করার
জন্য সাহায্য চাইতে এমন ব্যক্তির কাছে গীবত করতে পারবে যে তা বন্ধ করার ক্ষমতা রাখে।
৩- বিষয়টি সম্পর্কে শরয়ী
সমাধান জানতে গীবত করে মূল বিষয় উপস্থাপন করা জায়েজ আছে। যেমন বলা যে, আমাকে অমুক ব্যক্তি আমার উপর জুলুম করেছে, তাই আমারও কি তাকে আঘাত করা জায়েজ আছে? ইত্যাদি
৪- সাধারণ মুসলমানদের
দ্বীনী ও দুনিয়াবী ধোঁকা ও খারাবী থেকে বাঁচাতে গীবত করা জায়েজ। যেমন সাক্ষ্য সম্পর্কে, হাদীস, আসার ও ইতিহাস বর্ণনাকারী
সম্পর্কে, লেখক, বক্তা ইত্যাদি সম্পর্কে
দোষ জনসম্মুখে বলে দেয়া, যেন তার ধোঁকা ও মিথ্যাচার
থেকে মানুষ বাঁচতে পারে।
৫- প্রাকাশ্যে যদি কেউ
শরীয়তগর্হিত করে, তাহলে তার খারাবী বর্ণনা
করা এমন ব্যক্তির কাছে যারা এর দ্বারা বিভ্রান্ত হওয়া থেকে বাঁচতে পারে। যেমন কেউ প্রকাশ্যে
মদ খায়, তাহলে মানুষের সামনে তার সরাসরি বদনাম করা জায়েজ আছে। যেন এমন
খারাপ কাজ করতে ভবিষ্যতে কেউ সাহস না করে।
৬- কারো পরিচয় প্রকাশ
করতে। যেমন কেউ কানা। তার পরিচয় দেয়া দরকার। কিন্তু নাম কেউ চিনতেছে না। কিন্তু কানা
বলতেই সবাই চিনে ফেলে। তখন কানা বলা বাহ্যিক দৃষ্টিতে গীবত হলেও এটা বলা জায়েজ আছে।
এতে গীবতের গোনাহ হবে না। {তাফসীরে রুহুল মাআনী-
১৪/২৪২, সূরা হুজরাত-১২}
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন !
১. আপনার উক্ত চিন্তাভাবনা গীবতের আওতাধীন হবে না। তবে সদা সর্বদা
মনের মধ্যে লোকদের সম্পর্কে পজেটিভ ধারণা রাখবেন। কারণ, কারো কোনো ত্রুটি নিয়ে নিজের
মনের মধ্যে সমালোচনা করা যদিও গীবত না তবে এটা একটা অনর্থক কাজ। বরং মু'মিন সর্বদা নিজেকে
বেহুদা অনর্থক কাজ থেকে দূরে রাখবে।
২. উপরে উল্লেখিত ছয়টি সুরত ছাড়া কোন অবস্থাতেই
কারো পরনিন্দা করা বা সমালোচনা করা গীবতের অন্তর্ভুক্ত, যা পরিহার করা আবশ্যক।