দরুদে তুনাজ্জিনা সহ আহাদ নামা, দরূদে লাকী, গঞ্জল আরশ,দরুদে তাজ, দরুদে হক্কানী, দরুদে ফুতুহাত, দরুদে রু‘ইয়াতে নবী ( ﷺ ), দরুদে শিফা, দরুদে খাইর, দরুদে আকবার, দরুদে লাখী, দরুদে হাজারী, দরুদে রূহী, দরুদে বীর, দরুদে নারীয়া, দরুদে শাফেয়ী, দরুদে গাওসিয়া, দরুদে মুহাম্মাদী,,
এগুলো কুরআন-হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়।বরং এসবই মানুষের তৈরী।এসব দরুদের অধিকাংশ বাক্যবলীতে অনেক ভাল এবং অনেক সুন্দর সুন্দর আলোচনা রয়েছে। সে হিসেবে এগুলো পড়ে নিলে সাধারণ দরুদ পাঠের ফযিলত অবশ্যই অর্জিত হয়ে যাবে।
তবে মনে রাখতে হবে এগুলো হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়।তাই এগুলোর পরিবর্তে হাদীসে বর্ণিত দরুদ গুলো পড়া-ই উত্তম।
★উপরোক্ত দুআ ও দরূদের কোন অস্তিত্ব কুরআন ও হাদীসের কোথাও নেই।
বাকি কিছু শব্দ কুরআন ও হাদীসে রয়েছে। আর কিছু বিষয় যার অর্থ সঠিক। কিন্তু কিছু কিছু কথা রয়েছে যা ইসলামী শরীয়তের মূলনীতি পরিপন্থী।
তাই এসব পড়া উচিত হবে না। হাদীসে বর্ণিত দুআ ও দরূদ পড়াই নিরাপদ।
বিস্তারিত
এসবকে সুন্নত মনে করা, দ্বীনের কাজ বলে মনে করা, জরুরি মনে করে করা, কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত পদ্ধতি মনে করা বিদআত।
রাসুল সাঃ বলেন-
وَإِيّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ، فَإِنّ كُلّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ، وَكُلّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ.
আর সকল নব উদ্ভাবিত বিষয় থেকে দূরে থাকবে। কারণ, সকল নব উদ্ভাবিত বিষয় বিদআত। আর সকল বিদআত গোমরাহী ও ভ্রষ্টতা।’ (দ্র. মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৭১৪২, ১৭১৪৫)
শরীয়তের দলীল দ্বারা প্রমাণিত নয় এমন কোনো জিনিসকে কেউ দ্বীন ও শরীয়ত বানিয়ে দিবে- এটা হতে পারে না।
কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ
‘(দ্বীনের নামে) নবউদ্ভাবিত সকল বিষয় থেকে দূরে থাক।’
আরেক হাদীসে আছে-
مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدّ .
‘যে আমাদের এই বিষয়ে (অর্থাৎ দ্বীন ও শরীয়তে) এমন কিছু উদ্ভাবন করবে, যা তার অংশ নয়, তা প্রত্যাখাত।’ -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৭১৮; সহীহ বুখারী, হাদীস ২৬৯৭
,
★উল্লেখ্য যে উল্লেখিত দরুদ গুলোতে যদি কুরআন সুন্নাহ বিরোধী কোনো বাক্য থাকে,তাহলে সেটা পড়া কোনো ছুরতেই জায়েজ হবেনা।
দরুদে নারীয়া হলো:
“اللهم صَلِّ صَلاةً كامِلَةً وسَلِّمْ سَلامًا تامًّا على سَيِّدنا محمدٍ الذي تَنْحَلُّ به العُقَدُ، وتَنْفَرِجُ به الكُرَبُ وتُقضى به الحوائجُ وتُنالُ به الرغائبُ وحُسْنُ الخواتِمِ ويُسْتسقى الغمامُ بوجهه الكريم، وعلى آله وصحبه في كل لمحة ونفس بعددِ كل معلوم لك”.
অর্থ: “হে আল্লাহ, পরিপূর্ণ রহমত ও পূর্ণ শান্তি বর্ষিত কর আমাদের সরদার মুহাম্মদের উপর, যার মাধ্যমে সমস্যাসমূহ সমাধান হয়, দুঃখ দুর্দশা তিরোহিত হয়, প্রয়োজনাদি মিটিয়ে দেওয়া হয়, পূণ্যাবলী ও সুন্দর শেষ পরিণাম অর্জিত হয়, তার পবিত্র চেহারা/সত্তার মাধ্যমে বৃষ্টি কামনা করা হয়। আর রহমত বর্ষণ কর তার পরিবার ও সাহাবিদের উপর তোমার জানা সংখ্যানুযায়ী, প্রতিটি মুহূর্তে ও নিঃশ্বাসে।”
দরুদে নারীয়া-তে যেহেতু কুরআন সুন্নাহ বিরোধী কোনো বাক্য নেই,অর্থ ভালো,সুতরাং উক্ত দরুদ আবশ্যকীয় মনে না করে পাঠ করা যাবে।
তবে এটিকে সুন্নত মনে করা, দ্বীনের কাজ বলে মনে করা, জরুরি মনে করে করা, কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত পদ্ধতি মনে করা হলে তাহা পাঠ করা বিদআত হবে।