বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
যে মাযহাব বা আলিমের কথা অনুযায়ী আপনি আ’মল করে যাচ্ছেন,সেই আ’মল প্রশ্নবিদ্ধ হলে এবং এর স্বপক্ষে কোনো সহীহ দলীল-প্রমাণ না থাকলে, তখন যা সহীহ হবে, সেটার উপরই আপনি আ’মল করে যাবেন,যদি আপনি সহীহ গলদ বুঝতে সক্ষম হন।
সাধারণত লোকেরা সহীহ এবং ভুল ও অশুদ্ধ সম্পর্কে তেমন জানে না।তাই তাদের জন্য যেকোনো একটি মাযহাবকে অনুসরণ করা ওয়াজিব।
বড় চারটি মাযহাবের যেকোনো একটি মাযহাবকে অনুসরণ করা প্রত্যেক মানুষের উপর ওয়াজিব।তখন আর সহীহ বা ভূল যাচাই বাচাই করা নিজের উপর আসবে না। বরং মুজতাহিদ যা বলে গেছেন বা লিখে গেছেন,সেটার উপরই আ'মল করা হবে।উলামায়ে কেরামের ইজমা রয়েছে যে,মুজতাহিদ ভুল করলেও আল্লাহর কাছে সওয়াব পাবেন।এবং উনার অনুসারীদের কোনো প্রকার গোনাহ হবে না।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
চার মাযহাবের মধ্যে যে কোনো একটি সম্পূর্ণরূপে মানা ওয়াজিব।
মুজতাহিদ ফিল মাযহাব তথা যিনি নিজে নিজে সরাসরি কুরআন-হাদীস থেকে শরীয়ত বুঝার ক্ষমতা রাখেন।
অর্থাৎ যিনি নিম্নোক্ত পাঁচটি বিষয়ে যথেষ্ট পারদর্শী থাকবেন।(১) তাফসীর(২)হাদীস ও হাদীসের রাবী(৩)আরবী ভাষা(৪)সালাফে সালেহীনদের বর্ণনাকৃত মাসাঈল ও তাদের মন্তব্য সমূহ।(৫)এবং কুরআন-হাদীস থেকে কিয়াস করে হুকুম বের করা যোগ্যতা।
উপরোক্ত বিষয়ে পারদর্শী কোনো ব্যক্তির জন্য তাকলীদে শাখসীর কোনো প্রয়োজন নেই।উনার কাছে নিজ ইমামের বিপরিত কোনো একটি দিক কুরআন-সুন্নাহর অধিক নিকটবর্তী প্রমাণিত হলে, উনি সেটার উপরই আ'মল করবেন। এমনকি তখন উনার জন্য নিজ ইমামের অনুসরণ বৈধ হবে না।(মাযহাব কি ও কেন দ্রষ্টব্য)
এছাড়া অন্য সবার জন্য নিজ ইমামের প্রত্যেকটি মতামতকে মান্য করা ওয়াজিব।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
দ্বীনে ইসলাম তথা শরীয়ত হলো,কুরআন এবং হাদীসের সমষ্টির নাম।প্রতমত কুরআন এবং হাদীস আরবী। দ্বিতীয়ত আরবী বাগধারা অনেক কঠিন ও একই বাক্য বহুঅর্থের বাহক হওয়ার দরুণ কুরআন এবং হাদীসের সুস্পষ্ট ব্যখ্যা প্রয়োজন।তাছাড়া নাসিখ মানসূখ পরিচয় লাভ করাও একটা জটিল বিষয়।ইত্যাদি ইত্যাদি।সুতরাং এ সব অস্পষ্টতাকে স্পষ্টকরে যে ব্যখ্যা প্রদান করা হয়,মূলত সেটার নামই হল মাযহাব।যেহেতু অস্পষ্টতাকে দূর করে স্পষ্ট ব্যখ্যা করতে যেয়ে উলামাদের মধ্যে মতবিরোধ হয়েছে,তাই ভিন্ন ভিন্ন মাযহাবের সৃষ্টি হয়েছে।