আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
27 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (8 points)
১) আমি স্বপ্নে আমার মৃত মামিকে দেখতে পাই। উনাকে মাছের মাথা দিয়ে ভাত খেতে দেওয়া হয়েছিল আর আমাকে দেখে শুধু বলে এই বাসা (আমার মায়ের বাসা)  থেকে বের হয়ে যা আর পাথর নিক্ষেপ করতেছিল । এটার ব্যাখ্যা কি হবে?
২) আমি অতীতে এমন কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করেছিলাম যিনি এখন মৃত। এ অবস্থায় আমি কিভাবে দোয়া করলে মাফ পেতে পারি??
৩) কেউ তার বাবা- মায়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করলে পরে অনুতপ্ত হয়ে তাদের কাছে মাফ চাইলে তারা মুখে বলে মাফ করে দিয়েছি। এতে কি সত্যি মাফ পাওয়া যায়?   খারাপ ব্যবহারের জন্য কি আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে?
৪) ওয়াসওয়াসা বা সন্দেহ হলে তা উপেক্ষা করে চলার কথা আল্লাহ বলেছেন। এখানে ওয়াসওয়াসা বা সন্দেহ হচ্ছে হয়তো এই ওয়াসওয়াসা বা সন্দেহ টা সত্যি নতুবা শয়তানের কু- প্ররোচনা। এখন কেউ যদি সঠিকভাবে বলতে না পারে যে এটা ওয়াসওয়াসা নাকি সত্যি তাহলে কি করনীয়? সন্দেহ বা ওয়াসওয়াসা ভেবে যদি এটাকে উপেক্ষা করা হয় কিন্তু সেটা যদি সত্যি হয় তাহলে এর বিধান কি হবে?
বিঃদ্রঃ আমার এই সন্দেহ টা হুরমত মুসাহারাত নিয়ে
দয়া করে উত্তর গুলো দিবেন ইনশাআল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (61,200 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব:-

https://ifatwa.info/108728/  নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার।

১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।

২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে।

তবে শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।

ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়।

৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الرُّؤْيَا الْحَسَنَةُ مِنَ الرَّجُلِ الصَّالِحِ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ ".

আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নেককার লোকের ভাল স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ। (বুখারী শরীফ ৬৫১২)

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى ـ هُوَ ابْنُ سَعِيدٍ ـ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الرُّؤْيَا مِنَ اللَّهِ، وَالْحُلْمُ مِنَ الشَّيْطَانِ ".

আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) ... আবূ কাতাদা (রাঃ) সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে আর অশুভ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। (৬৫১৩)

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي ابْنُ الْهَادِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خَبَّابٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ رُؤْيَا يُحِبُّهَا فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ اللَّهِ، فَلْيَحْمَدِ اللَّهَ عَلَيْهَا، وَلْيُحَدِّثْ بِهَا، وَإِذَا رَأَى غَيْرَ ذَلِكَ مِمَّا يَكْرَهُ، فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَلْيَسْتَعِذْ مِنْ شَرِّهَا، وَلاَ يَذْكُرْهَا لأَحَدٍ، فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّهُ ".

আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, যখন তোমাদের কেউ এমন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে, তাহলে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর উপর আল্লাহর প্রশংসা করে এবং অন্যের কাছে তা বর্ণনা করে। আর যদি এর বিপরীত অপছন্দনীয় কিছু দেখে, তাহলে তা শয়তানের পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর অনিষ্টতা থেকে আল্লাহর আশ্রয় চায়। আর কারো কাছে যেন তা বর্ণনা না করে। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি সাধন করবে না। (বুখারী শরীফ ৬৫১৪)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১.  প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি উক্ত স্বপ্ন কাহারো কাছে বলবেন না। যদি স্বপ্নটির মধ্যে কোন কল্যাণ থাকে তাহলে আল্লাহর কাছে তা প্রাপ্তির জন্য দোয়া করবেন এবং উক্ত স্বপ্নে কোন অনিষ্টতা থাকলে তা থেকে পানাহ চাইবেন। উক্ত স্বপ্নের বিষয়ে অহেতুক বিচলিত না হওয়া উচিত।

 সেই সাথে আপনার নেক আমল বাড়িয়ে দিতে হবে, দ্বীনদার নারীদের সাথে উঠাবসা করতে হবে, পবিত্র হালতে থাকতে হবে, অহংকার থেকে বেঁচে থাকতে হবে। বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত, যিকির আযকার, ফরজসহ নফল নামাজ পড়তে হবে। সাধ্যানুযায়ী দান ছদাকাহ করতে হবে। আরো জানুন :-  https://ifatwa.info/100414/?show=100414#q100414

২. কোন মৃত ব্যক্তির সাথে তার জীবদ্দশায় যদি কেউ খারাপ আচরণ করে ফেলে, তাহলে সে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবে, ঐ ব্যক্তির রুহের মাগফিরাতের জন্য দোয়া করবে এবং সাধ্যানুযায়ী ঐ ব্যক্তির নামে দান সদকাহ করে নিবে। উপরোক্ত কাজগুলো করলে আশা করা যায় আল্লাহ তায়ালা মাফ করবেন ইনশাআল্লাহ।

৩. মাতাপিতার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। এবং খালিছ নিয়তে আল্লাহর কাছে তাওবাহ করতে হবে। আল্লাহ রাজি আর খুশি হয়ে গেলে, তারাও অবশ্যই ক্ষমা করে দিবেন। মাতাপিতার সাথে সর্বদা উত্তম আচরণ করতে হবে। কখনো তাদের সাথে রাগ করা যাবে না।  মনে রাখবেন,মাতাপিতার বদ-দু'আ সন্তানের জন্য কাল হয়ে দাড়ায়।কিছু দু'আ আল্লাহ সাথে সাথেই কবুল করে নেন, এর মধ্যে একটি দু'আ হল,মাতাপিতার দু'আ। সুতরাং নিজের ভবিষ্যত জীবনকে নিরাপদ রাখার স্বার্থে মাতাপিতার সন্তুষ্টি অর্জন একান্ত জরুরী ও কাম্য।

মায়ের বদ-দু'আর কারণে জুরাইজ নামাক একজন ওলীকে আল্লাহ অপবাদে আরোপিত করেছিলেন।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1855

৪. এসম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন:- https://ifatwa.info/5138/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...