জবাব,
بسم الله الرحمن الرحيم
https://ifatwa.info/67258/
নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, হজ্ব ফরজ হয় দৈনন্দিন খরচ বাদে হজ্বে আবশ্যকীয় প্রয়োজনে
যে পরিমাণ টাকা প্রয়োজন তথা যাওয়া আসা, সেখানে থাকা খাওয়া ইত্যাদি পরিমাণ টাকা থাকলে
ব্যক্তির উপর হজ্ব করা ফরজ হয়ে থাকে।
সে হিসেবে দেখতে হবে বর্তমানে হজ্ব করতে গেলে কত টাকা লাগবে। সে
টাকা উক্ত ব্যক্তির কাছে থাকলে তার উপর হজ্ব করা আবশ্যক।
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআন শরিফে এরশাদ করেনঃ
ولله على الناس حج البيت من استطاع اليه سبيلا، ومن كفر فان الله غنى عن العلمين.
(তরজমা) মানুষের মধ্যে যারা
সেখানে (বায়তুল্লাহ) পৌঁছার সামর্থ্য রাখে তাদের উপর আল্লাহরউদ্দেশ্যে এ গৃহের হজ্ব
করা ফরয। আর কেউ যদি অস্বীকার করে তাহলে তোমাদের জেনে রাখা উচিতযে, আল্লাহ তাআলা সৃষ্টিজগতের
প্রতি মুখাপেক্ষী নন।-সূরা আলে ইমরান (৩) : ৯৭
★ফাতওয়ার কিতাবে এসেছেঃ
যার মালিকানায় নিত্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র এবং নিজের ও পরিবারের ভরণ-পোষণের
খরচের অতিরিক্ত এই পরিমাণ টাকা-পয়সা বা সম্পত্তি আছে, যা দ্বারা হজ্জে যাওয়া-আসার ব্যয়
এবং হজ্জকালীন সাংসারিক খরচ হয়ে যায়, তার উপর হজ্জ করা ফরয। (আদ্দুরুল মুখতার মা‘আ রদ্দিল মুহতার ২/৪৫৮)
হজ্জ যে বছর ফরয হয় সে বছরই তা আদায় করা ওয়াজিব। গ্রহণযোগ্য কোনো
ওযর ছাড়া হজ্জ বিলম্বিত করলে গুনাহ হবে। তবে পরবর্তীতে হজ্জ আদায় করে নিলে এই গুনাহ
মাফ হয়ে যাবে। (রদ্দুল মুহতার ৩/৫১৭ রশীদিয়া, কিতাবুল মাসাইল ৩/৭৬)
মহিলাদের উপর হজ্বঃ দৈনন্দিন খরচ বাদে হজ্বে আবশ্যকীয় প্রয়োজনে যে
পরিমাণ টাকা প্রয়োজন তথা যাওয়া আসা, সেখানে থাকা খাওয়া ইত্যাদি পরিমাণ টাকা থাকলে এবং
সফর সঙ্গি হিসেবে স্বামী বা মাহরাম কেউ থাকলে ঐ মহিলার উপর হজ্ব করা ফরজ হয়ে থাকে।
বাড়ির বানানোর জন্য টাকা জমালে সেই টাকার উপর হজ্জ ফরজ হবে কিনা,
মাসয়ালাটি নির্ভর করে বাড়ি বানানো তার উপর আবশ্যক কিনা, তার উপর। যদি তাদের নিজ জায়গায়
ভালোভাবে থাকার মতো বাসা বানানো না থাকে,সেক্ষেত্রে তার উপর হজ্জ ফরজ হবেনা।
হ্যাঁ যদি তাদের নিজ জায়গায় ভালোভাবে থাকার মতো বাসা বানানো থাকে,তাহলে
তার উপর হজ্জ ফরজ হবে।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে নিজে ও পরিবার-পরিজনের
বসবাসের ব্যবস্থা থাকা হাজতে আসলিয়া অর্থাৎ ব্যক্তির মৌলিক প্রয়োজনের অন্তর্ভুক্ত।
এই প্রয়োজন ভাড়া বাসার দ্বারাও পূর্ণ হতে পারে। নিজের মালিকানাধীন হওয়া জরুরি নয়।
সুতরাং যার জন্য ভাড়া বাড়িতে থাকার সুব্যবস্থা
আছে তার জন্য নিজস্ব বাড়ি বানানো মৌলিক প্রয়োজনের অন্তর্ভুক্ত নয়। কেননা ভাড়া বাসা
দ্বারা তো তার বসবাসের প্রয়োজন পূর্ণ হয়েই যাচ্ছে।
অতএব এমন ব্যক্তি যদি বাড়ি বানানোর নিয়তে
টাকা জমা করে যা দিয়ে তার হজ্বের খরচ হয়ে যাবে তাহলে নির্ভরযোগ্য মত অনুযায়ী এ টাকার
কারণে তার উপর হজ্ব ফরয হয়ে যাবে। তাই হজ্বের মৌসুমে এ টাকা দিয়ে হজ্ব করা তার জন্য
আবশ্যক হয়ে যাবে। তবে হজ্বের মৌসুম আসার আগেই যদি ঐ টাকা বাড়ি বানানো বা অন্য কোনো
প্রয়োজনে খরচ করে ফেলে এবং তার কাছে হজ্ব করার মতো আর টাকা না থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে
তার উপর হজ্ব ফরয হবে না।
পক্ষান্তরে যে ব্যক্তির বসবাসের জন্য ভাড়া
বাসারও ব্যবস্থা নেই এবং বসবাসের প্রয়োজন পূরণের জন্যই তাকে বাড়ি বানাতে হবে তার
জন্য নিজস্ব বাড়ি মৌলিক প্রয়োজনের অন্তর্ভুক্ত। এমন ব্যক্তি যদি বাড়ি বানানোর জন্য
টাকা জমা করে এবং হজ্বের মৌসুম আসার পর তার কাছে এ পরিমাণ টাকা থাকে, যা দিয়ে হজ্ব
করলে বাড়ি বানানো যাবে না তাহলে তার উপর ঐ টাকার কারণে হজ্ব ফরয হবে না। (গুনইয়াতুন
নাসিক ২০; মানাসিক ৪৪; আলবাহরুল আমীক ১/৩৮২; মিনহাতুল খালিক ২/৩১৩) (আংশিক সংগৃহিত)