আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
33 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম।
(১)কেউ একজন কুফুরি কিছু বলেছে বা করেছে  কিনা এই সন্দেহে ছিল তাই সতর্কতা বশত সে ইসলাম গ্রহণ করেছে।কিন্তু সে ভাবছে তার ইসলাম গ্রহনের পদ্ধতি ভুল হলো কিনা। সে তিনটি নিয়তে ফরজ গোসল করেছে, ১) হায়েজ  ২) জানাবাত, ৩)ইসলাম গ্রহণ করার জন্য। তারপর সে শাহাদাহ পাঠ করেছে। কিন্তু একটা ফাতওয়াতে দেখল, কোনো  মুরতাদ যদি ইসলাম গ্রহণ করতে চায় তাহলে  তাকে প্রথমেই শাহাদাহ্‌ পাঠ করতে হবে। তাহলে সে যে গোসল করেছিল শাহাদাহ্‌ পাঠ করার আগে সেটি আল্লাহ্‌র কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি? যেহেতু সাহাদাহ পাঠ করার আগ পর্যন্ত সে অমুসলিম ছিল? তাকে কি আবার ফরজ গোসল করতে হবে জানাবাত এবং হায়েজের জন্য? নাকি সে আবার শাহাদাহ্‌ পাঠ করবে।

(২) সে আবার কোনো কুফুরি চিন্তাভাবনা করেছে (তার সঠিক মনে নেই করেছে কিনা), সে মনে মনে বলেছিল  "আমি তো কাফির হয়ে গেছি অথবা আমি কাফির হয়ে যাইনি তো?" এই টাইপের কিছু একটা, সে এগুলো মুখে ফিস ফিস করে বা আস্তে আস্তে অল্প আওয়াজে উচ্চারণ করেছে কিনা তার মনে পড়ছেনা। তবে সে মনে মনে কিছু একটা বলেছে নিশ্চিত।

(৩) কেউ যদি কিছু একটা ভাবতে ভাবতে বলে ফেলে যে সে নাস্তিক তাহলে কি কাফির হয়ে যাবে?

(৪) এটা অবচেতন মনে ভাবে যে ইসলামের এই বিধান টা এরকম না হয়ে অন্যরকম হলে ভালো হতো তারপর সচেতন মনে তাওবাহ করে তাহলে তাওবাহ যথেষ্ট নাকি শাহাদাহ্‌ পড়ে ঈমান নবায়ন করতে হবে?

(৫) কেউ যদি নিজেকে মুরতাদ হয়ে গেছে কিনা সন্দেহ করে তারপর সালাত আদায় করে এটা ভেবে যে সে মুরতাদ হয়ে গেছে কিনা জানেনা তবে মুরতাদ না হয়ে থাকলে সালাত হয়ে গেল আর মুরতাদ হলে পূণরায় ইসলাম গ্রহণ করবে এবং পরে জানতে পারে যে সে মুরতাদ হয়নি তাহলে কি তার উক্ত সালাত কবুল হবে

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)

ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকা-তুহু।

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।

জবাবঃ

হাদিস শরীফে এসেছে-

[عن أبي هريرة:] جدِّدوا إيمانَكم قالوا يا رسولَ اللَّهِ فكيفَ نجدِّدُ إيمانَنا قالَ جدِّدوا إيمانَكم بقولِ لا إلهَ إلّا اللَّهُ - مجمع الزوائد ٢/٢١٤

মর্মার্থ: রাসূল সা. বলেন: তোমরা তোমাদের ঈমানকে নবায়ন করো। তখন সাহাবায়ে কেরাম রা. বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কিভাবে আমাদের ঈমানকে নবায়ন করে নিবো? রাসূল সা. বললেন, তোমরা لا إلهَ إلّا اللَّهُ বলার মাধ্যমে ঈমানকে নবায়ন করে নাও।


https://ifatwa.info/5905/  নং ফাতওয়াতে আমরা বলেছি যে,

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ

وَمَنْ يَرْتَدِدْ مِنْكُمْ عَنْ دِينِهِ فَيَمُتْ وَهُوَ كَافِرٌ فَأُولَئِكَ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ فِي الدُّنْيَا وَالْآَخِرَةِ وَأُولَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ

আর তোমাদের মধ্যে কেউ যদি নিজের ধর্ম থেকে ফিরে যায়। আর সে অবিশ্বাসী অবস্থায় মারা যায়, তাহলে দুনিয়া ও আখেরাতে তাদের সকল নেক আমল বরবাদ হয়ে যাবে। এই লোকেরাই হল জাহান্নামের অধিবাসী, তারা চিরকাল সেখানে থাকবে। (বাকারা ২ : ২১৭)


সুতরাং যে ব্যাক্তি কোনোভাবে ইসলাম ত্যাগ করে, তাকে ইসলাম গ্রহন করতে হবে।

পরিপূর্ণ ইসলামে প্রবেশ করতে হবে।  

ইরশাদ হয়েছে-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا ادْخُلُوا فِي السِّلْمِ كَافَّةً وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُبِينٌ

তোমরা যারা ঈমান এনেছ, তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর। আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ (বাকারা ২ : ২০৮)


ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীতে আছেঃ

 واسلامه أي المرتد أن يأتي   بكلمة  الشهادة ويتبرأ عن الأديان كلها سوي  الإسلام وأن  يتبرأ عما انتقل  إليه

যার সারমর্ম হলো প্রথমেই মুরতাদ ব্যক্তিকে  কালেমায়ে শাহাদাত পাঠ করতে হবে, তারপর ইসলাম ধর্মকে অন্যান্য ধর্মের উপর প্রাধান্য দিতে    হবে, তারপর তাকে পূর্বের মতবিশ্বাস, কাজকর্ম থেকে ফিরে আসতে  হবে। (ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী ২/২৫৩ মাতবুয়ায়ে মাজিদাহ কোয়েটাহ)     


শরীয়তের বিধান অনুযায়ী কোনো মুরতাদ ব্যক্তি যদি ইসলাম গ্রহন করতে চায় তাহলে তাকে প্রথমে কালেমায়ে শাহাদাত পড়তে হবে।

أشهد أن لا إله الا الله  وأشهد أن محمدا عبده ورسوله

অর্থাৎ তাকে বলতে হবে যে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ, মাবুদ নেই,আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মাদ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তায়ালার বান্দা এবং তার রাসুল।


অতঃপর ইসলাম ব্যতিত অন্য ধর্ম বাতিল বলে তাকে ফিরে আসতে হবে। অতঃপর তাকে তওবা করতে হবে যে আমার পূর্বের যাবতীয় কর্মকান্ড থেকে মহান আল্লাহর কাছে তওবা করিতেছি। আমি লজ্জিত অনুতপ্ত, আমি আর কোনো দিন এহেন কাজ করিবোনা, এহেন বিশ্বাস স্থাপন করিবোনা। (তারপর থেকে ইসলাম ধর্মের যাবতীয় বিধান তাকে মনেপ্রানে,কাজেকর্মে মানতে হবে।) এর পর থেকে তাকে মুসলমান হিসেবে গন্য করা হবে। (ফাতাওয়ায়ে খতমে নবুয়্যত ১/৩০০)


মুরতাদ ব্যক্তি কিভাবে ইসলাম গ্রহন করবে জানুনঃ

https://ifatwa.info/2601/


তওবার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ

https://ifatwa.info/5905/


হ্যাঁ, নিজে নিজেই ঈমান নবায়ন করলে হবে। কালেমা পড়ার মাধ্যমে ঈমান নবায়ন করবে। আর শরীয়তের বিধান অনুযায়ী কোনো মুরতাদ ব্যক্তি যদি ইসলাম গ্রহন করতে চায় তাহলে তাকে প্রথমে কালেমায়ে শাহাদাত পড়তে হবে।

أشهد أن لا إله الا الله  وأشهد أن محمدا عبده ورسوله

অর্থাৎ তাকে বলতে হবে যে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ, মাবুদ নেই, আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তায়ালার বান্দা এবং তার রাসুল।


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!


১. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে শাহাদাত পাঠ হয়েছে গিয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। নতুন করে আর পাঠ করা আবশ্যক নয়। তবে তারপরও তিনি পাঠ করতে পারেন। এতে কোনো সমস্যা নেই।

২. সতর্কতা মূলক কালেমায়ে শাহাদাত পাঠ করতে পারেন।

৩. এটা কেন বলেছে? বিস্তারিত জানা প্রয়োজন। যদি মুখ ফসকে এমনি বের হয়ে যায় তাহলে কোনো সমস্যা নেই ইনশাআল্লাহ।

৪. সতর্কতা মূলক কালেমায়ে শাহাদাত পাঠ করতে পারেন।

৫. সতর্কতা মূলক কালেমায়ে শাহাদাত পাঠ করে নিবেন এবং উক্ত সালাত আবার কাযা আদায় করে নিবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...