ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া
রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম
জবাব:-
https://ifatwa.info/34599/ নং
ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,
শর্তের মাধ্যমে
তালাক প্রদাণের জন্য নিম্নোক্ত হরফ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।যথা-
(১)إنْ-যদি
(২)َإِذَا-যখন
(৩)َإِذْمَا-যখন
(৪)َكُلُّ-সব
(৫)َكُلَّمَا-যখনই
(৬)مَتَى-যখন
(৭)مَتَى مَا-যখন
বাক্যর প্রারম্ভে
এ সকল শব্দ প্রয়োগ করে কোনো কাজের সাথে সম্পর্কিত করে তালাক প্রদাণ করলে যখনি উক্ত
শর্ত পাওয়া যাবে,তখন তাৎক্ষণাৎ তালাক
পতিত হয়ে উক্ত শর্তযুক্ত বাক্য বিনষ্ট হয়ে যাবে।পরবর্তীতে একাজের পূনরাবৃত্তি ঘটলে
আর তালাক পতিত হবে না।তবে শুধুমাত্র ৫ নং বাক্য এর বিপরিত।এটা ব্যবহার করলে যখনই শর্ত
পাওয়া যাবে তখনই তালাক পতিত হতে থাকবে।যতক্ষণ না উক্ত বিয়ে বন্ধন শেষ হচ্ছে।শরীয়া মোতাবেক
দ্বিতীয়বার উক্ত স্বামী উক্ত স্ত্রীকে বিয়ে করলে তখন আর তালাক পতিত হবে না।(ফাতাওয়ায়ে
হিন্দিয়া-১/৪১৫) বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1237
https://www.ifatwa.info/1049 নং ফাতাওয়ায় বলা হয়েছে যে,
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায়
বর্ণিত রয়েছে,
وفي حالة
الغضب يصدق في جميع ذلك لاحتمال الرد والسب إلا فيما يصلح للطلاق ولا يصلح للرد
والشتم كقوله اعتدي واختاري وأمرك بيدك فإنه لا يصدق فيها كذا في
الهداية............... وفي الينابيع ألحق
أبو يوسف - رحمه الله تعالى - بالخمسة ستة أخرى وهي الأربعة المتقدمة وزاد خالعتك
والحقي بأهلك هكذا في غاية السروجي.
রাগের অবস্থাঃ-
রাগের অবস্থায়
স্বামী তালাকের নিয়তকে অস্বীকার করলে স্বামীর উক্ত বক্তব্য-কে সত্যায়ন করা হবে।কেননা
সেই শব্দ সমূহে গালিগালাজ ও স্ত্রীর তালাকের আবেদন-কে ফিরিয়ে দেয়ার অর্থ বিদ্যমান রয়েছে।
তবে যেই সমস্ত
শব্দাবলীতে শুধুমাত্র তালাকের অর্থ বিদ্যমান রয়েছে।গালিগালাজ বা (স্ত্রীর তালাকের আবেদন)
ফিরিয়ে দেয়ার অর্থ বিদ্যমান না থাকে,তাহলে সেই সমস্ত শব্দাবলীর বেলায় স্বামীর অস্বীকার-কে সত্যায়ন করা হবে না।বরং তালাক
পতিত হবে।
যেমন- তুমি
ইদ্দত গণনা করো,তুমি পছন্দ করো,তোমার বিষয় তোমার হাতে, ইত্যাদি।সুতরাং এমন শব্দাবলীর বেলায় স্বামীর অস্বীকারকে সত্যায়ন করা যাবে না,বরং তালাক পতিত হবে।(হেদায়া) ইমাম আবু ইউসুফ রাহ পূর্ববর্তী
পাঁচের সাথে আরো দুইটি শব্দ সংযোগ করেন,তখন সর্বমোট ছয়টি শব্দ হয়।সেই দুইটি হল,আমি তোমার সাথে খোলা করলাম,তুমি তোমার পরিবারবর্গের
সাথে মিলিত হয়ে যাও।(গায়াতুস-সুরুজী)) (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৫)
'গার্জিয়ানকে ডাকো, তোর আর সাথে সংসার
করবো না'
এরকম কথাবার্তা
কেনায়া তালাকের অন্তর্ভুক্ত। সুতরা এমন কথা স্বামী তালাকের নিয়তে বললে তালাকে বায়েন
বায়েন পতিত হবে।এক তালাকের নিয়ত থাকলে এক তালাক,আর তিন তালাকের নিয়ত থাকলে তিন তালাক পতিত হবে।আর ভয়প্রদর্শনের নিয়তে বললে অবশ্যই
তালাক পতিত হবে না(কিতাবুন-নাওয়াযিল-৯/৪৫১)
**শর্ত
সাপেক্ষে তালাকের বিধান হল, যদি তালাককে কোনো শর্তের সাথে যুক্ত করে, তাহলে শর্ত পাওয়ার পরেই তালাক পতিত হয়। আর শর্ত পাওয়া না গেলে তালাক হয় না। (আদ্দুররুল
মুখতার ৩/৩৪৪ আলবাহরুররায়েক ৪/৫ আলফাতাওয়াল হিন্দিয়া ১/৪২০ ফাতাওয়া মাহমুদিয়া ১৩/১০৭)
তবে যেহেতু
তালাকের পরিণতি খুবই ভয়াবহ হয় তাই প্রতিটি বিবেচক স্বামীর দায়িত্ব হল, তালাকের শব্দ কিংবা এর সমার্থক কোনো শব্দ মুখে উচ্চারণ করা থেকে
সতর্কতার সাথে বিরত থাকা। যখন তখন তালাকের বিষয় টেনে আনা মানে আল্লাহর বিধানের সঙ্গে
তামাশা করা। কেননা, তালাক-সংক্রান্ত আয়াতে
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَلا
تَتَّخِذُوا آيَاتِ اللَّهِ هُزُواً
আর আল্লাহর
নির্দেশকে হাস্যকর বিষয়ে পরিণত করো না। (সূরা বাকারা ২৩১)
★প্রশ্নকারী সম্মানিত দ্বীনি ভাই/বোন!
আপনার স্বামীর
কথা "তোমার সাথে থাকবো না" বলার দ্বারা যেহেতু তার তালাকের নিয়ত ইচ্ছা বা
ছিল না,
তাই তালাক পতিত হবে না।