আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
48 views
in হজ ও উমরা (Hajj and Umrah) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম ।আমার পরিবারে আমার মাহরাম বলতে  শুধুই বাবা এবং স্বামী।বাবা মা এবার হজ্জে যাবেন।সাম্নে আমার বাইতুল্লাহ যাওয়ার মত সুযোগ নাও আসতে পারে।আবার স্বামীও বলেছেন যে ,আমি চাইলে বাবা মা র সাথে হজ্জে যেতে পারি এবং স্বামীর সাথে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলে সে জানায় যে তার কখনো যাওয়া হবে কিনা সে নিশ্চিত না।এজন্যে এই সুযোগ মিস করা উচিত হবে না।

আমার ৫মাসের বাবু থাকবে তখন ব্রেস্টফিডিং। আমি যদি তাকে রেখে হজ্জ এ যাই তাহলে কি হজ্জ কবুল হবে?বাবু যে এইকয়দিন দুধ পাবেনা তার জন্যে আমি দুধ পাম্প করে রেখে যেতে চাচ্ছি।কিন্তু হজ্জের ওই ৪০দিন বাবু আমার থেকে দুধ না খেলে পরবর্তীতে আমার ব্রেস্টে দুধ আসা বন্ধ হতে পারে।সেক্ষেত্রে শরীয়াহ কি বলে?

আমি ইত্মধ্যে টাকাও দিয়েছি।অনুগ্রহ করে সহনশীলতার সাথে উত্তর দিলে ভালো হয়।

1 Answer

0 votes
by (573,810 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ  
{وَلِلَّهِ عَلَى النَّاسِ حَجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلاً وَمَنْ كَفَرَ فَإِنَّ اللَّهَ غَنِيٌّ عَنِ الْعَالَمِينَ}

মহান আল্লাহর বাণীঃ মানুষের উপর আল্লাহর জন্য বাইতুল্লাহর হাজ্জ করা ফরয যারা সেথায় যাওয়ার সামর্থ্য রাখে এবং কেউ প্রত্যাখ্যান করলে সে জেনে রাখুক আল্লাহ বিশ্বজগতের মুখাপেক্ষীহীন। (আলু ‘ইমরানঃ ৯৭)

দেড়ি করার দ্বারা অনেক সময় সেই হজটি আদায় না করেই মানুষ মারা যায়। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ   

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى الْقُطَعِيُّ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا هِلاَلُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، مَوْلَى رَبِيعَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ مُسْلِمٍ الْبَاهِلِيِّ حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَاقَ الْهَمْدَانِيُّ، عَنِ الْحَارِثِ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ مَلَكَ زَادًا وَرَاحِلَةً تُبَلِّغُهُ إِلَى بَيْتِ اللَّهِ وَلَمْ يَحُجَّ فَلاَ عَلَيْهِ أَنْ يَمُوتَ يَهُودِيًّا أَوْ نَصْرَانِيًّا وَذَلِكَ أَنَّ اللَّهَ يَقُولُ فِي كِتَابِهِ : (وَلِلَّهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلاً ) "

আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি আল্লাহ্ তা’আলার ঘর পর্যন্ত পৌছার মত সম্বল ও বাহনের অধিকারী হওয়ার পরও যদি হাজ্জ না করে তবে সে ইয়াহুদী হয়ে মারা যাক বা নাসারা হয়ে মারা যাক তাতে (আল্লাহ তা’আলার) কোন ভাবনা নেই। কারণ আল্লাহ তা’আলা তার কিতাবে বলেনঃ “মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাবার সামর্থ্য আছে, আল্লাহ্ তা’আলার উদ্দেশে ঐ ঘরের হাজ করা তার অবশ্য কর্তব্য”। (সূরাঃ আল-ইমরান - ৯৭)।

(তিরমিযী ৮১২, শু‘আবুল ঈমান ৩৬৯২,মিশকাত ২৫২১)

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، وَعَمْرُو بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ أَبُو إِسْرَائِيلَ، عَنْ فُضَيْلِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ الْفَضْلِ، - أَوْ أَحَدِهِمَا عَنِ الآخَرِ، - قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ أَرَادَ الْحَجَّ فَلْيَتَعَجَّلْ فَإِنَّهُ قَدْ يَمْرَضُ الْمَرِيضُ وَتَضِلُّ الضَّالَّةُ وَتَعْرِضُ الْحَاجَةُ " .

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে ফাদল (রাঃ) এর সূত্রে (অথবা পরস্পরের সূত্রে) বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি হজ্জের সংকল্প করে সে যেন অবিলম্বে তা আদায় করে। কারণ মানুষ কখনও অসুস্থ হয়ে যায়, কখনও প্রয়োজনীয় জিনিস বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং কখনও অপরিহার্য প্রয়োজন সামনে এসে যায়।

(আবূ দাউদ ১৭৩২ আহমাদ ১৮৩৬, ১৯৭৪, ২৯৬৬, ৩৩৩০, দারেমী ১৭৮৪, মিশকাত ৯৯০, ইরওয়া ৯৯০, সহিহ আবু দাউদ ১৫২২,ইবনে মাজাহ ২৮৮৩।) 

★যার ওপর হজ ফরজ হয়েছে সে যদি মৃত্যুর আগে যেকোনো বছর হজ আদায় করে, তবে তার ফরজ আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু হজের মৌলিক তাৎপর্য, যথার্থ দাবি ও আসল হুকুম হচ্ছে হজ ফরজ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আদায় করা। বিনা ওজরে বিলম্ব না করা।

কারণ যেকোনো সময় যেকোনো ধরনের বিপদ-আপদ, অসুখবিসুখের সম্মুখীন হওয়া বা মৃত্যুর ডাক এসে যাওয়া তো অস্বাভাবিক কিছু নয়। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘ফরজ হজ আদায়ে তোমরা বিলম্ব কোরো না। কারণ তোমাদের কারো জানা নেই তোমাদের পরবর্তী জীবনে কী ঘটবে।’ (মুসনাদ আহমদ, হাদিস : ২৮৬৭; সুনানে কুবরা বায়হাকি ৪/৩৪০)

একটি হাদিসে কুদসিতে আছে, আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি আমার বান্দার শরীরকে সুস্থ রাখলাম, তার রিজিক ও আয়-উপার্জনে প্রশস্ততা দান করলাম। পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও যদি সে আমার গৃহে হজের উদ্দেশ্যে আগমন না করে তবে সে হতভাগ্য, বঞ্চিত।

(ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৩৬৯৫; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদিস : ১০৩১)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
 এত ছোট শিশু যে এখনো মায়ের দুধ পান করছে তাকে রেখে হজে যাওয়া ঠিক নয়। তাকেও সাথে নিয়ে যাবেন। হজ্ব এজেন্সির সাথে আলোচনা করে শিশুটির যাওয়ার বিধান মনযুর করে নিবেন, এবং তার জন্য বিমানের টিকিটও নিয়ে নিবেন।

বাচ্চার বয়স ২ বছর হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে হজ্বে গেলে আপনি গুনাহগার হবেননা।

★তদুপরি প্রশ্নের বিবরন মতে স্বামীর কাছে বাচ্চাকে রেখে হজ্বে গেলেও আপনি গুনাহগার হবেননা।

তবে এমতাবস্থায় চেষ্টা করবেন,বাচ্চাকে এমন মহিলার তত্ত্বাবধানে রেখে যেতে,যে বাচ্চাকে নিজের দুধ খাওয়াতে পারবে,অথবা দুধ বানিয়ে খাওয়াতে পারবে,বাচ্চার যথাযথ দেখভাল করবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...