আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
26 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (11 points)
আসসালামু আলাইকুম। হুজুর নিম্নবর্ণিত প্রশ্নের জবাব দেওয়ার অনুরোধ রইলো।

প্রশ্ন ১: রাসূল (সা) কোন জান্নাতে থাকবেন?

প্রশ্ন ২: রাসূল (সা) যে জান্নাতে যাবে কোনো সাধারণ মুমিন বান্দা কি সেই জান্নাতে স্থান পাবে?

প্রশ্ন ৩: কোনো সাধারণ মুমিন বান্দা কি ইবাদত ও আমলের মাধ্যমে কোনো আলেমের থেকে বড় জান্নাত পেতে পারে।

যে ব্যক্তি কোরআন পাঠ করল, তিলাওয়াত করলো এবং মুখস্থ করল আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন এবং তাকে তার বংশধর হতে এমন দশজনকে সুপারিশ করার সুযোগ দান করবেন যাদের উপর জাহান্নাম অবধারিত হয়ে গিয়েছিল।

প্রশ্ন ৪: এই হাদিসের সনদ কতটুকু সহীহ? যাদের উপর জাহান্নাম অবধারিত তাদের আরেকজনের আমলের জন্য কিভাবে জান্নাতে দেওয়া হবে? পরিবারের একজন সৎ মানুষের জন্য পরিবারের দশজন চোরকে ক্ষমা করা। তাহলে নিজস্ব আমলের প্রয়োজনীয়তা অর্থহীন মনে হচ্ছে। ব্যাখ্যা করার অনুরোধ রইলো।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
জান্নাতে সর্বপ্রথম যিনি প্রবেশাধিকার লাভ করবেন, তিনি হলেন সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদ (ﷺ)। 

মহানবী (ﷺ) বলেন, “আমি সর্বপ্রথম জান্নাতের দরজায় করাঘাত করব। ...আমিই জান্নাতে প্রথম সুপারিশকারী হব।” (মুসলিম ১৯৭ নং)

তিনি আরো বলেন, “আমি জান্নাতের নিকট এসে তার দরজা খুলতে বলব। দারোয়ান ফিরিশ্তা বলবেন, কে আপনি? আমি বলব, ‘মুহাম্মাদ। দারোয়ান বলবেন, আমি আদিষ্ট হয়েছি, যেন আপনার পূর্বে অন্য কারো জন্য দরজা না খুলি।” 

 (মুসলিম ১৯৭ নং)

তিনি আরো বলেন, “আমরা (দুনিয়ায়) সর্বশেষে এসেছি, (আখেরাতে) সর্বপ্রথম কিয়ামতে উপস্থিত হব এবং আমরাই সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করব।” (বুখারী ২৩৮, মুসলিম ৮৫৫ নং)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
রাসুল সাঃ সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশাধিকার লাভ করবেন। তিনি জান্নাতের সর্বোচ্চ স্তরে থাকবেন।

(০২)
জান্নাতে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর কাছে অন্যান্য বিশেষ কিছু মুমিনরা থাকবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنْ أَنَسٍ أَنَّ رَجُلًا قَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ مَتَى السَّاعَةُ؟ قَالَ:وَيْلَكَ وَمَا أَعْدَدْتَ لَهَا؟ قَالَ: مَا أَعْدَدْتُ لَهَا إِلَّا أَنِّىْ أُحِبُّ اللهَ وَرَسُولَهٗ. قَالَ:أَنْتَ مَعَ مَنْ أَحْبَبْتَ. قَالَ أَنَسٌ: فَمَا رَأَيْتُ الْمُسْلِمِينَ فَرِحُوا بِشَيْءٍ بَعْدَ الْإِسْلَامِ فَرَحَهُمْ بِهَا.

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল : হে আল্লাহর রসূল! কিয়ামত কখন হবে? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তোমার জন্য পরিতাপ। কিয়ামতের জন্য তুমি কী প্রস্তুত করেছ? সে জবাবে বলল, আমি কিছুই করিনি, তবে আমি আল্লাহ ও তাঁর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ভালোবাসী। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তুমি তার সাথেই হবে যাকে তুমি ভালোবাসো। (রাবী) আনাস (রাঃ) বলেনঃ ইসলাম আবির্ভাবের পর মুসলিমদেরকে আমি কোন কথায় এতটা খুশি হতে দেখিনি, যতটা তারা খুশি হয়েছিল রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এ বাণীতে। 
(বুখারী ৬১৬৭, মুসলিম ১৬২-(২৬৩৯),আল মু‘জামুল আওসাত্ব ৪১০, ‘ত্ববারানী’র আল মু‘জামুল কাবীর ২৯৯২।)
,
وَعَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:أَنَا وَكَافِلُ الْيَتِيمِ لَه وَلِغَيْرِه فِى الْجَنَّةِ هٰكَذَا وَأَشَارَ بِالسَّبَّابَةِ وَالْوُسْطٰى وَفَرَّجَ بَيْنَهُمَا شَيْئًا.
সাহল ইবনু সা‘দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি এবং ইয়াতীমের লালন-পালনকারী, সে ইয়াতীম নিজের হোক বা অন্য কারো হোক জান্নাতে এরূপ হবো, এ কথা বলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিজের তর্জনী ও মধ্যমা অঙ্গুলি দ্বারা ইঙ্গিত করলেন। তখন দু’ অঙ্গুলির মধ্যে সামান্য ব্যবধান ছিল। 

(বুখারী ৬০০৫, তিরমিযী ১৯১৮, আবূ দাঊদ ৫১৫০, সহীহাহ্ ৮০০, সহীহ আত্ তারগীব ২৫৪১, সহীহ আল আদাবুল মুফরাদ ১০০, আহমাদ ২২৮২০, মুসনাদে আবূ ইয়া‘লা ৭৫৫৩, সহীহ ইবনু হিব্বান ৪৬০, আর মু‘জামুল কাবীর ৫৭৭২, আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৩০৩৭।)

এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৩)
হ্যাঁ, পারবে।

(০৪)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا حَفْصُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ كَثِيرِ بْنِ زَاذَانَ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ ضَمْرَةَ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ قَرَأَ الْقُرْآنَ وَاسْتَظْهَرَهُ فَأَحَلَّ حَلاَلَهُ وَحَرَّمَ حَرَامَهُ أَدْخَلَهُ اللَّهُ بِهِ الْجَنَّةَ وَشَفَّعَهُ فِي عَشَرَةٍ مِنْ أَهْلِ بَيْتِهِ كُلُّهُمْ وَجَبَتْ لَهُ النَّارُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ وَلَيْسَ إِسْنَادُهُ بِصَحِيحٍ . وَحَفْصُ بْنُ سُلَيْمَانَ يُضَعَّفُ فِي الْحَدِيثِ .

আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কুরআন পাঠ করেছে এবং তা হেফয রেখেছে, এর হালালকে হালাল এবং হারামকে হারাম মেনেছে, তাকে আল্লাহ তা’আলা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন এবং তার পরিবারের এমন দশজন ব্যাক্তি সম্পর্কে তার শাফায়াত কবুল করবেন যাদের প্রত্যেকের জন্য জাহান্নাম অনিবার্য ছিল।

অত্যন্ত দুর্বল, ইবনু মাজাহ (২১৬)

আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র উপরোক্ত সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি। এর সনদসূত্র সহীহ নয়। হাফস ইবনু সুলাইমান হাদীস শাস্ত্রে দুর্বল।

(তিরমিজি ২৯০৫,ইবনু মাজাহ ২১৬, আহমাদ ১২৬৮, শু‘আবূল ঈমান ১৭৯৬, য‘ঈফ আত্ তারগীব ৮৬৮, য‘ঈফ আল জামি‘ ৫৭৬১। কারণ এর সানাদে হাফস্ ইবনু সুলায়মান একজন দুর্বল রাবী এবং কাসীর ইবনু যাযান একজন মাজহূল রাবী।)

উক্ত হাদীসের হুকুমঃ জয়ীফ।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
যে ব্যক্তি কোরআন পাঠ করল, তিলাওয়াত করলো এবং মুখস্থ করল আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন এবং তাকে তার বংশধর হতে এমন দশজনকে সুপারিশ করার সুযোগ দান করবেন যাদের উপর জাহান্নাম অবধারিত হয়ে গিয়েছিল।

কুরআনের হাফেজ তার পরিবারের দশজনকে সুপারিশ করে জান্নাতে নিয়ে যেতে পারবে যাদের উপর জাহান্নাম অবধারিত।

হাফিজ সাহেবকে পুরোপুরি দ্বীন মেনে চললে তাকে এই সুযোগ দেয়া হবে। কোন হাফিজ কে এই সুযোগ দেয়া হবে, সেটাতো নিশ্চিত নয়। কাজেই পরিবারের সবাইকে আমল করতে হবে। তাছাড়া এই সুযোগ শেষ পর্যায়ে থাকবে। প্রাথমিক শাস্তি তো ভোগ করতে হবে। এবং সেই সময়টাও লক্ষকোটি বছরের হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...