আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
33 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহ মাতুল্লহি ওয়া বার কাতুহ
১/   ৭বা ৮ বছর আগে আমি  কুরআন শরিফ ছুয়ে মনে মনে আল্লাহর কাছে কসম করেছিলাম  যে, আল্লাহ যদি আমাকে অমুক সমস্যার সমাধান করে দেন তাহলে পরের বার থেকে  এই সমস্যায় পড়তে না হয় সেভাবে চলবো।  কিন্তু আমি  কসম রাখতে পারিনি,  এখন কি এজন্য আমাকে কাফফারা আদায় করতে হবে?
আরেকবার  কুরআন শরিফ ছুয়ে আল্লাহকে মনে মনে  বলেছিলাম যে, আল্লাহ  তুমি আমাকে এই বিপদ থেকে এবারের মতো বাচাও,  আমি ২য় বার এই ভুল আর করবো না । আর, আমি যদি ২য় বার এই কাজ করি তাহলে তুমি আমার কিডনি নষ্ট করে দিও। এক্ষেত্রে মনে মনে আল্লাহর কসম করলেও  কি কাফফারা আদায় করতে হবে? আমার তো  মনে হচ্ছে মনে মনে বলেছিলাম আল্লাকে, আবার মনে হচ্ছে মুখে বলেছিলাম, সঠিকটা মনে পড়ছে না, এক্ষেত্রে কি করনীয়?  আর, কাফফারা আদায় করলে কি আল্লাহ আমাকে উপরে উল্লিখিত রোগ মাফ করে দিবেন? আমি পরবর্তিতে আল্লাহর কাছে মাফ চেয়ে নিয়েছিলাম এ বিষয়ে আল্লাহ যাতে আমাকে এমন রোগ না দেন।

 কাফফারা  আদায় করতে চাইলে ফিতরার সমপরিমান কত টাকা লাগবে জন প্রতি? পরিমানটা জানতে চাচ্ছি, জানি না যেহেতু

২/ মনে মনে আল্লাহকে কথা দিয়ে কথা না রাখলে এর জন্য  কাফফারা দিতে হবে?  অতীতে এমন অনেকবার করেছি,  আল্লাহকে কথা দিয়ে কথা রখিনি। এক্ষেত্রে কাফফারা কিভাবে আদায় করতে হবে?  কাফফারা আদায় করতে হবে কিনা? কয়বার আদায় করতে হবে?
৩/ আল্লাহকে কথা দিয়েছিলাম, এই  কয়টা সাব্জেক্টের পরিক্ষা ভালো হলে প্রতি সাব্জেক্টে ৩ টা করে রোজা রাখবো পরিক্ষার পর।  কিন্তু পরিক্ষার পর থেকে এখন পর্যন্ত অনেক বছর চলে গেল,  রোজা রাখিনি।  এখন কি করনীয়? রোজাগুলো রেখে দিলেই হবে?  নাকি কাফফারা আদায় করতে হবে?
৪/ কোনো ব্যাক্তির যদি অনেকগুলো কসমের কাফফারা আদায় করতে হয়,  সেক্ষেত্রে যদি সেই ব্যাক্তির ১ টা  কাফফারা আদায় করার মতো সার্মথ্য থাকে বর্তমানে , বাকি কাফফারাগুলো এক মাস বা কয়েকমাস পরে টাকা জমিয়ে আদায় করতে পারবে বলে মনে করে,  তাহলে কি সে ব্যাক্তি ১ টা কাফফারা আদায় করে  বাকি কাফফারাগুলো আদায় করার জন্য টাকা জমিয়ে পরে আদায় করবে?  আর, সে ব্যাক্তি যদি  একটা বা দুইটা কাফফারা আদায় করে টাকার মাধ্যমে,   বাকি কাফফারা আদায়ের জন্য বর্তমানে সামর্থ্য  না থাকে কোনো ভাবেই ,  এজন্য   তিনটা করে রোজা রাখে  বর্তমানে, কয়েকমাস অপেক্ষে না করে, তাহলে কি কাফফারা আদায় হয়ে যাবে?  যেহেতু মৃত্যু যখন তখন হয়ে যেতে পারে দ্রুত কাফফারা আদায় করতে চাচ্ছে।
৫/ কাফফারা আদায়ের জন্য ফিতরার সমপরিমান টাকা কি   গাযার ফান্ডে পাঠানো  যাবে? এতে কি কাফফারা আদায় হয়ে যাবে?

৬/ মেয়েরা যারা বাবার উপর নির্ভরশীল, তারা কিভাবে  কাফফারা আদায় করবে?অনেকগুলো কাফফারা আদায় করতে হলে?
আর কোনো মেয়ের যদি নিজস্ব সামান্য কিছু ইনকাম থাকে, কিন্তু সেটা জরুরত পুরণের জন্য জমাচ্ছে, কারণ তার বাবার একার পক্ষে তার জরুরত (চিকিৎসা) পুরন করা সম্ভব হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে সেই জরুরত পুরনের জন্য টাকা না জমিয়ে আগে এই টাকার মাধ্যমে কাফফারা আদায় করা জরুরি? কাফফারা ফিতরার মাধ্যমে আদায় করতে চাচ্ছে,  কাফফারার অন্য দুই পদ্ধতি পালন করতে পারবে না বিধায়। এক্ষেত্রে কি রোজার মাধ্যমে কাফফারা আদায় করলে কাফফারা আদায় হয়ে যাবে?

জাযাকাল্লাহ খইর

1 Answer

0 votes
by (569,520 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

মহান আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেনঃ- 

لاَ يُؤَاخِذُكُمُ اللّهُ بِاللَّغْوِ فِي أَيْمَانِكُمْ وَلَـكِن يُؤَاخِذُكُم بِمَا عَقَّدتُّمُ الأَيْمَانَ فَكَفَّارَتُهُ إِطْعَامُ عَشَرَةِ مَسَاكِينَ مِنْ أَوْسَطِ مَا تُطْعِمُونَ أَهْلِيكُمْ أَوْ كِسْوَتُهُمْ أَوْ تَحْرِيرُ رَقَبَةٍ فَمَن لَّمْ يَجِدْ فَصِيَامُ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ ذَلِكَ كَفَّارَةُ أَيْمَانِكُمْ إِذَا حَلَفْتُمْ وَاحْفَظُواْ أَيْمَانَكُمْ كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللّهُ لَكُمْ آيَاتِهِ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ

আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না তোমাদের অনর্থক শপথের জন্যে; কিন্তু পাকড়াও করেন ঐ শপথের জন্যে যা তোমরা মজবুত করে বাধ। অতএব, এর কাফফরা এই যে,(১) দশজন দরিদ্রকে খাদ্য প্রদান করবে; মধ্যম শ্রেনীর খাদ্য যা তোমরা স্বীয় পরিবারকে দিয়ে থাক।(২)অথবা, তাদেরকে বস্ত্র প্রদান করবে অথবা, একজন ক্রীতদাস কিংবা দাসী মুক্ত করে দিবে।(৩) যে ব্যক্তি সামর্থ্য রাখে না, সে তিন দিন রোযা রাখবে।.....এটা কাফফরা তোমাদের শপথের, যখন শপথ করবে। তোমরা স্বীয় শপথসমূহ রক্ষা কর এমনিভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বীয় নির্দেশ বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর।(সূরা মায়েদা-৮৯)

কসমের ধারাবাহিক তিনটি কাফফারার প্রথমটি হল,১০জন মিসকিনকে সকাল-বিকাল দু'বেলা খাদ্য খাওয়ানো বা বস্ত্র পরিধান করানো।খাওয়ানো পড়ানো সম্ভব না হলে,১০জনের প্রত্যেকজনকে একটি ফিতরা সমপরিমাণ টাকা দিলেই কাফফারা আদায় হয়ে যাবে।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1808

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

وفیہ أیضاً(۱۷۶/۱):عن أبی ھریرۃ رضی الله عنہ قال: قال ﷺ "إن الله تجاوز عن أمتی ماحدثت بہ أنفسھا مالم تعمل أو تتکلم" أخرجہ البخاری 

যার সারমর্ম হলো নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা উপেক্ষা করেন, যতক্ষন পর্যন্ত উক্ত কাজ না করবে বা মুখে কোনো কথা না বলবে,ততক্ষন পর্যন্ত কোনো বিধান জারী হয়না।

حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ لِأُمَّتِي عَمَّا لَمْ تَتَكَلَّمْ بِهِ، أَوْ تَعْمَلْ بِهِ، وَبِمَا حَدَّثَتْ بِهِ أَنْفُسَهَا 

আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ আমার উম্মাতের মনে যা উদয় হয় তা যতক্ষণ না সে মুখে বলে অথবা কার্যে পরিণত করে ততক্ষণ তা উপেক্ষা করেন।
(আবু দাউদ ২২০৯)

أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ إِدْرِيسَ عَنْ مِسْعَرٍ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ تَجَاوَزَ لِأُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ وَحَدَّثَتْ بِهِ أَنْفُسَهَا مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَتَكَلَّمْ بِهِ 

উবায়দুল্লাহ ইবন সাঈদ (রহঃ) ... আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার উম্মতের মনে যা উদয় হয় বা খটকা লাগে, আল্লাহ্ তাআলা তা ক্ষমা করে দেবেন, যতক্ষণ না সে তা করে অথবা বলে।
(নাসায়ী শরিফ ৩৪৩৮)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি যেহেতু মনে মনে কসম করেছিলেন,সুতরাং সেটা কসম হয়নি।

এর দরুন কোনো কাফফারা আবশ্যক হবেনা। 

(০২)
এক্ষেত্রে কাফফারা আদায় করতে হবেনা। 

(০৩)
এটা যদি আপনি মুখে উচ্চারণ করে বলে থাকেন,সেক্ষেত্রে রোযা গুলি আদায় করে নিবেন।
এখম আদায় করলেও হবে।
বা পরবর্তীতে সময় সুযোগ মোতাবেক আদায় করলেও হবে।
দেড়ি করে আদায়ের দরুন কোনো কাফফারা আবশ্যক হবেনা। 

(০৪)
টাকা/খাবার দিয়ে কাফফারা আদায়ের মতো আপাতত তার যে সামর্থ আছে,সেটা দিয়ে সে কাফফারা আদায় করবে।

আর অবশিষ্ট কাফফারা সে রোযার মাধ্যমে আদায় করবে।

উল্লেখ্য, একই বিষয়ে একাধিকবার কসম কেটে প্রত্যেকবার ভেঙ্গে ফেললে সেক্ষেত্রে পূর্বে কাফফারা না করে থাকলে এখন তার জন্য একটি কাফফারা আদায় করাই যথেষ্ট। 

আরো জানুনঃ- 

(০৫)
এ সংক্রান্ত বিধান জানুনঃ- 

(০৬)
নিজের টাকা না থাকলে রোযা রাখার মাধ্যমে কাফফারা আদায় করবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

No related questions found

...