আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
44 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (9 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।
১.আমি মাঝে মাঝেই নিজেকে স্বপ্নে উলঙ্গ অবস্থায় দেখি।কিছুদিন আগে অপরিচিত এক লোকের সাথে ইন্টিমেট হতে দেখি স্বপ্নে,আউযুবিল্লাহ।কয়েক মাস আগেও কয়েকবার এমন স্বপ্ন দেখেছিলাম।আমি বিবাহিত, একটা বেবি আছে আলহামদুলিল্লাহ।হাজবেন্ড বাদে কারো কথা চিন্তাতেই আনতে পারিনা।এই স্বপ্নগুলা দেখার পর খুব অস্থিরতা কাজ করছে।জয়েন ফ্যামিলিতে থাকি।পারিবারিক ছোট খাট কিছু ঝামেলা লেগেই থাকে,আগে এগুলায় অনেক সবর ধরতে পারতাম এখন পারিনা।হাজবেন্ডের সাথে মনোমালিন্য হয় অনেক।অল্পতেই হাজবেন্ডের ব্যাপারে অভিযোগ চলে আসে মনে।সারাদিনই আমার মন খারাপ থাকে,কোনো কিছুতেই আগ্রহ কাজ করেনা।ইবাদাতেও গাফেলতি চলে আসে। আগে এমন ছিলাম না।

২.আজ আমি আমার হাজবেন্ডকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছি।আমি আর আমার হাজবেন্ড আমার এক উস্তাযার সাথে দেখা করতে গিয়েছি।আমার উস্তাযার দিকে আমার হাজবেন্ড লালসার দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল এমনকি টাচ ও করেছে।ওই উস্তাযার কখনোই বেপর্দা হওয়ার কথানা,উনি পর্দার ব্যাপারে খুবই স্ট্রিক্ট। আর আমার হাজবেন্ডের ও দ্বীনের বোঝ আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভাল,নজরের হিফাযত করার সর্বোচ্চ ট্রাই করে।আমি স্বপ্নে উনার যেই জঘন্য এটিটিউট আর যেই লালসার দৃষ্টি দেখেছি ওয়াল্লাহি বাস্তবে কখনোই এমন দেখিনি।খুব অস্থির লাগছে এসব দেখে।প্লিজ  আমাকে সাজেশন দিন,কি করা উচিত আমার।রুকইয়া গত প্রব্লেম হলে কিভাবে কি করবো?

1 Answer

0 votes
by (59,760 points)

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/49099/   নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, স্বপ্ন ও তার ব্যাখ্যা বিশেষজ্ঞ ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে সীরিন রহ. বলেছেন :

الرؤيا ثلاث : حديث النفس ، وتخويف الشيطان ، وبشرى من الله . (رواه البخاري في التعبير)

স্বপ্ন তিন ধরনের হয়ে থাকে। মনের কল্পনা ও অভিজ্ঞতা। শয়তানের ভয় প্রদর্শন ও কুমন্ত্রণা ও আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে সুসংবাদ। (বর্ণনায় : বুখারি)

হযরত আবু রাযিন আল-উক্বাইলী রাঃ বলেন নবী কারীম সাঃ বলেছেন

، عَنْ أَبِي رَزِينٍ العُقَيْلِيِّ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «رُؤْيَا المُؤْمِنِ جُزْءٌ مِنْ أَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ، وَهِيَ عَلَى رِجْلِ طَائِرٍ مَا لَمْ يَتَحَدَّثْ بِهَا، فَإِذَا تَحَدَّثَ بِهَا سَقَطَتْ».

মু'মিনের স্বপ্ন হচ্ছে নবুওতের চল্লিশভাগের এক ভাগ(অর্থাৎ তা সত্যরূপ পরিনত হয়ে থাকে),যে স্বপ্ন দেখেছে স্বপ্নটা তার উপর ঘুর্ণায়মান থাকে যতক্ষণ না কারো কাছে ব্যক্ত করে,অতঃপর যখন সে কারো কাছে ব্যক্ত করে (এবংঐ ব্যক্তি এর কোনো ব্যখ্যা প্রদান করে) তখন ঐ ব্যখ্যা অনুযায়ীই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়।(তিরমিযি হাদীস নং ২২৭৮)এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/37196

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

لو رأى أنه أذنب ذنباً عظيماً قتل إنساناً যদি কেউ স্বপ্ন দেখে যে সে বড় কোনো গোনাহ করছে, তাহলে সে কোনো মানুষকে হত্যা করবে। (তা'তিরুল আনাম-১/২৮৭)

 খারাপ স্বপ্ন গুলো সবই বাস্তব হয়, এটি ঠিক নয়। আপনার অন্তরে মন্দ চিন্তা আসলে সেটি বাস্তব হয়,এটি আপনার নিছক ধারণা মাত্র। নতুবা কোনো কিছু হওয়া সম্পর্কে আগাম কিছু ধারণার ভিত্তিতে আপনার মনে এমন কিছু আসে,যার ভিত্তিতে আপনি ধরে নেন,আর সেই মতেই স্বপ্নও দেখেন, আবা সেটি বাস্তবেও হয়। এমনটি হতে পারে।   এর বিপরিত হবেনা। তথা আপনি কোনো পুর্বাভাস পাওয়া ছাড়াই, কোনো কারণ ছাড়াই এমনিতেই নিজের মন থেকে একটি কথা বললেন, আর সেটিই বাস্তবে হবে, এমনটি হবেনা। কেননা গায়েব শুধুমাত্র আল্লাহ তায়ালা ছাড়া কেহই জানেননা।  

আল্লাহ তা'আলা বলেন,

إِنَّ اللَّهَ عِندَهُ عِلْمُ السَّاعَةِ وَيُنَزِّلُ الْغَيْثَ وَيَعْلَمُ مَا فِي الْأَرْحَامِ وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ مَّاذَا تَكْسِبُ غَدًا وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ بِأَيِّ أَرْضٍ تَمُوتُ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ

নিশ্চয় আল্লাহর কাছেই কেয়ামতের জ্ঞান রয়েছে। তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং গর্ভাশয়ে যা থাকে, তিনি তা জানেন। কেউ জানে না আগামীকল্য সে কি উপার্জন করবে এবং কেউ জানে না কোন দেশে সে মৃত্যুবরণ করবে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।(সূরা লুকমান-৩৪)

অত্র আয়াতে পঞ্চ ইন্দ্রীয় ব্যতীত নিশ্চিতরূপে গাইবের সংবাদ সম্পর্কে বলা হয়েছে যে,তা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ জানে না। গাইব শুধুমাত্র আল্লাহ-ই জানেন। আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ গাইবের সংবাদ জানে না।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

আপনার দুটি স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রায় একই রকম। অর্থাৎ অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার ফলে আপনার সাথে এমনটি ঘটছে। আপনি দুশ্চিন্তা পরিহার করে চলুন, এহেন চিন্তা মাথায় আসতেই দিবেননা, আসলেই সাথে সাথে বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইবেন।  নেককার লোকদের সাথে বেশি বেশি উঠাবসা করুন। তাকদীরের উপর বেশি বিশ্বাস রাখুন, যিকির কুরআন তিলাওয়াত নিয়মিত করুন। ঘুমানোর সময় পবিত্র শরীরে ঘুমানোর সুন্নাত দোয়া ইত্যাদি পড়ে ঘুমাবেন।  ইনশাআল্লাহ কোনো সমস্যা হবেনা। স্বপ্নের কথা কাউকে বলা যাবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...