আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
50 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
আমার মেডিকেলের একটা ছেলের সাথে লাস্ট কিছুদিন ধরে টুকটাক কথা হয়েছে। মানে একটা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা। এছাড়া ক্লাসের অন্য ছেলেদের সাথে কথা বলি না। এই একজনের সাথেই কথা বলতে হয়েছে। এমন একটা বিষয়, যেটা অন্য কেউ জানেনা, ওর সাথেই বলতে হতো।

আজকে বিকেলে ঘুমিয়ে স্বপ্নে দেখলাম ওই ছেলেটার সাথে কোনো একটা রাস্তায় হেঁটে হেঁটে কথা বলছি। পাশাপাশি হাঁটতে হাঁটতে গায়ে টাচ লাগছিল হালকা। এরপর কোথাও বসলাম। মনে হলো ঘেষেই বসলো। আমি সেটা বুঝতে পেরে একটু সরে আসলাম। তবে জোর প্রতিবাদ করলাম না। এরপর দুজন বাসা/ হোস্টেলে চলে আসলাম। আসার সময় খুবই লুকিয়ে আসছিলাম দুজন যেন কেউ আমাদেরকে একসাথে দেখে না ফেলে। এরপর ছেলেটা কোথায় যেন চলে গেল। আমি বাসা/ হলে চলে এলাম। হঠাৎ খেয়াল করলাম ছেলেটার ফোন আমার কাছে রয়ে গেছে। এখন এটা কিভাবে দিব বা কেউ দেখে ফেললে তো সমস্যা, এসব ভাবতে ভাবতে সত্যি সত্যি আমার ফোনে কল আসে এবং ঘুম ভেঙে যায়। ঘুম থেকে উঠে আমি নার্ভাস হয়ে যাই যে, এসব কী স্বপ্নে দেখলাম।

এই স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী? ছেলেটার প্রতি আমার দুর্বল হয়ে যাওয়ার কোনো চান্স আছে বা শয়তানের ধোকার পড়তে পারি এমন? এটার ব্যাখ্যাটা প্লিজ জানাবেন।

1 Answer

0 votes
by (61,500 points)

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/5309/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার।

১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।

২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে।

শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।

,

 ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়।


৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়।

হাদীস শরীফে এসেছে 

خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ يَقُوْلُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلميَقُوْلُ الرُّؤْيَا مِنْ اللهِ وَالْحُلْمُ مِنْ الشَّيْطَانِ فَإِذَا رَأٰى أَحَدُكُمْ شَيْئًا يَكْرَهُه“فَلْيَنْفِثْ حِينَ يَسْتَيْقِظُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ وَيَتَعَوَّذْ مِنْ شَرِّهَا فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّه“وَقَالَ أَبُو سَلَمَةَ وَإِنْ كُنْتُ لأَرَى الرُّؤْيَا أَثْقَلَ عَلَيَّ مِنَ الْجَبَلِ فَمَا هُوَ إِلاَّ أَنْ سَمِعْتُ هٰذَا الْحَدِيثَ فَمَا أُبَالِيهَا.

আবূ ক্বাতাদাহ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছিঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, আর মন্দ স্বপ্ন হয় শয়তানের তরফ থেকে। সুতরাং তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু স্বপ্ন দেখে যা তার কাছে খারাপ লাগে, তা হলে সে যখন ঘুম থেকে জেগে ওঠে তখন সে যেন তিনবার থুথু ফেলে এবং এর ক্ষতি থেকে আশ্রয় চায়। কেননা, তা হলে এটা তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না।

আবূ সালামাহ বলেনঃ আমি যখন এমন স্বপ্ন দেখি যা আমার কাছে পাহাড়ের চেয়ে ভারি মনে হয়, তখন এ হাদীস শোনার ফলে আমি তার কোন পরোয়াই করি না। [বুখারী ৫৭৪৭ মুসলিম পর্ব ৪২/হাঃ ২২৬১, আহমাদ ২২৭০৭]

,

অন্য এক হাদীসে এসেছে

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ رُؤْيَا يُحِبُّهَا فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ اللَّهِ، فَلْيَحْمَدِ اللَّهَ عَلَيْهَا، وَلْيُحَدِّثْ بِهَا، وَإِذَا رَأَى غَيْرَ ذَلِكَ مِمَّا يَكْرَهُ، فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَلْيَسْتَعِذْ مِنْ شَرِّهَا، وَلاَ يَذْكُرْهَا لأَحَدٍ، فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّهُ ".

 

আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন, যেখন তোমাদের কেউ এমন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে, তাহলে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এ জন্য আল্লাহর প্রশংসা করে এবং অন্যের কাছে তা বর্ণনা করে। আর যদি এর বিপরীত অপছন্দনীয় কিছু দেখে, তাহলে তা শয়তানের পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর ক্ষতি থেকে আল্লাহর আশ্রয় চায়। আর কারো কাছে যেন তা বর্ণনা না করে। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করবে না। ( বুখারী ৬৯৮৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫১৪)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!


আপনার স্বপ্নটি তিন নম্বর প্রকার থেকে মনে হচ্ছে। তাই আপনি ঐ ছেলের সাথে কথা-বার্তা বলা থেকে বিরত থাকবেন। অন্যথায় আস্তে আস্তে শয়তানের ধোঁকায় পড়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...