আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
46 views
in সালাত(Prayer) by (6 points)
আমি জানতাম মেয়েদের নামাজের সময় পায়ের পাতা হাতের পাতা আর মাথা মুখমন্ডল খোলা রাখা যায় কিন্তু ইদানিং শুনছি পায়ের পাতা ঢেকে নামাজ পড়তে হবে.  জানতাম শুধু পায়ের টাখনু পর্যন্ত ঢাকলেই হবে পাতা বের করে রাখা যাবে .

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://www.ifatwa.info/73491/  নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,  মহিলাদের জন্য গায়রে মাহরামদের সামনে অথবা বাহিরে যেতে হলে সর্বাবস্থায় নেকাব,হাত,পা মোজা ব্যাবহার করতে হবে।

শুধুমাত্র হজ্জ উমরার ইহরাম অবস্থায় নেকাব,হাত মোজা থেকে নিষেধ করা হয়েছে।

হাদীস শরীফে  এসেছেঃ

. حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يَزِيدَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ حَدَّثَنَا نَافِعٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ قَامَ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَاذَا تَأْمُرُنَا أَنْ نَلْبَسَ مِنْ الثِّيَابِ فِي الإِحْرَامِ فَقَالَ النَّبِيُّ لاَ تَلْبَسُوا الْقَمِيصَ وَلاَ السَّرَاوِيلاَتِ وَلاَ الْعَمَائِمَ وَلاَ الْبَرَانِسَ إِلاَّ أَنْ يَكُونَ أَحَدٌ لَيْسَتْ لَهُ نَعْلاَنِ فَلْيَلْبَسْ الْخُفَّيْنِ وَلْيَقْطَعْ أَسْفَلَ مِنْ الْكَعْبَيْنِ وَلاَ تَلْبَسُوا شَيْئًا مَسَّهُ زَعْفَرَانٌ وَلاَ الْوَرْسُ وَلاَ تَنْتَقِبْ الْمَرْأَةُ الْمُحْرِمَةُ وَلاَ تَلْبَسْ الْقُفَّازَيْنِ

আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! ইহরাম অবস্থায় আপনি আমাদেরকে কী ধরনের কাপড় পরতে আদেশ করেন? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ জামা, পায়জামা, পাগড়ী ও টুপী পরিধান করবে না। তবে কারো যদি জুতা না থাকে তাহলে সে যেন মোজা পরিধান করে তার গিরার নীচ হতে এর উপরের অংশটুকু কেটে নিয়ে তোমরা যাফরান এবং ওয়ারস্ লাগানো কোন কাপড় পরিধান করবে না। মুহরিম মহিলাগণ মুখে নেকাব এবং হাতে হাত মোজা পরবে না। (বুখারী শরীফ ১৮৩৮)

হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন

أمر اللہ نساء الموٴمنین إذا خرجن من بیوتہن في حاجة أن یغطین وجوہہن من فوق روٴوسہن بالجلابیب ویبدین عینا واحدة (احکام القرآن: ۳/۱۴۳، ط: ادارة القرآن کراچی)

সারমর্মঃ আল্লাহ তায়ালা মুমিন মহিলাদের আদেশ করেছেন যখন তারা কোনো প্রয়োজনে বাহিরে বের হয়,জিলবাব দ্বারা তাদের মাথার উপর থেকে নিয়ে চেহারা ঢেকে রাখবে।

এক চোখ শুধু খোলা রাখবে।

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

নারী হল সতর তথা আবৃত থাকার বস্ত্ত। নিশ্চয়ই সে যখন ঘর থেকে  বের হয় তখন শয়তান তাকে মনোযোগ দিয়ে দেখতে থাকে। আর সে যখন গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করে তখন সে আল্লাহ তাআলার সবচেয়ে বেশি নিকটে থাকে।-আলমুজামুল আওসাত, তবারানী

এই হাদীস দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, বিনা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া উচিত নয়।

 আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

ইহরাম গ্রহণকারী নারী যেন নেকাব ও হাতমোজা পরিধান না করে। (সহীহ বুখারী ৪/৬৩, হাদীস : ১৮৩৮)

কাযী আবু বকর ইবনে আরাবী বলেন, নারীর জন্য বোরকা দ্বারা মুখমন্ডল আবৃত রাখা ফরয। তবে হজ্বের সময়টুকু এর ব্যতিক্রম। কেননা, এই সময় তারা ওড়নাটা চেহারার উপর ঝুলিয়ে দিবে, চেহারার সাথে মিলিয়ে রাখবে না। পরপুরুষ থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখবে এবং পুরুষরাও তাদের থেকে দূরে থাকবে। (আরিযাতুল আহওয়াযী ৪/৫৬)

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

যে ব্যক্তি অহঙ্কারবশত কাপড় ঝুলিয়ে রাখে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তার দিকে (রহমতের দৃষ্টিতে) তাকাবেন না। তখন উম্মুল মুমিনীন উম্মে সালামা রা. জিজ্ঞাসা করলেন, তাহলে মহিলারা তাদের কাপড়ের ঝুল  কীভাবে রাখবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এক বিঘত ঝুলিয়ে রাখবে। উম্মে সালামা বললেন, এতে তো তাদের পা অনাবৃত থাকবে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাহলে এক হাত ঝুলিয়ে রাখবে, এর বেশি নয়। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৪১১৭; জামে তিরমিযী ৪/২২৩; সুনানে নাসাঈ ৮/২০৯; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ১১/৮২

ইমাম তিরমিযী বলেন, এই হাদীসে নারীর জন্য কাপড় ঝুলিয়ে রাখার অবকাশ দেওয়া হয়েছে। কারণ এটিই তাদের জন্য অধিক আবৃতকারী।

বিস্তারিত জানুনঃ https://ifatwa.info/6909

আয়েশা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ বলেছেন,

لاَ يَقْبَلُ اللَّهُ صَلاَةَ حَائِضٍ إِلاَّ بِخِمَارٍ

আল্লাহ তাআলা খিমার পরিধান করা ব্যতীত কোন প্রাপ্ত বয়স্কা নারীর নামাজ কবুল করেন না। (সুনান আবু দাউদ ৬৪১)

অন্য বর্ণনায় এসেছে-

عَنْ عَائِشَةَ: «أَنَّهَا كَانَتْ تَطُوفُ بِالْبَيْتِ وَهِيَ مُنْتَقِبَةً»

হযরত আয়শা সিদ্দিকা রাঃ বাইতুল্লাহ তওয়াফ করতেন পর্দাবৃত অবস্থায়। {মুসন্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-৮৮৫৯}

মহিলাদের সতর কতটুকু?

ﻭَﻟِﻠْﺤُﺮَّﺓِ ﺟَﻤِﻴﻊُ ﺑَﺪَﻧِﻬَﺎ ﺧَﻠَﺎ ﺍﻟْﻮَﺟْﻪِ ﻭَﺍﻟْﻜَﻔَّﻴْﻦِ ﻭَﺍﻟْﻘَﺪَﻣَﻴْﻦ

মুখমণ্ডল, দুই হাত কবজি পর্যন্ত ও টাখনুর নিচে পায়ের পাতা ছাড়া মহিলাদের সারা শরীরই সতর। (রদ্দুল মুহতার ১/৪০৪

সুতরাং নামাজের সময় মহিলাদের জন্য পরপুরুষ দেখার সম্ভাবনা না থাকলে মুখমণ্ডল, দু হাতের কব্জি ও পায়ের পাতা খোলা রাখা আবশ্যক নয়।

মহিলারা নামাজে টাখনুর নিচে পায়ের পাতা ছাড়া পুরো অংশ ডাকবে। টাখনুর নিচ পর্যন্ত ঢাকা ফরজ। সতর্কতামূলক গোড়ালি পর্যন্ত ঢাকা উচিত।

উল্লেখিত কিতাবে পায়ের নলা বলতে টাখনুর পিছনের সাইটের পুরো রগ উদ্দেশ্য। এখানে গোড়ালি পর্যন্ত ঢাকার কথা বুঝা যায়। মহিলাদের জন্য হাতের ক্ষেত্রে শুধু কনুই ঢাকলে হবেনা, হাতের কব্জি পর্যন্ত ঢাকা ফরজ।

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

ফিকহে হানাফীর গ্রহনযোগ্য মতানুসারে নামাজে নারীদের মুখমণ্ডল, দুই হাত কবজি পর্যন্ত ও টাখনুর নিচে পায়ের পাতা ছাড়া সব অঙ্গ ঢেকে রাখা ফরজ। পায়ের পাতার উপরিঅংশ ঢেকে রাখা আবশ্যক নয়। কাজেই যদি টাখনু ঢেকে থাকে তাহলেই নামাজ হয়ে যাবে। পায়ের পাতা (ফিতা বাঁধার স্থান) ঢাকা জরুরী নয়। তবে যদি নামাজের স্থানে ননমাহরাম থাকে তাহলে পায়ের পাতা ঢেকে নামাজ পড়বে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...