আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
14 views
ago in হজ ও উমরা (Hajj and Umrah) by (27 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।
গত ২ নভেম্বর ও আমি এবং আমার স্বামী মক্কায় যাই ওমরার নিয়ত এ। প্রথম ওমরা টা আমরা সুন্দর মত সম্পূর্ণ করতে পারি আলহামদুলিল্লাহ। তবে ৭ নভেম্বর থেকে আমার স্বামীর মুখের ভেতর ও জিহব্বায় কিছু হয় যার জন্য সে কিছুই খেতে পারছিল না। এ অবস্থায় আমরা ৮ তারিখ মক্কায় জুম্মা আদায় করি এবং বিকেলেই মদিনার উদ্দেশ্যে রওনা দেই৷
মদিনায় আমরা ৩ রাত অবস্থান করি কিন্তু এই তিন দিনেও আমার স্বামী পানি ছাড়া আর কিছুই খেতে পারছিল না। ১১ নভেম্বর এ আমরা পুনরায় মক্কায় যাব বলে ঠিক করি। সেদিন সকালে তিনি সামান্য পরিমাণ ভাত খেতে পারে। যদিও আমরা বাংলাদেশ থেকে পরিকল্পনা করি যে, আমরা তিনটি ওমরা করব যার মধ্যে একটা হবে মদিনা থেকে আসার সময়৷ কিন্তু যেহেতু আমার স্বামী প্রায়  ৫ দিন কিছু খেতে পারেন নাই, বেশ দূর্বল হয়ে যান তাই তিনি বলেন যে বলেন যে, ১১ তারিখ মক্কা গিয়ে আর দুই দিন বিশ্রাম নিয়ে তারপর আয়েশা মসজিদ গিয়ে ইহরাম বাধব৷।
সেই পরিকল্পনা মাফিক আমরা মদিনা থেকে মক্কা যাওয়ার পথে কোনো নিয়তও করিনি,ইহরামও বাধি নাই। ১৩ তারিখ ফজরের পর আয়েশা মসজিদ থেকে ইহরাম বেধে ২য় ওমরা করি৷ এবং ১৪ তারিখ রাতে দেশে চলে আসি। আলহামদুলিল্লাহ। এখন আমার প্রশ্ন:
১. আমরা প্রথম পরিকল্পনা মোতাবেক ৩ টি ওমরা করব ভেবেছিলাম, একটা তায়েফ থেকে এসে। তবে দেশ থেকেই আবার পরিকল্পনা পরিবর্তন করি যে তায়েফ যাব না,যেহেতু তায়েফ আমরা যাই নাই তাই সেটা করাও হয়নি৷ এতে কি আমাদের দম দিতে হবে?
২. মদিনা থেকে আসার সময় যেহেতু আমরা ইহরাম বাধি নাই, তাহলে কি এটার উপর দম হবে?
দেশ থেকে যাওয়ার সময় পরিকল্পনার অংশ ছিল মদিনা থেকে আসার সময় ইহরাম বাধব তবে অসুস্থতার জন্য পরিকল্পনা পরিবর্তন করি।
৩. আমার স্বামী অসুস্থ ছিল তবে আমি আলহামদুলিল্লাহ সুস্থ ছিলাম,তবুও আমি মদিনা থেকে ইহরাম বাধি নাই। এক্ষেত্রে কি আমার উপর দম হবে?
আশা করি আমি প্রশ্ন গুলো বুঝাতে পেরেছি ওস্তাজ।

1 Answer

0 votes
ago by (566,940 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

মক্কাবাসী এবং মক্কায় অবস্থানকারীদের নারী-পুরুষ,সুস্থ অসুস্থ সবার জন্যই ওমরার ইহরাম মসজিদে আয়েশা সহ সকল হুদুদে হেরেমের শুরু সীমানা থেকে করাই যথেষ্ট।
সেই হিসেবে বিদেশি হাজিরাও কোন সফরের দ্বিতীয়-তৃতীয় ওমরার জন্য ওখান থেকে ওমরার ইহরাম বাধতে পারবেন।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ، حَدَّثَنَا ابْنُ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، أَنَّ عَائِشَةَ، قَالَتْ أَهْلَلْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ، فَكُنْتُ مِمَّنْ تَمَتَّعَ، وَلَمْ يَسُقِ الْهَدْىَ، فَزَعَمَتْ أَنَّهَا حَاضَتْ، وَلَمْ تَطْهُرْ حَتَّى دَخَلَتْ لَيْلَةُ عَرَفَةَ فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ، هَذِهِ لَيْلَةُ عَرَفَةَ، وَإِنَّمَا كُنْتُ تَمَتَّعْتُ بِعُمْرَةٍ. فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " انْقُضِي رَأْسَكِ، وَامْتَشِطِي، وَأَمْسِكِي عَنْ عُمْرَتِكِ ". فَفَعَلْتُ، فَلَمَّا قَضَيْتُ الْحَجَّ أَمَرَ عَبْدَ الرَّحْمَنِ لَيْلَةَ الْحَصْبَةِ فَأَعْمَرَنِي مِنَ التَّنْعِيمِ مَكَانَ عُمْرَتِي الَّتِي نَسَكْتُ.

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ আমি আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর সঙ্গে বিদায় হজ্জের ইহরাম বেঁধেছিলাম। আমিও তাদেরই একজন ছিলাম যারা তামাত্তুর নিয়্যত করেছিল এবং সঙ্গে কুরবানীর পশু নেয়নি। তিনি বলেনঃ তার হায়েয শুরু হয় আর আরাফা এর রাত পর্যন্ত তিনি পাক হননি। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! আজ তো আরাফার রাত, আর আমি হজ্জের সঙ্গে উমরারও নিয়্যত করেছি। আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ মাথার বেণী খুলে ফেল, চুল আঁচড়াও আর উমরা হতে বিরত থাক। আমি তাই করলাম। হজ্জ সমাধা করার পর আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবদুর (রহঃ) কে ‘হাসবায়’ অবস্থানের রাতে (আমাকে উমরা করানোর) নির্দেশ দিলেন। তিনি তানঈম হতে আমাকে ‘উমরা করালেন, যেখান হতে আমি ‘উমরার ইহরাম বেঁধেছিলাম। (বুখারী শরীফ ৩১৬.২৯৪) (আ.প্র. ৩০৫, ই.ফা. ৩১০)

বিস্তারিত জানুনঃ  

★যদি কোনো ব্যাক্তি বাহিরের দেশ থেকে মক্কায় ওমরাহ পালনের জন্য যায়,এবং মিকাত থেকে ইহরাম না বাধে,বরং মক্কায় গিয়ে মসজিদে আয়েশায় পৌছে ইহরাম বেধে থাকে।
তাহলে যতক্ষন পর্যন্ত সে ওমরাহ এর কাজ সম্পন্ন না করবে,তার উপর জরুরি হলো মদিনা মুনাওয়ারা অথবা তায়েফের মিকাতে গিয়ে সেখানে ইহরামের নিয়ত করে তালবিয়াহ পড়তে পড়তে ফিরে আসবে।

যদি সে এমনটি না করে,আর ওমরাহ এর কাজ সম্পাদন করে,তাহলে তার উপর একটি দম আবশ্যক হবে।

آفاقي مسلم بالغ یرید الحج ولو نفلاً أو العمرة …… وجاوز وقتہ …ثم أحرم لزمہ دم کما إذا لم یحرم فإن عاد إلی میقات ما ثم أحرم ……سقط دمہ الخ (الدر المختار مع رد المحتار، کتاب الحج، باب الجنایات، ۳:۶۲۰- ۶۲۲)، 
সারমর্মঃ 
বহিরাগত মুসলিম বালেগ ব্যাক্তি যদি হজ্জ অথবা ওমরাহ ইচ্ছা করে,এবং মিকাত অতিক্রম করার পর ইহরাম বাধে,তাহলে দম আবশ্যক হবে।
যদি সে কোনো এক মিকাতে ফিরে যায়,অতঃপর ইহরাম বাধে,তাহলে দম রহিত হয়ে যাবে।
দম আর দিতে হবেনা।

★যদি কোনো ব্যাক্তি আগে থেকেই মক্কায় হারাম এলাকায় অবস্থান করে,অথবা হিল এলাকার সীমানার মধ্যে অবস্থান করে,তাহলে সে ইহরাম বাধার জন্য মসজিদে আয়েশায় যাবে।   

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
প্রশ্নের বিবরন মতে এক্ষেত্রে আপনাদের দম দিতে হবেনা।

(০২)
এক্ষেত্রে পরবর্তীতে যেহেতু মসজিদে আঈশা থেকে ইহরাম বেধেছিলেন,সুতরাং দম দিতে হবেনা।

(০৩)
প্রশ্নের বিবরণ মতে দম আবশ্যক হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...