ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকা-তুহু।
বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/2676/
নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,
শরীয়তে দু'টি নিষিদ্ধ বিবাহের আলোচনা পাওয়া যায়। যথাঃ
ক. নিকাহুল মুত'আহ বা মূতা বিবাহ।
খ. নিকাহুল মু'আক্কাতি বা সাময়িক বিবাহ।
হেদায়া কিতাবে এ দু'টি বিয়েকে হুকুমসহ এভাবে ফুটিয়ে তুলা হয়েছে,
قال:
" ونكاح المتعة باطل " وهو أن يقول لامرأة أتمتع بك كذا مدة بكذا من
المال وقال مالك هو جائز لأنه كان مباحا فيبقى إلى أن يظهر ناسخه قلنا ثبت النسخ
باجماع الصحابة رضي الله عنهم وابن عباس رضي الله عنهما صح رجوعه إلى قولهم فتقرر
الإجماع
"
মূতা বিবাহ বাতিল। মূতা বিয়ে হল,কোনো পুরুষ কোনো
মহিলাকে বলবে, আমি এত দিনের জন্য এক টাকার বিনিময়ে তোমার কাছ থেকে ফায়দা গ্রহণ
করবো। এরকম বিয়ে শরীয়তে নিষিদ্ধ। তবে ইমাম মালিক রাহ. এটাকে প্রথমে জায়েয বলতেন। যেহেতু
ইবনে আব্বাস রাযি. প্রথমে জায়েযের পক্ষে ছিলেন, পরবর্তীতে ইবনে আব্বাস রাযি উনার মত থেকে জুমুহুর সাহাবার মতের
দিকে ফিরে আসেন।
সুতরাং সমস্ত সাহাবায়ে কেরামের ঐক্যমত মূতা বিবাহ নিষিদ্ধ ঘোষিত
হয়।
والنكاح
المؤقت باطل " مثل أن يتزوج امرأة بشهادة شاهدين إلى عشرة أيام وقال زفر هو
صحيح لازم لأن النكاح لا يبطل بالشروط الفاسدة. ولنا أنه أتى بمعنى المتعة والعبرة
في العقود للمعاني ولا فرق بين ما إذا طالت مدة التأقيت أو قصرت لأن التأقيت هو
المعين لجهة المتعة وقد وجد
সাময়িক বিয়ে বাতিল, যেমন কেউ কোনো মহিলাকে দু'জন সাক্ষীর উপস্থিতিতে
দশ দিনের জন্য বিয়ে করল। ইমাম যুফার রাহ বলেন, এভাবে বিয়ে করলে বাতিল হবে না বরং সাধারণ বিয়ের মত লাযিম হয়ে
যাবে। কেননা বিয়ে বাতিল শর্তসমূহর মাধ্যমে ফাসিদ হয় না। ইমাম যুফার রাহ. ব্যতীত অন্যান্য
হানাফি ফুকাহায়ে কেরাম মনে করেন,সে এখানে বিয়েকে উপভোগের অর্থে নিয়ে এসেছে। আর উকুদ তথা চুক্তিতে
অর্থকেই ধর্তব্য হিসেবে ধরে নেয়া হয়।সময় কম হোক আর বেশী হোক উপভোগের অর্থ চলে আসলে
সেই বিয়ে বাতিল বলে গণ্য হবে। আর এখানে সময়ের উল্লেখের ধরুণ উপভোগের অর্থা পাওয়া গিয়েছে।
(হেদায়া-১/১৯০)
বিবাহের মূল উদ্দেশ্যই হলো স্থায়িত্ব। তবে মূতা বিয়ে ইসলামের
প্রথমিক যুগে কিছু সময়ের জন্য হালাল ছিলো। অতঃপর কিয়ামত পর্যন্ত সময়ের জন্য হারাম ঘোষনা
করা হয়েছে।
হযরত আলী ইবনে আবূ তালিব (রাঃ) হতে বর্ণিত।
عن
علي رضي الله عنه : " أن رسول الله صلى الله وسلم نهى عن نكاح المتعة وعن
لحوم الحمر الأهلية زمن خيبر ." وفي رواية : " نهى عن متعة النساء يوم
خيبر وعن لحوم الحمر الإنسية ."
রাসূলুল্লাহ সাঃ খাইবার যুদ্ধের দিন মহিলাদের সাথে মুত‘আহ করা
থেকে এবং গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। (সহীহ বোখারী-৪২১৬,সহীহ মুসলিম-১৪০৭)
ইবনে সাবরাহ আল জুহানী (রহঃ) থেকে তার পিতা সাবরাহ (রাযিঃ) এর
সূত্রে বর্ণিত রয়েছে,
وعن
الربيع بن سبرة الجهني أن أباه حدثه أنه كان مع رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال
: " يا أيها الناس إني قد كنت أذنت لكم في الاستمتاع من النساء وإن الله قد
حرم ذلك إلى يوم القيامة فمن كان عنده منهن شيء فليخل سبيله ولا تأخذوا مما
آتيتموهن شيئاً
"
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,হে লোক সকল! আমি তোমাদেরকে মূতা বিয়ে সম্পর্কে অনমুতি দিয়েছিলাম।
তবে আল্লাহ তা'আলা কিয়ামত পর্যন্ত সময়ের জন্য মূতা বিয়েকে হারাম করে দিয়েছেন।
সুতরাং কারো নিকট কোনো মূতা স্ত্রী থাকলে তার রাস্তা ছেড়ে দাও। আর তোমরা তাদেরকে যা
কিছু দিয়েছিলে তা ফিরিয়ে নিয়ে আসবে না। (সহীহ মুসলিম-১৪০৬)
আল্লাহ তা'আলা উনার যে সমস্ত বিশেষ নি'আমত দ্বারা মানুষদের
কে চিন্তা গবেষনার দাওয়াত দিয়েছেন। এই নি'আমত সময়ের একটি হল, স্বামী-স্ত্রী মধ্যকার মহব্বত ভালাবাসা সৃষ্টি, স্ত্রীকে স্বামীর
জন্য প্রশান্তিকর বানানো বানানো। অতঃপর আল্লাহ তা'আলা সন্তানসন্ততি বাড়ানোর
তাগিদ দিয়েছেন এবং মহিলার জন্য ইদ্দত ও মিরাছের ব্যবস্থা রেখেছেন। এসব কিছুই মূতা বিবাহে
পাওয়া যাচ্ছে না।
শিয়া মতাবলম্বীরা মূতা বিয়ের অনুমোদন দিয়ে থাকে,এবং একে পূন্য
কাজ মনে করে।যা হাদীস এবং ইজমায়ে সাহাবার বিরোধী।
□ মুত'আহ বিবাহ হারাম। তবে যদি কেহ বিয়ের সময়ে
সময় এবং উপভোগ উল্লেখ না করে বিবাহ করে, তাহলে তার এই বিবাহ
হয়ে যাবে।
কেননা তাদের বিবাহ মূলত মূতা বা মু'আক্কাত হয়নি।
আরো বিস্তারিত জানুন - https://ifatwa.info/9085/
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বিয়ের সময় কোনো সময় উল্লেখ না করলে স্বাভাবিক বিয়ে হয়ে যাবে।
সুতরাং পরবর্তীতে বিনা কারণে তালাক প্রদাণ বা বিচ্ছেদ করা হারাম।
করলে এর কারণে শাস্তি দুনিয়া ও আখেরাতে অবশ্যই পেতে হবে।
উল্লেখ্য যে, প্রশ্নটি আরো স্পষ্ট করলে ভালো হয়। তারা বিয়ের
সময় কোনো সময়ের কথা উল্লেখ করেছিলো কি না। করলে বিয়েটাই বাতিল বলে গণ্য হবে।
আরো বিস্তারিত জানুন - https://ifatwa.info/9085/