আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
86 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (12 points)

আমার এক বোনের হয়ে আমি প্রশ্নটি সাবমিট করছি।  


"আমার একটা ছেলের সাথে সম্পর্ক ছিলো। পরিচয় সব মিলিয়ে প্রায় ৯ বছরের মতো। তার সাথেও বিয়েও হয়েছে প্রায় ৩ বছর। আমাদের বাচ্চার বয়স প্রায় ২ বছর। 

সবকিছুই ঠিকঠাক ছিলো। সমস্যার শুরু হয় যে আমার হাসবেন্ড প্রায় প্রায় ইন্ডিয়া যেতো। তারপর এদিক ওদিক ঘুরতে যেতো। একবার থাইল্যান্ডে গেলো ১১ দিনের জন্য। কিন্তু এবার সিঙ্গাপুরের কথা বলে আবারও আমাদের কাউকে না জানিয়ে থাইল্যান্ড গিয়েছিলো। আর ঢাকাতে থাকাকালীনও প্রায় প্রতিদিনই রাত ২/৩ টার সময় বাসায় আসতো। সাথে ওর বন্ধু থাকতো তাই আমি তেমন কিছু বলিনি বা সন্দেহ করিনি। কিন্তু আস্তে আস্তে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করা শুরু করে, আমার দোষ ধরা শুরু করে, আমার সাথে তেমন কথা বলতে চায়না। আমি বুঝতে পারতাম কিছু একটা চলতেছে। তাই আমি একদিন ফোন চেক করি, যদিও ফোন সবসময় লক করে রাখে। দেখি যে ঢাকা এবং থাইল্যান্ডে হোটেলে ২ টা মেয়ের সাথে ছবি, মদের বারে মেয়েদের সাথে ছবি। এসব নিয়ে অনেক অশান্তি হয়েছে আর আমার গায়েও হাত তুলেছে অনেকবার। আমাকে আমার খালামনি এবং খালাতো ভাই এসে নিয়ে গিয়েছিলো। আমার ছোট বাচ্চা তাই আমি কি করবো বুঝতে না পেরে আবারও শশুরবাড়ী চলে এসেছিলাম। এদিকে আমার আম্মু মারা যাওয়ার পর আব্বু আবার বিয়ে করেছে তাই বাবার বাড়িও যাওয়ার মতো অবস্থা নেই। এখন আমি কিছু বললেই আমার গায়ে হাত তোলে। আমার সাথে ভালো সম্পর্ক নেই। নিজের পছন্দের বিয়ে এবং আম্মু মারা যাওয়ার পর থেকে মামারাও তেমন সাহায্য করেনা। সে বলে এখন আমাকে আর ভালো লাগেনা, বাচ্চা হওয়ার পর আর সুন্দর লাগেনা, টাকা হলে মেয়ের অভাব হয়না। আমি অনেক বলি নামাজ পড়তে কিন্তু নামাজ পড়ে না। মন থেকে আল্লাহর ভয় এক্কেবারে উঠে গেছে। আগে যখন টাকাপয়সা কম ছিলো তখন এমন ছিলো না, টাকা হয়ে এখন পুরো পাল্টে গেছে, অমানুষ হয়ে গেছে। আমি শুধু আমার বাচ্চার কথা ভেবে কিছু করতে পারছি না। এটা সত্যি যে আমার বাচ্চাকে সবাই খুব আদর করে এবং খুব ভালোবাসে। আমি যদি এখন চলে যায় তাহলে আমার বাচ্চা তার পরিবার হারাবে। কিন্তু সে আমাকে সহ্য করতেও পারেনা কিন্তু ডিভোর্স ও দিবেনা। কিন্তু আমি চলে গেলেই সে বেচে যায় এমন ভাবে ট্রিট করে আমাকে। ওর কাছে এসব কিছু এখন মজা মনে হয়।  আমি সহ্য করতে পারছি না আর। আমাকে সাহায্য করবে এমনও কোনো আত্মীয়সজন নেই। এক্ষেত্রে আমার কি করনীয় দয়া করে আমাকে জানাবেন। এবং এছাড়াও কোনো আমল বা কিছু যাতে আমি একটু শান্তি পাই আমি সব ভুলে থাকতে পারি। বর্তমানে আমি শশুরবাড়িতেই আছি। কিন্তু ভালো নেই। যেকোনো সময় কোনো ভুল সিন্ধান্ত নিয়ে নিতে মন চায় কিন্তু বাচ্চার কথা ভেবে পারিনা শুধু।"

 
 
 

1 Answer

0 votes
by (574,470 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

কোন মারাত্মক সমস্যা ছাড়া কোন মহিলা তার স্বামী থেকে তালাক চাওয়া হারাম ও কবীরা গুনাহ্।

সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

أَيُّمَا امْرَأَةٍ سَأَلَتْ زَوْجَهَا طَلَاقًا فِيْ غَيْرِ مَا بَأْسٍ ؛ فَحَرَامٌ عَلَيْهَا رَائِحَةُ الْـجَنَّةِ.

‘‘যে কোন মহিলা কোন মারাত্মক সমস্যা ছাড়া নিজ স্বামীর নিকট তালাক চাইলো তার উপর জান্নাতের সুগন্ধি হারাম হয়ে যাবে’’। (আবূ দাউদ ২২২৬; তিরমিযী ১১৮৭; ইব্নু মাজাহ্ ২০৫৫)

ইসলামী স্কলারগন বলেছেন, যেসব কারণে স্ত্রীর জন্য স্বামীর কাছ থেকে তালাক চাওয়ার অনুমতি আছে তা হলোঃ-

★যদি কোনো বাস্তবসম্মত কারণে উভয়ের পক্ষে একসঙ্গে বসবাস করাটা অসম্ভব হয়ে পড়ে তাহলে স্ত্রীর জন্য স্বামীর কাছ থেকে তালাক চাওয়ার অনুমতি আছে।

★যদি স্বামীর মাঝে দৈহিক এমন ত্রুটি থাকে, যার কারণে দাম্পত্যজীবনের স্বাভাবিকতা খুবই দুরূহ হয়ে যায়। যেমন—পাগল হওয়া, যৌন অক্ষম হওয়া, কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত হওয়া। 
বলা বাহুল্য, স্বামীর মাঝে উক্ত ত্রুটিগুলো থাকা অবস্থায় স্ত্রীকে ভালোভাবে রাখা সম্ভব নয়।

★স্বামী স্ত্রীর আবশ্যকীয় জরুরত তথা ভরণ-পোষণ দিতে অক্ষম হলে। কেননা, এটা স্ত্রীর মৌলিক অধিকার। 

★শরিয়ত নির্দেশিত কারণ ছাড়া স্বামী স্ত্রীকে কষ্ট দেওয়া বা জুলুম করা।

এটা শারীরিকভাবেও হতে এবং মানসিকভাবে হতে পারে। যেমন—স্ত্রীকে মারধর করা, গালাগাল করা, স্ত্রীকে তার পিতা-মাতার সঙ্গে দেখা সাক্ষাতে বাধা প্রদান করা, বেপর্দা কিংবা হারাম কাজে স্ত্রীকে জোরপূর্বক বাধ্য করা। 

★স্বামীর মধ্যে দ্বিনদারির প্রতি অবহেলা চরম পর্যায়ের হলে। যেমন—নামাজ না পড়া, মদ পান করা, পরকীয়া কিংবা চারিত্রিক অন্যায়-অপকর্মে লিপ্ত হওয়া। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্বামীকে সংশোধন করার লক্ষ্যে তাকে দাওয়াত ও তাবলিগে মেহনতের সাথে যুক্ত হয়ে ৪০ দিন অথবা ৩ দিনে পাঠাবেন।

তিনি রাজী না হলে সেক্ষেত্রে দুই পরিবারের মুরব্বিদের মাধ্যমে মিটিং করে তাকে এ ধরনের অন্যায় কাজ হতে ফিরে আসতে বলবেন।

সর্বদিক হতে তাকে সংশোধন এর চেষ্টা করবেন।
চেষ্টার পরেও কাজ না হলে সেক্ষেত্রে আপনি তালাক চাইতে পারেন। এক্ষেত্রে তালাক চাওয়া জায়েজ আছে।

তিনি তালাক না দিলে নিজে তালাকের অধিকার প্রাপ্তা হয়ে থাকলে আপনি নিজেকে নিজে তালাক দিতে পারবেন, অন্যথায় আদালতের মাধ্যমে খোলা তালাক নিতে পারবেন।

আর যদি আপনি তালাকের দিকে না গিয়ে এভাবেই ঘর সংসার চালিয়ে যেতে চান,সেক্ষেত্রে সেটারও অধিকার আপনার রয়েছে। সেটি আপনার ইচ্ছা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...