আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
64 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (14 points)
السلام عليكم و رحمة الله و بركاته


১) আমার খালু মারা গেছেন পাঁচ মাস হয়েছে.. চার পাঁচ দিন আগে আম্মু স্বপ্নে দেখছে খালু নাকি একটা রুমে খুব কান্নাকাটি করছে.. কারো সাথে কথা বলছেনা শুধু কান্নাই করতেছে.. পরে আম্মু এটা খালাকে জানানোর পর খালা কিছু টাকা একজন গরীবকে দিয়ে দেয়।

আমার কাকা মারা গেছেন দুই মাস হইছে.. তো তিন চারদিন ওনাকে স্বপ্নে দেখছি.. কিন্তু দূরে দূরে ছিলেন.. কিন্তু গতকাল একটা স্বপ্ন দেখি.. এরকম ছিলো যে, আমাদের বাড়িতে একটা অনুষ্ঠান হচ্ছে সম্ভবত.. চাচিরা কাজিনরা সবাই আছে.. আর আমরা তিনজন কাজিন শাড়ি পরছি.. তো আমরা আমাদের ড্রেস চেন্জ করার জন্য কিছুটা দূরে আমার খালার (আরেকজন) বাসায় যাচ্ছি। (আদতে খালার বাড়ি অন্নেক দূর) তো আমরা তিনজন যখন পুকুর পাড় পর্যন্ত গেলাম দেখলাম রাস্তায় কিছু ছেলে দাড়িয়ে আছে.. তো তাদের দেখে আমরা মুখটা অন্যদিকে ফিরিয়ে নিলাম.. কিছুক্ষন পর ওরা আমাদের পাশ দিয়ে অন্যদিকে চলে যাচ্ছি আর একজন বলতেছিলো" আমাদের আপনাদের দিকে তাকাতে নিষেধ করেছে"

তারপর আমরা রাস্তার দিকে যাচ্ছিলাম.. রাস্তার পাশেই কাকার কবর.. দেখলাম কাকা কবর থেকে একটু দূরে রাস্তার ওপর দাড়িয়ে আছে.. আমরা কাকাকে দেখলাম.. কাকা আমাদের তিনজনকে দেখে কান্না শুরু করে দিল.. খুব কান্না করছিলো.. আর কি যেন বলতেছিল.. (ঘুম থেকে উঠে কি বলছে কাকা সেটা মনে নেই) আমরাও কাকার সাথে কাঁদতে শুরু করলাম.. কাঁদতে কাঁদতে হাঁটতে লাগলাম.. তো হাঁটতে হাঁটতে দেখলাম একটা এম্বুল্যান্সে করে একজন পুরুষের লাশ নিয়ে যাচ্ছে.. তবে এম্বুল্যান্সের দরজা খোলা (চলন্ত এম্বুল্যান্স).. আর লাশের বুক পযর্ন্ত সাদা কাপড় দেওয়া.. শুধু চুল দেখছি আমরা তাই চিনতে পারিনি কে.. তো তখন আমি আমার বাকি দুই কাজিনদের বললাম "ইদানিং অনেকেই মারা যাচ্ছে" তারপর আমরা খালাদের বাসায় চলে গেলাম....

২)আমার হাসব্যান্ড বাইরের দেশে থাকেন,উনি ৫ওয়াক্ত নামাজ পড়েন আলহামদুলিল্লাহ,তবে সেটা পারিবারিক শিক্ষা থেকেই।অর্থাৎ মুসলমান হিসেবে ৫ওয়াক্ত নামাজ ফরয এই হিসেবেই।উনি দাড়ি রাখেনা,এ ভয়ে যে যদি ঐখানে নতুন কোন কোম্পানিতে জয়েন করে, দাঁড়ি রাখতে না দে,তখন যদি কেটে ফেলতে হয়।আমি অনেক বুঝাইছি এখনো বুঝাই,কিন্তু উনি বুঝে না,,,উনি বলে রশি বেশি টান দিলে ছিঁড়ে যায়।উনি যেদিন ক্লিন শেভ করে আমার উনার সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করেনা, উনার সাথে ভিডিও কলে কথা বলতে ইচ্ছে করে না,,,আমার শুধু মনে হয় যিনি আমার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নাতকে কেটে ফেলতে পারে তার সাথে তার দিকে তাকাই আমি কিভাবে কথা বলব? আমার কি করা উচিৎ এ অবস্থায়?

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
edited by

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাবঃ-

https://www.ifatwa.info/71223/ নং ফাতাওয়ায় বলা হয়েছে যে,

একমুষ্টি পরিমান দাড়ি রাখা চার মাযহাব মতে ওয়াজিব।

হযরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত,

 ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﻤﺮ - ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ – ﻗﺎﻝ : ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : " ﺃﻧﻬﻜﻮﺍ ﺍﻟﺸﻮﺍﺭﺏ ﻭﺃﻋﻔﻮﺍ ﺍﻟﻠﺤﻰ "

তরজমাঃ- নবী কারীম সাঃ বলেন,তোমরা  গোঁফকে ছাটাই করো ,এবং দাড়িকে বাড়ার জন্য ছেড়ে দাও।

(সহীহ বুখারী-৫৪৪৩,সহীহ মুসলিম-৬০০)

দাড়ি মুন্ডানো হারাম।এবং একমুষ্টি থেকে কম দাড়ি রেখে অবশিষ্ট দাড়ি ছাঁটাই করাও হারাম।

এতে কবীরা গুনাহ হবে। (জাওয়াহিরুল ফিকহ-৭/১৬০)

عن ابن عمر  : عن النبي صلى الله عليه و سلم قال ( خالفوا المشركين وفروا اللحى وأحفوا الشوارب  . وكان ابن عمر إذا حج أو اعتمر قبض على لحيته فما فضل أخذه

হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-তোমরা মুশরিকদের বিরোধীতা কর। দাড়ি লম্বা কর। আর গোঁফকে খাট কর।

আর ইবনে ওমর রাঃ যখন হজ্ব বা ওমরা করতেন, তখন তিনি তার দাড়িকে মুঠ করে ধরতেন, তারপর অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলতেন। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৫৫৩}

আরো জানুনঃ

https://ifatwa.info/3975/

https://ifatwa.info/21888/

https://ifatwa.info/1039/

کان حلق اللحیۃ محرّما عند ائمۃ المسلمین المجتہدین أبی حنیفۃ، ومالک، والشافعی، وأحمد وغیرھم -رحمہم اللہ تعالیٰ-“․ (المنہل العذب المورود، کتاب الطہارۃ، أقوال العلماء فی حلق اللحیۃ واتفاقہم علی حرمتہ: 1/186، موٴسسۃالتاریخ العربی، بیروت، لبنان)

সারমর্মঃ চার মাযহাব এই বিষয়ে একমত যে সমস্ত মুসলমান মুজতাহিদিনের নিকটে দাড়ি কাটা হারাম।

وأما تقصیرُ اللحیۃ بحیثُ تصیرُ قصیرۃ من القبضۃ، فغیرُ جائزٍ فی المذاھب الأربعۃ“․ (العرف الشذی، کتاب الآداب، باب ما جاء فی تقلیم الأظفار، 4/162، دار الکتب العلمیۃ)

এক মুষ্ঠি থেকে কম রেখে দাড়ি কাটা চার মাযহাবের সম্মতিক্রমে নাজায়েজ। 

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ইন্টারভিউ এর জন্য বা শত্রুদের থেকে ক্ষতির আশংকা থাকলে এক মুষ্ঠি থেকে কম রেখে দাড়ি কাটা জায়েজ হবেনা। এক মুষ্ঠি থেকে কম কাটা যাবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লাম বলেছেন,

 ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺇﻧﻤﺎ ﺍﻟﻄﺎﻋﺔ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻌﺮﻭﻑ

 গোনাহের কাজে কারো অনুসরণ করা যাবে না,অনুসরণ একমাত্র নেককাজ সমূহেই করা যাবে। (সহীহ বুখারী-৭২৫৭,সহীহ মুসলিম-১৮৪০)

প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনি ভাই/বোন!

১. স্বপ্নে কাউকে ভালো দেখার ব্যাখ্যা হলো যে, আল্লাহ তায়ালা তার সাথে উত্তম মুআমালা করেছেন এবং স্বপ্নে কাউকে মন্দ অবস্থায় দেখার অর্থ হলো যে, তিনি কষ্টে আছেন। এজন্য তার জন্য দান সদাকা করার পাশাপাশি ঈসালে সাওয়াবের উদ্দেশ্যে অন্যান্য আমলগুলো করার চেষ্টা করা। যিনি স্বপ্ন দেখেছেন তার আমল বাড়িয়ে দিতে হবে, দ্বীনদার লোকদের সাথে উঠাবসা করতে হবে, পবিত্র হালতে থাকতে হবে, অহংকার থেকে বেঁচে থাকতে হবে। বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত, যিকির আযকার,ফরজ সহ নফল নামাজ পড়তে হবে। দান ছদকাহ করতে হবে। স্বপ্নের কথা কাউকে বলা যাবেনা।

২. প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার স্বামীর জন্য দাড়ি কাটা জায়েজ হবেনা। যদি তিনি দাড়ি কাটেন বা এক মুষ্ঠি থেকে ছোট করেন, তাহলে এতে তার কবিরা গুনাহ হবে। তিনি তওবা ইস্তেগফার চালিয়ে যাবেন। তিনি যেহেতু আপনার স্বামী, তাই তার সাথে কথা বলা বন্ধ করা জায়েজ নয়। আপনি তার সাথে উত্তম ব্যবহার চালিয়েই যাবেন। 

নিরাশ হওয়া যাবে না। ভালোবাসার সাথে স্বামীকে বুঝাতে থাকবেন এবং তার হেদায়াতের জন্য তাহাজ্জুদের পর খুব বশী পরিমাণে দোয়ার আমল চালিয়ে যেতে হবে। ফায়দা হবে যদি কোন আলেমের সোহবতে স্বামীকে পাঠাতে পারেন।

চাকুরির জন্য দাড়ি শেভ করা শর্ত দিলে এ চাকুরী করবেন না: শাইখ ইবন বায রহ. বলেন, যদি কাউকে কোনো কোম্পানী বা মালিক এ শর্তে কাজ দেয় যে, দাড়ি শেভ করতে হবে, তাহলে সে যেন আল্লাহকে ভয় করে এ দাড়ি শেভের শর্তে একমত না হয় এবং এ কাজ না নেয়। কেননা, রিযিকের বহু পথ রয়েছে, এ পথ বন্ধ নয়, বরং সর্বদা খোলা।

বিস্তারিত জানুনঃ  https://ifatwa.info/8537/ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...