আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
38 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম,,
আমাদের বিয়ে হয় ৩ বছর। গত একবছর আমাদের অনেক সমস্যা গিয়েছে। আমি ওকে সহ্য করতে পারতাম না,ও হুটহাট রেগে যেত, শারীরিক সম্পর্কে আমার প্রচন্ড অনীহা, সামান্য কারণে আমাকে মারধর করতো অথচ পরে বলতো সে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলো। বেশিরভাগ চান্দ্র মাসের শেষ,অমাবস্যায় এ সমস্যাগুলো বাড়তো।
আমরা একজন আলেম অভিজ্ঞ রাক্বীর কাছ যাই। তিনি ডায়াগনোসিস করান ও বলেন আমাদের উপর বিচ্ছেদ এর জাদু করা হয়েছে,  আমার উপরে একটা আশিক জ্বীন পাঠানো হয়েছে সেটা আমার স্বামীর ক্ষতি করবে, আমাদের সম্পর্ক নষ্ট করবে। বিচ্ছেদের জাদুর  প্রভাব ওর ( স্বামীর)  উপরেও আছে, বেশি ভুক্তভোগী আমি, আমার আমল দুর্বল । অন্য একজন রাক্বী ও আগে এমন বলেছিলেন।
রুকইয়াহ করার সময় দুজন এরই রিয়কশন হতো।  আমরা চিকিৎসা চালাচ্ছি।  আমার প্রচন্ড ওয়াসওয়াসা হয় যে ওর কাছে থেকে চলে যাই, ভালো জীবন পাবো। ওরও মাথায় ঘন ঘন চিন্তা আসে তালাকের, কোনো কোনো সময়ে দুজনের উপরই প্রভাব কাজ করে।  তখন সামান্য কথাতেই বলতো তালাক দিয়ে দিবো, ছেড়ে দিবো,, আমিও বলতাম দাও। অথচ পরে আমরা নিজেরাই কষ্ট পেতাম ও  অবাক হতাম যে এগুলো কি বলছি, কেন বলছি।
গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে আমার মারাত্মক খারাপ লাগা শুরু হয়,অনেক কষ্ট হচ্ছিল কান্নাকাটি করছিলাম । কোনো অসুস্থতা না, জাদুর প্রভাব। মাগরিবের সালাতও পড়তে পারি নি ঠিকমতো। আমি একটু ভালো ফিল করার জন্য হাটতে বার হই। ও আমার পিছনে বের হয়, আমি বারবার বলছিলাম চলে যাও, আমার খারাপ লাগছে ও সাথে সাথে হাঁটে।  একপর্যায়ে আমাদের কথা কাটাকাটি হয়, ও আর আমি প্রচুর উল্টাপাল্টা কথা বলি রাস্তায় দাড়ায়ে। হুট করে ও বলে ফেলে 'তালাক'। এরপরই এসে  বলে বাসায় চলো আজকে আমাকে তুমি মারবা, যেভাবে আমি আগে মারছি। আমিও বাসায় গিয়ে ওকে মারি  ও চুপচাপ সহ্য করে। পুরা ঘটনা ১০ -১৫ মিনিট এ হয়। পরিবারের সবাই প্রচন্ড বকাবকি করে যে এটা নরমাল  আচরণ না, দুজনকেই পুলিশে ধরায় দিবে।  আমরাও কিভাবে যেন এসব করে ফেলছি।
( বিচ্ছেদের জাদু চলাকালীন এর আগেও  গত কুরবানির পর জাদু নবায়নের রাতে আমাদের মধ্যে রক্তারক্তি কান্ড হয়,যেখানে দুজনেরই কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিলো না।)
উস্তায, মেহেরবানী করে জানাবেন তালাক পতিত হয়েছে কি না।।
আমরা অনেক চিন্তায় - পেরেশানীতে আছি।

1 Answer

0 votes
by (60,240 points)

ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকা-তুহু।

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/42398/ নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,

তালাক এটি খুবই মারাত্মক  একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে।


হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যেআল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক। (আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।)


এ শব্দটি নিয়ত থাকুক বা না থাকুক রাগে বলুক আর ভালবেসে বলুক স্ত্রীকে উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ দিয়ে এ শব্দ বের হলেই তালাক পতিত হয়ে যায়।

হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪} হেদায়া ২/৩৮৭) গ্রন্থে আছেঃ


উল্লেখ রয়েছে-

فالصریح قوله انت طالق ومطلقۃ وطلقتک فهذا يقع الطلاق الرجعي ولا یفتقر الى النيۃ ولا يقع به الا واحدۃ وان نوی اكثر من ذلك۔

সারমর্মঃ  স্পষ্ট বাক্যে তালাক দিলে এক তালাকে রজয়ী পতিত হয়। এক্ষেত্রে নিয়তের দিকে মুহতাজ হতে হবেনা।

এক্ষেত্রে একের বেশির নিয়ত করলেও এক তালাকই পতিত হবে।


আরো জানুনঃ

https://ifatwa.info/26032/


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!


১. উক্ত প্রশ্নের মধ্যে “তালাক দিয়ে দিবো, ছেড়ে দিবো” বলার দ্বারা কোনো তালাক পতিত হবে না।

২. প্রশ্নে উল্লেখিত সুরতে (তালাক বলার দ্বারা) স্ত্রীর উপর এক তালাকে রজয়ী পতিত হয়েছে। সে তার ইদ্দত চালাকালিন সময়ের মধ্যেই তাকে মৌখিক ভাবে 'ফিরিয়ে নিলাম' বললেই ফিরিয়ে নেওয়া হয়ে যাবে। অথবা তার সাথে স্বামী সুলভ আচরণ করলেও ফিরিয়ে নেয়া হবে।

আর ইদ্দতকাল অতিবাহিত হওয়ার পর ফিরিয়ে নিতে চাইলে পুনরায় বিবাহ পড়িয়ে নিতে হবে।

প্রশ্নে উল্লেখিত সুরতে যদি স্বামী-স্ত্রী সরূপ আচরণ করে থাকে তাহলে এটা সাভাবিক হয়ে গিয়েছে। তাই পেরেশানীর কোনো কারণ নেই। তবে পরবর্তীতে স্বামী আর দুই তালাকের মালিক থাকবে এবং খুব সতর্ক থাকবে। যাতে করে আর এমন না হয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...