আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
34 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (2 points)
১। আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। আমি ছোট এক বাচ্চা নিয়ে স্বামীর সাথে সৌদি আরবে থাকি। আমাদের মা মেয়ের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আমাদেরকে দেশে ফিরতে হবে, মেয়ের বাবাকে ছাড়াই। দেশে গিয়ে পুনরায় ভিসা করতে হবে। মেয়ের বাবা বছরে একবার একমাসের ছুটি পান, এ বছর তা কাটানো শেষ, তাই এবছর আর ছুটি পাবেন না। আমাদের মা মেয়েকে তাই মাহরাম ছাড়া সফরে যেতে হবে। বিমানের টিকিট কাটা হয়েছে রাতের, দিনে কোনো বিমানের টিকিট পাওয়া যায়নি। এক্ষেত্রে একান্ত বাধ্য হয়েই যেতে হচ্ছে মাহরাম ছাড়া, গুনাহ হবে কি? আমার নিজের করার কিছু নেই এখানে!
২। আমার স্বামী দেশে থাকা অবস্থায় ই একবার বাবার বাড়ি থেকে আমাকে নন-মাহরামের (দেবর) সাথে স্বামীর বাসায় ফিরতে হয়েছে। স্বামীর ব্যস্ততা থাকায় নিতে যেতে পারেননি।  আমার বাবাও বাড়ি থাকেন না, চাকরির জন্য অন্য শহরে থাকেন (মাহরাম এর বিষয়ে বুঝও নেই)। নতুন বিবাহিত হওয়ায় ঝামেলা হয় কিনা এই আশংকায় আমি তখন দ্বিমত করিনি। এক্ষেত্রে আমার গুনাহ হবে কিনা?

গর্ভাবস্থায় মাহরাম ছাড়াই মায়ের সাথে বাবার বাড়িতে গিয়ে থেকেছিলাম কিছুদিন, গুনাহ হয়েছে? যদিও মাহরাম অনুমতি দিয়েছিলেন!!

৩। আমার স্বামী বিদেশে যখন প্রথম আসেন তখন একাই আসেন। দেশে আমি আমার বাচ্চা নিয়ে দেবর ননদের সাথে ছিলাম, শশুর-শাশুড়ি জীবিত নেই। স্বামীর বাসায় মাহরামহীন পরিবেশে থাকা যায়? কখনো কখনো ননদ ও বাসায় থাকতোনা দিনের বেলায় পড়াশোনার জন্য, দেবর তার প্রয়োজনে থাকতেন। (বাসায় পর্দার ব্যবস্থা আছে, আমি দেবরের সামনে যাইনা।)

এই সময়টায় আমাকে বাবার বাড়ি, শশুর বাড়ি মাহরাম ছাড়া নন-মাহরামের সাথে সফর করতে হয়েছে। এক্ষেত্রে গুনাহ হয়েছে?
৪। স্বামী বিদেশ থেকে দেশে ফিরার পর তাদের গ্রামের বাড়িতে আমাকে প্রথমবার দেবর ননদের সাথে একাই শশুরবাড়ি পাঠাতে চেয়েছিলেন, আমি রাজি না হওয়ায় তার সাথেই আমাকে নিয়ে যান। কিন্তু ফেরার সময় তিনি আমার মতামত না নিয়েই সবার সামনে জানিয়ে দেন আমাকে দেবর ননদের সাথেই ফিরতে হবে একা। বাধ্য হয়ে ফিরেছিলাম। আমার গুনাহ হয়েছে?

৫। বিয়ের আগে মাহরামহীন ভাবে পড়াশোনার জন্য বা অন্য কাজে একাকী সফর করতে হয়েছিল। সফরগুলো দিনেই ছিলো। আমার গুনাহ হয়েছে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

কোনো নারীর জন্য দুরবর্তি সফর (৭৮ কিলোমিটার)  মাহরাম পুরুষ ছাড়া সফর করা জায়েজ নেই।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: لَا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِاِمْرَأَةٍ وَلَا تُسَافِرَنَّ امْرَأَةٌ إِلَّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ. فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ اكْتُتِبْتُ فِىْ غَزْوَةِ كَذَا وَكَذَا وَخَرَجَتِ امْرَأَتِىْ حَاجَّةً قَالَ: اِذْهَبْ فَاحْجُجْ مَعَ اِمْرَأَتِكَ. (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

 [‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন পুরুষ যেন কক্ষনো কোন স্ত্রীলোকের সাথে এক জায়গায় নির্জনে একত্র না হয়, আর কোন স্ত্রীলোক যেন কক্ষনো আপন কোন মাহরাম ব্যতীত একাকিনী সফর না করে। তখন এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রসূল! অমুক অমুক যুদ্ধে আমার নাম লেখানো হয়েছে। আর আমার স্ত্রী একাকিনী হজের উদ্দেশে বের হয়েছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যাও তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্জ/হজ করো।

সহীহ : বুখারী ৩০০৬, মুসলিম ১৩৪১, আহমাদ ১৯৩৪, সহীহ ইবনু খুযায়মাহ্ ২৫২৯, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১০১৩৪, সহীহ ইবনু হিব্বান ৩৭৫৭।

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ الثَّقَفِيُّ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَا يَحِلُّ لِامْرَأَةٍ مُسْلِمَةٍ تُسَافِرُ مَسِيرَةَ لَيْلَةٍ، إِلَّا وَمَعَهَا رَجُلٌ ذُو حُرْمَةٍ مِنْهَا

আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো মুসলিম নারীর জন্য সাথে মাহরাম (যার সাথে বিবাহ হারাম এমন আত্মীয়) ছাড়া এক রাতের রাস্তা সফর করা বৈধ নয়।
(আবু দাউদ ১৭২৩)

বিস্তারিত জানুনঃ  

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে মাহরাম পুরুষ ছাড়া এভাবে দেশে আসার দরুন আপনার গুনাহ হবে।

(০২)
এক্ষেত্রে আপনার বাবার বাসা হতে স্বামীর বাসার দূরত্ব ৭৮ কিলোমিটার থেকে কম হলে ও ফিতনা মূলক কোনো কাজ না হলে,রাস্তা নিরাপদ থাকলে সেক্ষেত্রে আপনার গুনাহ হয়নি।

অন্যথ্যায় গুনাহ হয়েছে।
তওবা আবশ্যক। 

★আপনার বাবার বাসা হতে স্বামীর বাসার দূরত্ব ৭৮ কিলোমিটার থেকে কম হলে মায়ের সাথে বাবার বাসায় আসায় কোনো গুনাহ হয়নি।

তবে দূরত্ব ৭৮+ কিলোমিটার হলে সেক্ষেত্রে আপনার গুনাহ হয়েছে।
তওবা আবশ্যক। 

(০৩)
পরামর্শ থাকবে, আপনি তওবা করে নিবেন।

(০৪)
২ নং প্রশ্নের জবাব দ্রষ্টব্য।

(০৫)
পড়াশোনার জন্য সেই সফরের দূরত্ব ৭৮ কিলোমিটার থেকে কম হলে ও ফিতনা মূলক কোনো কাজ না হলে,রাস্তা নিরাপদ থাকলে সেক্ষেত্রে আপনার গুনাহ হয়নি।

অন্যথ্যায় গুনাহ হয়েছে।
তওবা আবশ্যক। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 130 views
...