আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
52 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (55 points)
১. আমি গতরাতে আইলিনার ইউজ করেছিলাম যেটা চোখের পাপড়িতেও লেগে যায়। যখন ফজরের নামাজের ওজু করি তখন এসে খেয়াল করি চোখে এখনি আইলিনার লাগানো আছে। তাই আবার ওজু করে আসি চেক করে দেখি আর কোনো আইলিনার চোখে নাই। যথারীতি ঐদিনে জোহর,আসর, মাগরিব,এশা সব নামাজই আদায় করি। বাট ঘুমানোর আগে মনে হতে থাকে চোখের মাঝের দিকের উপরের পাপড়িতে হঠাৎ মনে হয় কি যেন লেগে আছে । ভালোভালে পাপড়ি বার বার নখ দিয়ে আচড়ানোর পর দেখি কালো আবরনের মতো কিছু পাপড়িতে লেগে ছিলো হয়তো আইলিনার সঠিক বলতে পারছিনা সারাদিনেও এমনটা মনে হয়নি যে পাপড়িতে কিছু লেগে আছে রাতে দেখি এদিকে আইলিনার ওয়াটারপ্রুফ কিনা তাও আমি জানিনা পাপ্রিতে পানি পৌআেছে কিনা শিওরনা। এখন জানতে চাচ্ছি পাপড়িতে এরূপ কালো আবরন লেগে থাকার কারনে আমি দিনে যে নামাজগুলো আদায় করেছি ঐগুলো কি সঠিক হয়েছে? ওজু কি হয়েছে? এখন কি করনীয়?

২. আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকি। আমি যে সীটে থাকি ঐ সীটে আমি আসার আগে একজন আপু থাকতো। আপু জিনিসপত্র নিয়ে বাড়ি চলে যাওয়ার সময় আমাকে তার ব্যবহৃত  কিছু থালাবাটি ও আরো কিছু জিনিসপত্র দিয়ে যায়। কিন্তু ঐ আপুর হাসবেন্ড আবার ব্যাংকে ভালো পোস্টে চাকরি করে। এখন আপুর দেয়া পুরাতন জিনিসপত্রগুলো ব্যবহার করা কি আমার জন্য জায়েজ হবে? ঐজিনিসগুলো কি করবো?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

পবিত্রতা (অযু/গোসল) ব্যতীত নামাজ কবুল হবে নাঃ

 عَنْ اَبِى الْمَلِيْحِ عَنْ اَبِيْهِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّي اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم: لَا يَقْبَلُ اللهُ صَلَاةً بِغَيْرِ طُهُوْرٍ وَلَا صَدَقَةً مِنْ غُلُوْلٍ 

– অর্থঃ হযরত আবূ মালিহ তাঁর পিতা (উসামা রাযি.) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:- আল্লাহ্ তা’আলা পবিত্রতা ব্যতীত নামাজ কবুল করবেন না এবং অবৈধ সম্পদের সাদকাও কবুল করবেন না। (সুনানে নাসাঈ হাদীস নং-০৬)

অজুর ক্ষেত্রে অজুর অঙ্গগুলো এবং ফরজ গোসলের ক্ষেত্রে পুরো শরীর পরিপূর্ণভাবে পানি দ্বারা ভেজানো আবশ্যক।
যদি কোনো অংশ না ভিজে,তাহলে অযু,গোসল হবেনা।

আল্লামা মুহাম্মদ বিন সালেহ আল উসাইমিন (রহ.) বলেন, ‘মানুষ যদি পবিত্রতা অর্জনের অঙ্গে তৈলাক্ত বস্তু (তেল, ক্রিম) ব্যবহার করে, তাহলে দেখতে হবে যদি উক্ত তৈলাক্ত বস্তুটি জমাট বাঁধা ও আবরণবিশিষ্ট হয়, তাহলে পবিত্রতা অর্জনের পূর্বে অবশ্যই তা দূর করতে হবে। যদি তৈলাক্ত বস্তু সেভাবেই জমাট বাঁধা অবস্থায় থেকে যায়, তাহলে তা চামড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছতে বাধা দেবে। এতে করে তখন পবিত্রতা শুদ্ধ হবে না।

কিন্তু যদি তৈলাক্ত বস্তুটির কোনো আবরণ না থাকে কিন্তু পবিত্রতার অঙ্গগুলোর ওপর সেগুলোর চিহ্ন অবশিষ্ট থেকে যায়, তাহলে তাতে কোনো ক্ষতি নেই। কিন্তু এ অবস্থায় ওই অঙ্গের ওপর হাত ফিরিয়ে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কেননা সাধারণত তৈলাক্ত বস্তু থেকে পানি আলাদা থাকে। সুতরাং হতে পারে, পবিত্রতার ক্ষেত্রে পুরো অঙ্গে পানি পৌঁছবে না।’ (ফাতাওয়াত তাহারাহ, পৃষ্ঠা : ১৭৪)

 ★সাধারন তৈল,যেখানে শরীরে আবরন পড়েনা,এগুলো লাগানোর ছুরতে অযু,গোসল হয়ে যাবে।

তবে এই  অবস্থায় অজু বা গোসলের সময় যথাসম্ভব হাত দিয়ে অজুর স্থানগুলো ও শরীরের বিভিন্ন স্থান ভালো করে ঘষে দেওয়া উচিত। যেন যথাস্থানে পানি পৌঁছতে সন্দেহ না থাকে।
,
আর বডি বাটার, লোশন, গ্লিসারিন, ইত্যাদি ব্যবহার করে,শরীরে আবরন না পড়ে,তাহলে তো কোনো সমস্যাই নেই। 

তবে যদি শরীরে আবরন পড়ে,তাহলে এগুলো লাগানোর ছুরতে অযু,গোসল হবেনা।

তবে এই অবস্থায় অজু বা গোসলের সময় হাত দিয়ে অজুর স্থানগুলো ও শরীরের বিভিন্ন স্থান ভালো করে ঘষে দিতে হবে। যেন যথাস্থানে সঠিক ভাবে পানি পৌঁছতে পারে।

বিস্তারিত জানুনঃ 

অযু ও গোসলের ক্ষেত্রে চোখের পশম বা পাপড়িতে পানি পৌঁছা ওয়াজিব। যেহেতু এটি চেহারার গণ্ডিতে রয়েছে; যা ধৌত করার আদেশ এসেছে। অনুরূপভাবে চোখের ভ্রূ, গালের পশম, মোচ ও দাড়ি ধৌত করতেও আদিষ্ট।

আর-রওদুল মুরবি গ্রন্থে বলা হয়েছে, চেহারাতে বিদ্যমান হালকা চুল যার নীচ দিয়ে চামড়া দেখা যায় তা ধৌত করবে। যেমন: চোখের পশম, মোচ ও নিম দাড়ি। কেননা সেগুলো চেহারার অন্তর্ভুক্ত। [আল-মাজমু : ১/৩৭৬; মাওয়াহিবুল জালিল : ১/১৮৫)]

উপরোক্ত  আলোচনার প্রেক্ষিতে যদি আইলিনার ব্যবহার করার দরুন চোখের পাপড়িতে  পানি পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত না করে তাহলে অজু শুদ্ধ। 

আর যদি পানি পোঁছার ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত করে, তাহলে অজু ও গোসল করার আগে আইলিনার অপসারণ করা ওয়াজিব। কেননা অজু-গোসল শুদ্ধ হওয়ার জন্য শর্ত হলো যা কিছু অজুর অঙ্গে পানি পৌঁছাকে বাধাগ্রস্ত করে সেটাকে অপসারণ করা।

ইমাম নববী বলেন, যদি কোন অঙ্গের কোন অংশে মোম, আঠা কিংবা মেহেদি এ জাতীয় কিছু লেগে থাকে; যা অঙ্গটির কিছু অংশে পানি পৌঁছাকে বাধাগ্রস্ত করে তার পবিত্রতা অর্জন সহিহ হবে না; চাই সেটি পরিমাণে বেশি হোক কিংবা কম হোক। (আল-মাজমু :  ১/৪৯২)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত আইলিনার ওয়াটারপ্রুফ হয়ে থাকলে ঐ নামাজ গুলি সহীহ হয়নি।

পুনরায় আদায় করতে হবে।

এক্ষেত্রে উক্ত আইলিনার ওয়াটারপ্রুফ কিনা,জানার জনু সংশ্লিষ্ট বিষয়্র বিজ্ঞ দের থেকে জেনে নিবেন।

জেনে নেয়া সম্ভব না হলে সতর্কতামূলক সেই নামাজ গুলির কাজা আদায় করে নিবেন।

(০২)
সেই বোন থেকে জেনে নিতে হবে যে ঐ জিনিসগুলো তার হাসবেন্ড এর ব্যাংকের বেতনের টাকায় কেনা?
নাকি তার বাবার বা অন্য কাহারো টাকায় কেনা?

যদি তার স্বামীর ব্যাংকের বেতনের টাকায় কেনা না হয়,সেক্ষেত্রে ঐ জিনিসগুলো আপনি ব্যবহার করতে পারবেন।

আর যদি তার স্বামীর ব্যাংকের বেতনের টাকায় কেনা হয়,সেক্ষেত্রে ও-ই জিনিসগুলো কোনো গরিবকে দিয়ে দিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 204 views
...