আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
35 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (18 points)
আসসালামু আলাইকুম

আমার এক ভাই, তিনি ব্যাবসা করেন। তাঁর প্রতিঠানের মার্কেট বকেয়া ও মালামাল বিক্রয়ের টাকা একজন সেলস ম্যান নিয়ে পালিয়ে যায়। ঐ ব্যক্তির সঙ্গে বিভিন্ন ভাবে যোগাযোগ করা হলেও সেটা সম্ভপর হয় না। এমনকি তার মা বোনের কাছে সন্তান ফেরেস্তা তুল্য যে, টাকা নিয়ে পালিয়ে যেতে পারে না!
উল্লেখ্য যে ঐ সেলস ম্যানকে একবার ডেকে আনা সম্ভব হয়েছিল এবং তাঁর মোবাইল রেখে দেওয়া হয়েছিল।
টাকা দিয়ে মোবাইল ব্যাক নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হলেও সে সেটা করে না। অস্বীকার করে আসতে যে, ফোন তো নিয়েই নিছেন টাকা দেব কেন? সে ১০০০০+ টাকা নিয়েছে। এবং তাঁর ফোনের মূল্য ১৫০০-২০০০ হবে।
এখন আমার ভাই্‌ তিনি ঐ ফোন বিক্রি করে দিতে চাচ্ছেন। আমি বলেছি, জামানতের জিনিস থেকে উপকার ভোগ করা যায় না।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে এমন পরিস্থিতে ঐ মোবাইল কি বিক্রি করে দিতে পারবেন তাঁর ক্ষতি পুশিয়ে নিতে ? যদি এমন হয়, ছেলেটা এসে তাঁর মোবাইল ব্যাক চাইলো আবার- টাকা দিয়ে ?
আমাদের করণীয় কী ?

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব:-

ইসলামী শরীয়াহ মতে, লেনদেনের ক্ষেত্রে চুক্তির শর্তানুযায়ী শরীয়াহ সম্মত কোনোরুপ বিনিময় ব্যতীত মূলধনের উপর অতিরিক্ত যা কিছু গ্রহণ করা হয় তাকে সুদ বলে।

ঋণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ২ টি বিষয় হলোঃ 

*ঋণ দানের শর্ত হিসেবে মূলধনের অতিরিক্ত কোনো কিছু আদায় করা।

*অতিরিক্ত যা কিছু আদায় করা হয় তার শরীয়াহ সম্মত কোনো বিনিময় না থাকা।

আল্লাহ তায়ালা বলেন

يا ايها الذين امنوا لا تاكلوا الربا اضعافا مضاعفه واتقوا الله لعلكم تفلحون

 ‘হে মুমিনগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খেও না। আল্লাহকে ভয় করো। তাহলে তোমরা সফল হতে পারবে। ’ -সূরা আল ইমরান: ১৩০

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عبد الله بن مسعود عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعن الله آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-“যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, তার সাক্ষী যে হয়, আর দলিল যে লিখে তাদের সকলেরই উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)

নবী করিম (সা.) বলেন, ‘মুমিনের আত্মা ঝুলন্ত অবস্থায় রাখা হয় তার ঋণের কারণে, যতক্ষণ না তার পক্ষ থেকে ঋণ পরিশোধ করা হয়।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১০৭৮)

অন্যত্র তিনি বলেন, ‘সুবহানাল্লাহ! ঋণ প্রসঙ্গে কী কঠোর বাণীই না আল্লাহ অবতীর্ণ করেছেন। যার হাতে আমার জীবন তাঁর শপথ, ঋণগ্রস্ত অবস্থায় কেউ যদি আল্লাহর পথে শহীদ হয়, তারপর জীবিত হয়, তারপর শহীদ হয়, তারপর জীবিত হয়, তারপর আবার শহীদ হয়, তবু ঋণ পরিশোধ না করা পর্যন্ত সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। (নাসাঈ, হাদিস : ৪৬৮৪)

الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار)  (4/95):

"مطلب يعذر بالعمل بمذهب الغير عند الضرورة

(قوله: وأطلق الشافعي أخذ خلاف الجنس) أي من النقود أو العروض؛ لأن النقود يجوز أخذها عندنا على ما قررناه آنفًا. قال القهستاني: وفيه إيماء إلى أن له أن يأخذ من خلاف جنسه عند المجانسة في المالية، وهذا أوسع فيجوز الأخذ به وإن لم يكن مذهبنا؛ فإن الإنسان يعذر في العمل به عند الضرورة كما في الزاهدي. اهـ. قلت: وهذا ما قالوا: إنه لا مستند له، لكن رأيت في شرح نظم الكنز للمقدسي من كتاب الحجر. قال: ونقل جد والدي لأمه الجمال الأشقر في شرحه للقدوري أن عدم جواز الأخذ من خلاف الجنس كان في زمانهم لمطاوعتهم في الحقوق. والفتوى اليوم على جواز الأخذ عند القدرة من أي مال كان لا سيما في ديارنا لمداومتهم للعقوق."

الموسوعة الفقهية الكويتية  (4/153):

"وقال أبو حنيفة: له أن يأخذ بقدر حقه إن كان نقدًا أو من جنس حقه، وإن كان المال عرضًا لم يجز؛ لأن أخذ العوض عن حقه اعتياض، ولاتجوز المعاوضة إلا بالتراضي، لكن المفتى به عند الحنفية جواز الأخذ من خلاف الجنس."

 

সারমর্মঃ-ইমাম আবু হানিফা রহঃ বলেন তার হক সমপরিমাণ টাকা সে নিতে পারবে।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

পাওনা টাকা চাওয়ার পর ও বারবার চেষ্টার পরেও পাওনা টাকা না দিলে সেক্ষেত্রে উক্ত মোবাইল বিক্রয় করে নিজের পাওনা টাকা নেয়া যাবে। তবে এই বিষয়ের খেয়াল রাখতে হবে যে নিজের হক থেকে অতিরিক্ত যেনো উসুল না হয়।

উল্লেখ্য, মোবাইল বিক্রয় করার আগ দিয়ে মোবাইলের মালিককে জানাতে হবে যে আপনি টাকা পরিশোধ না করলে আপনার মোবাইল বিক্রয় করে আমি টাকা নিবো। যদি সে সম্মতির বিক্রির সম্মতি দেয় পরবর্তিতে সে কোন দাবী করলেও তাতে কোন কিছু আসে যায় না। এটি সম্পূর্ণ জায়েয। এতে কোন সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...