আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
59 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (9 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।
আমি একজন নারী।আমার জন্য অর্থ উপার্জন জরুরি।আমি চাচ্ছি ফ্রিল্যান্সিং করে উপার্জন করতে। কিন্তু আমি এ সম্পর্কে তেমন কিছু জানি না।টুকটাক জানার চেষ্টা করছি। এতে বুঝতে পারলাম যে এখানে হালাল হারাম দু ধরনের কাজই আছে। আমি জানতে চাচ্ছি
১. কোন সেক্টরটি শেখাই একদম হারাম?

২. কাজ নেওয়ার আগেই কি বোঝা যায় যে এই কাজটি হারাম?

৩. আমি একটা কাজ করলাম কিন্তু আমার অজান্তেই সেটা কোনো অনৈসলামিক কাজে সহায়তা হতে পারে এমন সম্ভাবনা আছে? এসব ক্ষেত্রে করণীয় কি?

৪.  অন্য একটি প্রশ্নের উত্তরে লেখা ছিল, "ফ্রিল্যান্সিং করার সময় কাজের বিনিময়কে সুস্পষ্ট রাখতে হবে"- এই কথাটি দ্বারা কি বুঝিয়েছে। যদি বিস্তারিত জানাতেন,তাহলে খুব উপকার হয়।

৫. সর্বোপরি ফ্রিল্যান্সিং করার হালাল-হারাম,জায়েজ-নাজায়েজ নিয়ে জানতে চাচ্ছি এবং আপনাদের সুপরামর্শ চাচ্ছি।

বি.দ্র. আমি অনলাইনে কয়েকটি গ্রুপে কাজ সম্পর্কে ১-৩ নং প্রশ্ন সম্পর্কে জানতে চেয়েছি, কিন্তু তেমন সদুত্তর পাইনি।আপনারা যদি এ ব্যপারে আমাকে নাসীহা করেন আমার খুব উপকার হয়।

ফ্রিল্যান্সিং করতে প্রথমত অর্থ ইনভেস্ট করতে হয়(কোর্স করা,ইকুয়েপমেন্ট কেনাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে) এবং সময় ও শ্রম দিতে হয়।আমি চাই না আমার অর্থ,সময় ও শ্রম বৃথা যাক।তাই আগেই সব জেনে নিতে চাচ্ছি। দেখা গেল একটা সেক্টরের কোর্স করলাম, শ্রম দিলাম কিন্তু সেই সেক্টরের অধিকাংশই হারাম। তাহলে আমার ঐসবই বৃথা।এমনিতেই আর্থিক সমস্যা আছে। সময়গুলোও খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ আমি দুই সন্তানের মা হব,একজন আছে আরেকজন আসবে ইনশাআল্লাহ।
আপনাদের সুপরামর্শ চাচ্ছি সবমিলিয়ে।
জাযাকুমুল্লাহু খইরন।

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)

ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকা-তুহু।

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/17254/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

মুসলিম অমুসলিম মু'আমালাত অর্থ্যাৎ কাজ-কর্মে প্রায় সবাই সমান। টাকার বিনিময়ে যেভাবে অমুসলিমকে শ্রমে নিয়োগ করা বৈধ। ঠিকতেমনি বৈধ কাজে মুসলমানের জন্য অমুসলিমের শ্রমে নিয়োগ হওয়াও বৈধ।


যেমন ফাতাওয়ায়ে শা'মী তে বর্ণিত রয়েছে,

ﻭﻟﻮ ﺁﺟﺮ ﻧﻔﺴﻪ ﻟﻴﻌﻤﻞ ﻓﻲ ﺍﻟﻜﻨﻴﺴﺔ ﻭﻳﻌﻤﺮﻫﺎ ﻻ ﺑﺄﺱ ﺑﻪ ﻷﻧﻪ ﻻ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﻓﻲ ﻋﻴﻦ ﺍﻟﻌﻤﻞ(ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺪﺭ ﺍﻟﻤﺨﺘﺎﺭ » ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺤﻈﺮ ﻭﺍﻹﺑﺎﺣﺔ » ﻓﺼﻞ ﻓﻲ ﺍﻟﺒﻴﻊ)

যদি কেউ কোনো গির্জায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করে,অথবা টাকার বিনিময়ে গির্জা নির্মাণ করে দেয়, তাহলে এতে তার কোনো গুনাহ হবে না। কেননা এখানে মূল কাজে কোনো প্রকার গোনাহ নেই।(রদ্দুল মুহতার,৬/৩৯২)


ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,

لَا بَأْسَ بِأَنْ يَكُونَ بَيْنَ الْمُسْلِمِ وَالذِّمِّيِّ مُعَامَلَةٌ إذَا كَانَ مِمَّا لَا بُدَّ مِنْهُ

মুসলমান ও অমুসলমানের মধ্যে মু'আমালা তথা ক্রয়-বিক্রয় ও লেনদেন সংগঠিত হওয়াতে কোনো সমস্যা নাই ,যদি এছাড়া অন্য কোনো রাস্তা না থাকে। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩৪৮)

 

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত সাইটে (ইসরাইলি ফ্রিল্যান্সিং সাইট Fiverr এ) শরীয়তের খেলাফ কোনো কাজ না থাকলে, এ কাজ করা জায়েজ আছে ইনকাম জায়েজ আছে।


আরো জানুনঃ

https://ifatwa.info/4997/

https://ifatwa.info/5281/

https://ifatwa.info/3425/


তবে যেহেতু তাদের এর দ্বারা তাদেরকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করা হয়, এবং শক্তিশালী অর্থনীতিকে কাজে লাগিয়ে তারা তাদের কার্যক্রম আরো বাড়িয়ে দিবে, ইসলাম বিরোধী কাজ,মুসলিমদের নিশ্চিহ্ন করার কাজ  আরো বেশি করবে। তাই একাজ করা থেকে আমাদের অবশ্যই বিরত থাকা চাই।

একাজ করে তাদেরকে সহযোগিতা করা ঠিক নয়। 


আল্লাহ তায়ালা বলেন

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢]

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}


হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ أَخْرَجَ مَرْوَانُ الْمِنْبَرَ فِي يَوْمِ عِيدٍ فَبَدَأَ بِالْخُطْبَةِ قَبْلَ الصَّلَاةِ فَقَامَ رَجُلٌ فَقَالَ يَا مَرْوَانُ خَالَفْتَ السُّنَّةَ أَخْرَجْتَ الْمِنْبَرَ فِي يَوْمِ عِيدٍ وَلَمْ يَكُنْ يُخْرَجُ فِيهِ وَبَدَأْتَ بِالْخُطْبَةِ قَبْلَ الصَّلَاةِ . فَقَالَ أَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ مَنْ هَذَا قَالُوا فُلَانُ بْنُ فُلَانٍ . فَقَالَ أَمَّا هَذَا فَقَدْ قَضَى مَا عَلَيْهِ سَمِعْتُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَنْ رَأَى مُنْكَرًا فَاسْتَطَاعَ أَنْ يُغَيِّرَهُ بِيَدِهِ فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهِ وَذَلِكَ أَضْعَفُ الإِيمَانِ "

আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা ‘ঈদের দিন মারওয়ান ঈদের মাঠে মিম্বার স্থাপন করে সলাতের পূর্বেই খুত্ববাহ শুরু করায় জনৈক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলেন, হে মারওয়ান! তুমি সুন্নাত বিরোধী কাজ করলে। তুমি ‘ঈদের দিন বাইরে মিম্বার এনেছো এবং সলাতের পূর্বেই খুত্ববাহ শুরু করেছো। অথচ ইতিপূর্বে (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও খুলাফায়ি রাশিদীনের যুগে) কখনো এমনটি করা হয়নি। আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, লোকটি কে? লোকজন বললো, অমুকের পুত্র অমুক। তিনি বললেন, সে তার দায়িত্ব পুরোপুরি পালন করেছে। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ কেউ কোন গর্হিত (শারী‘আত বিরোধী) কাজ সংঘটিত হতে দেখলে তাকে হাত দিয়ে প্রতিরোধ করবে। এরূপ করতে অক্ষম হলে তা কথার দ্বারা প্রতিহত করবে। যদি এতেও অক্ষম হয় তাহলে সে তা অন্তরে ঘৃণা করবে (বা তা দূর করার উপায় অন্বেষনে চিন্তা-ভাবনা করবে)। তবে এটি হচ্ছে দুর্বলতম ঈমানের পরিচায়ক।

(মুসলিম, ইবনু মাজাহ হাঃ ১২৭৫, হাঃ ৪০১৩), আহমাদ (৩/১০)


অপর হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: مَنْ رَأَى مُنْكَرًا فَاسْتَطَاعَ أَنْ يُغَيِّرَهُ بِيَدِهِ فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ - وَقَطَعَ هَنَّادٌ بَقِيَّةَ الْحَدِيثِ، وَفَّاهُ ابْنُ الْعَلَاءِ: - فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ، فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ بِلِسَانِهِ فَبِقَلْبِهِ، وَذَلِكَ أَضْعَفُ الْإِيمَانِ

আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ কেউ কোনো অন্যায় হতে দেখলে সে তা হাতের সাহায্যে দমন করতে সক্ষম হলে তা দ্বারা যেন প্রতিরোধ করে। ‘‘হান্নাদ’’ এ হাদীসের বাকী অংশ উল্লেখ করেনি। তবে ইবনুল আলা তা পূর্ণ করেছেন। তা হলোঃ যদি হাতের দ্বারা প্রতিরোধ করতে সক্ষম না হয়, তবে জিহ্বা দ্বারা আর যদি জিহ্বা দ্বারা প্রতিরোধ করতে সক্ষম না হলে তবে অন্তর দ্বারা, তবে এটা দুর্বল ঈমানের স্তর। (আবু দাউদ ৪৩৪০)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!


১. মহিলাদের জন্যও পরিপূর্ণ পর্দার সাথে ফ্রিল্যান্সিং (উক্ত ফ্রিল্যান্সিং সাইটে) শরীয়তের খেলাফ কোনো কাজ না থাকলে করা জায়েজ।

শরীয়ত বিরোধী কোনো কাজ থাকলে জায়েজ নয়যেমন, প্রাণির ছবি অঙ্কন, হারাম জিনিস মদ ইত্যাদিকে সাপোর্ট বা বিক্রয়ের এড তৈরী করা।

২-৩. কাজ নেওয়ার আগে দেখবেন যে, শরীয়ত বিরোধী কাজ আছে কি না।

৪. অর্থাৎ আপনি ঐ কাজটা করলে সে কত টাকা দিবে তা স্পষ্ট হতে হবে।

৫. আরো বিস্তারিত আমাদের ওয়েবসাইট থেকে জেনে নিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...