ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া
বারাকাতুহু
বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম
জবাব:-
পশু বর্গা দেওয়ার বৈধ পদ্ধতি সম্পর্কে বলা হয় যে,
والحیلة فی ذلک أن یبیع نصف البقرة من ذلک الرجل ونصف الدجاجة ونصف
بذر الفیلق بثمن معلوم حتی تصیر البقرة وأجناسھا مشترکہ بینھما فیکون الحادث بینھماعلی
الشرکة کذا فی الظھیریة(فتاوی عالمگیری ۲: ۳۳۵)۔
যার কাছে বর্গা দিতে চাচ্ছে তার সাথে এভাবে চুক্তি
করবে যে, তুমি এক বছর আমার পশুটি
লালন পালন কর,
আমি
তোমাকে কথার কথা একশত টাকা দিব। তারপর এক বছর পর যদি মালিক বাছুর নিতে চায়, তাহলে একশত টাকা পরিশোধ
করে বাছুর নিয়ে নিবে। আর যদি লালনপালনকারী বাছুর নিতে চায়, তাহলে একশত টাকা নেবার
বদলে বাছুরটি নিয়ে নিবে উভয়ের সন্তুষ্টিতে। এভাবে চলতে থাকলে এতে কোন শরয়ী বিধিনিষেধ
নেই।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-২/৩৩৫)
তবে হাকীমুল উম্মত আশরাফ আলী থানবী রহঃ বলেছেন-এ
পদ্ধতিটি হাম্বলী মাযহাবে জায়েজ। তাই কোন এলাকায় যদি এটি ব্যাপক প্রচলন হয়, আর এ ছাড়া আর কোন পদ্ধতি
সহজ না হয়,
তাহলে
উক্ত পদ্ধতিটি হাম্বলী মাযহাব অনুযায়ী আমাদের মাযহাবেও জায়েজ হিসেবে করা যাবে। {ইমদাদুল ফাতওয়া-৩/৩৪২-৩৪৩}
فى مجموعة فتاوى ابن تيمة-لو دفع دابته أو
نخله إلى من يقوم به وله جزء من ثمانية صح. وهو رواية عن أحمد عن اختيارات 145،
146 ف 2/ 220، (مجموعة فتاوى ابن تيمة، كتاب البيع، باب الشركة
মোটকথা দুটি জায়েয পদ্ধতি রয়েছে:-
১ম পদ্ধতি: যে পশুটি বর্গা দিতে চাচ্ছে, একটি নামমাত্র দাম ধরে
যার কাছে বর্গা দিতে চাচ্ছে তার কাছে অর্ধেক পশুটি বিক্রি করে দিবে। আর যে টাকাটি বিক্রি
হিসেবে মালিক পেল তা এক বা দুই বছর নির্ধারিত করে লালন পালনের মুজুরী হিসেবে পশু গ্রহিতাকে
প্রদান করবে। এখন উভয়ে উক্ত পশুটির অর্ধেক অর্ধেক মালিক। সে হিসেবে পশুটির বাচ্চা ও
দুধ ইত্যাদি সমান সমান ভোগ করতে পারবে। শরয়ী কোন সমস্যা এতে নেই।
২য় পদ্ধতি: যার কাছে বর্গা দিতে চাচ্ছে
তার সাথে এভাবে চুক্তি করবে যে, তুমি এক বছর আমার পশুটি লালন পালন কর, আমি তোমাকে কথার কথা একশত
টাকা দিব। তারপর এক বছর পর যদি মালিক বাছুর নিতে চায়, তাহলে একশত টাকা পরিশোধ
করে বাছুর নিয়ে নিবে। আর যদি লালনপালনকারী বাছুর নিতে চায়, তাহলে একশত টাকা নেবার
বদলে বাছুরটি নিয়ে নিবে উভয়ের সন্তুষ্টিতে। এভাবে চলতে থাকলে এতে কোন শরয়ী বিধিনিষেধ
নেই।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
না, এভাবে পশু বর্গা দেয়া শরীয়ত সম্মত
নয়।
তবে
একটি জায়েজ পদ্ধতি আছে। সেটি হল, প্রথমে পশুর মালিক বাছুরটি ক্রয় করে যে লালন পালন করবে, তাকে বলবে যে, আমি তোমার কাছে আমার পশুটির
অর্ধেক বাকিতে বিক্রি করে দিলাম। বিক্রির মূল্য ধরবে যতটাকা দিয়ে পশুটি ক্রয় করেছিল
তত টাকা।
অর্ধেকের মূল্য পরিশোধ করবে পরবর্তীতে। এবার লালনপালনকারী
উক্ত পশুর অর্ধেকের মালিক হয়ে গেল। পশুটির লালন পালনের অর্ধেক খরচ মূল মালিক বহন করবে। তারপর যখন উক্ত পশুটি
বড় হবে। বিক্রি করা হবে,
তখন
প্রথমে ঋণ আদায় হিসেবে পশুটির মূল্য পরিশোধ করা হবে। বাকি টাকা উভয়ের মাঝে সমান হারে
বন্টন করে নিবে।
এভাবে
লেনদেন ও চুক্তি করলে তা শরীয়ত সিদ্ধ হবে।
উদাহরণতঃ আব্দুল্লাহ দশ হাজার টাকা
দিয়ে একটি বাছুর ক্রয় করল। তারপর সেটিকে আব্দুর রহীমের কাছে লালনের জন্য দিতে চাচ্ছে।
তখন আব্দুল্লাহ বলবে যে,
আমি
আমার বাছুরটির অর্ধেক অংশ দশ হাজার টাকার বিনিময়ে আব্দুর রহীমের কাছে বিক্রি করলাম।
আব্দুর রহীম পরবর্তীতে উক্ত টাকা পরিশোধের শর্তে তা ক্রয় করে নিবে।
এরপর সে তা লালন পালন করবে। লালন পালনের অর্ধেক খরচ
আব্দুল্লাহও প্রদান করবে। কয়েক বছর পর উক্ত পশুটি কথার কথা বিশ
হাজার টাকায় বিক্রি করা হল। তখন প্রথমে দশ হাজার টাকা আব্দুর রহীম আব্দুল্লাহকে প্রদান
করবে পূর্বের ঋণ পরিশোধ হিসেবে। তারপর বাকি দশ হাজার অর্ধেক অর্ধেক ভাগ করে নিবে। অর্থাৎ
পাঁচ হাজার আব্দুর রহীম। আর পাঁচ হাজার আব্দুল্লাহ।