আসসালামু আলাইকুম
ওয়া রহমতুল্লাহ,,
৫ বছর যাবত আমার বিয়ে হয় না.. ছেলেপক্ষ আসে দেখে চলে যায়।।। আর কিছু বলে না.. এমন অনেকদিন থেকে হচ্ছে।। ২০২৩ সাল থেকে বুঝলাম জিনের সমস্যা.. কিছুদিন আগে এক হুজুরের কাছে জানতে পারি,, আমার বিয়ে বন্ধ করা আছে,, তিন চার জন হুজুর একই কথা বলছে যে, কেউ আমার বিয়ে বন্ধের জাদু করে রাখছে.. আমার আব্বু কয়েকদিন আগে এক হুজুরের সাথে কথা বলে,, ঐ হুজুর বলছে যে,, আমাদের বাড়ির সামনে কেউ কিছু পুঁতে রাখছে,, এটা আগে তুলতে হবে..
চার পাঁচ দিন আগে হুজুর আসে জিন চালান করে জায়গা নির্ধারন করে ,, ঐ জায়গা থেকে মাটি তুলে আনতে বলে.. মাটি তুলে আনে মাটি গুলো থেকে ভালো ভাবে খুঁজে একটা তাবিজের মতো পুটলি পায়.. তা খুলে দেখে আমার জামার একটু কাপড় আর আমার চুল.. জামার কাপড় টা দেখে ধারণা করতেছি এটা কমপক্ষে তিন বছর আগের.. তারপর এটা পুড়ায় নষ্ট করে দেওয়া হয়..
তারপরে,, হুজুর আমাকে দুইটা ছোট ছোট ময়ুর এর পালকের মতো কি যেন দেয়, যেটা আমার রুমের বিছানার নিচে রাখতে বলে, একটা নতুন মাটির পাতিলে পানি আনতে বলে,, এক শ্বাস এ এক চাপে টিউবওয়েল থেকে.. তারপর সেটায় দুইটা ধান আর কি কি জানি দিছে।। বলছে তিনদিন গোসলের সময় এই পানি থেকে পানি নিয়ে গোসল করতে আর তিনদিন পর মাগরিবের পরে তিন রাস্তার মোড়ে পাতিল টা ভাঙতে..
যারা আমার উপর বিয়ে বন্ধের জাদু করছে তারা আমাদের বাড়ির পাশেই,, বলা চলে ঘরের কোণে শত্রু... তারা স্বামী স্ত্রী দু'জন ই কুফরি করে.. তারা সব কিছু জানতে পারে আমাদের বাড়ির... আবার যে কিছু পুঁতে রাখবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই... তাই আমার মা আবার ও হুজুর কে জানায়,, তারা যদি আবার এমন করে,, তখন হুজুর বলছে যে তার জন্য কাজ করে দিতে হবে্.. বাড়ি বন করে রাখতে হবে..
এর জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস লাগবে,, একটা এক রংয়ের মোরগের রক্ত আর চারটা ৪০০ মি.লি. এর পানির বোতল.৷ আর তিন দিনের জন্য একটা রঙ্গিন পানি রাখে গেছে,, বলছে, যদি এটা রঙ্গিন ই থাকে তাহলে,, সমস্যা আছে আরও,, আর যদি সাধারণ পানি তে পরিণত হয় তাহলে সমস্যা নাই..
গতকালকে ৩ দিন হইছে পানির কোনো পরিবর্তন নাই। উনাকে জানানো হলে, উনি বলছে পানি টা ছিটিয়ে দিতে বাসায়... আর উনি আমাবস্যার সময় আসবে..
আমার বাসার মানুষ রাক্বী বিষয়ে জানে না... আমি জানি আলহামদুলিল্লাহ... কিন্তু সেদিন হুজুর দেখে সন্দেহ করি নি তেমন কিছু.. কিন্তু উনার কার্যক্রম অনেক সন্দেহ লাগতেছে... আমি সত্যি ই জানিনা উনি কি আদৌও কুরআন দ্বারা রুকইয়াহ করে কি না...
এদিকে বিয়ের বয়স হইছে,, বাড়ি থেকে অনেক চাপ,, আব্বা আম্মা অনেক পেরেশান,, বললেও তেমন ভাবে কোনো কিছু আমলে নেয় না... তাদের কাছে জরুরি হলো তাদের দ্বায়িত্ব... বেঁচে থাকতে থাকতে মেয়ের বিয়ে দিতে চায়...
আমি এতেদিন যাবত কুফরির জন্য কোনো কবিরাজ এর কাছে যাই নি।। এইগুলা থেকে বেঁচে থাকবার চেষ্টা করেছি... ঈমানের সাথে সাংঘর্ষিক কোনো কিছু থেকে নিজেকে দূরে রাখবার চেষ্টা করছি.. আমার ইলম খুবই সীমিত... কিন্তু বারবার ঈমানি পরিক্ষায় পড়তেছি,, বুঝতেছি না কোনটা কি ঠিক... এখন এমন অবস্থা কিছুই বুঝতেছি না এলোমেলো লাগতেছে..
আরেকটা কথা বলে রাখা ভালো,, আশে পাশে তেমন কোনো রাক্বীও নেই.... রুকইয়াহ সেন্টার অনেক দূরে,, তবুও সেখানে গেলে কতটা কি হবে তাও জানিনা৷ কারন পরিচিতও কেউ নেই।। আর সব জায়গায় ই এখন রুকইয়াহ এর নামে ব্যবসা খুলে বসছে...
আমার প্রশ্ন,,
১, এই হুজুরের কার্য পদ্ধতি জায়েজ ??
২, যদি কুফরি হয়ে থাকে,, তাহলে আমার নিজ অসতর্কতার জন্য যে আমি তার কার্যপদ্ধতি অনুযায়ী পালক আর পানি দ্বারা গোসল করে ফেলেছি, এর জন্য কি ঈমানের ক্ষতি হবে??
(যদিও আমি এসবে বিশ্বাসী নই.. বাড়ির মানুষকে তেমন ভাবে কিছু বুঝানো যায় না,, তাদের ভাষ্য অনুযায়ী,, কুফরি কাটাতে কুফরি লাগে,, এই হুজুরের পূর্বে এক হুজুর বলেছিলেন যে, "আমি এটা কাটাতে পারব না, তাহলে আমাকে কুফরি করতে হবে"...)
৩, এটা যদি নাজায়েজ হয় তাহলে,, আমার পরিবার যদি আমার কথা না শুনে এই হুজুরের দ্বারা বাড়ি বন্ধ করে নেয় তাহলে আমাদের সকলের ঈমানের কি ক্ষতি হবে?? এ অবস্থায় আমার করণীয় কি??
আমার আমল ঈমান কি বরবাদ হয়ে যাবে???
ঈমান আমল নিয়ে বড্ড বেশি চিন্তায় পড়ে গেছি... এমন পরিস্থিতি গুলোতে আগে কখনও পরি নি... ঈমান হারানোর আশঙ্কায় অনেক ভয়াবহ অবস্থা.. নিজের অসতর্কতা আর নিজের করণীয় কিছু খুঁজে না পাবার কারণ!