আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
42 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম
ওয়া রহমতুল্লাহ,,
৫ বছর যাবত আমার বিয়ে হয় না.. ছেলেপক্ষ আসে দেখে চলে যায়।।। আর কিছু বলে না.. এমন অনেকদিন থেকে হচ্ছে।।  ২০২৩ সাল থেকে বুঝলাম জিনের সমস্যা..  কিছুদিন আগে এক হুজুরের কাছে জানতে পারি,, আমার বিয়ে বন্ধ করা আছে,, তিন চার জন হুজুর একই কথা বলছে যে, কেউ আমার বিয়ে বন্ধের জাদু করে রাখছে..  আমার আব্বু কয়েকদিন আগে এক হুজুরের সাথে কথা বলে,, ঐ হুজুর বলছে যে,, আমাদের বাড়ির সামনে কেউ কিছু পুঁতে রাখছে,, এটা আগে তুলতে হবে..

চার পাঁচ দিন আগে হুজুর আসে জিন চালান করে জায়গা নির্ধারন করে ,, ঐ জায়গা থেকে মাটি তুলে আনতে বলে.. মাটি তুলে আনে মাটি গুলো থেকে ভালো ভাবে খুঁজে একটা তাবিজের মতো পুটলি পায়.. তা খুলে দেখে আমার জামার একটু কাপড় আর আমার চুল.. জামার কাপড় টা দেখে ধারণা করতেছি এটা কমপক্ষে তিন বছর আগের..  তারপর এটা পুড়ায় নষ্ট করে দেওয়া হয়..
তারপরে,, হুজুর আমাকে দুইটা ছোট ছোট ময়ুর এর পালকের মতো কি যেন দেয়, যেটা আমার রুমের বিছানার নিচে রাখতে বলে, একটা নতুন মাটির পাতিলে পানি আনতে বলে,, এক শ্বাস এ এক চাপে টিউবওয়েল থেকে.. তারপর সেটায় দুইটা ধান আর কি কি জানি দিছে।। বলছে তিনদিন গোসলের সময় এই পানি থেকে পানি নিয়ে গোসল করতে আর  তিনদিন পর মাগরিবের পরে তিন রাস্তার মোড়ে পাতিল টা ভাঙতে..
যারা আমার উপর বিয়ে বন্ধের জাদু করছে তারা আমাদের বাড়ির পাশেই,, বলা চলে ঘরের কোণে শত্রু... তারা স্বামী স্ত্রী দু'জন ই কুফরি করে.. তারা সব কিছু জানতে পারে আমাদের বাড়ির... আবার যে কিছু পুঁতে রাখবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই... তাই আমার মা আবার ও হুজুর কে জানায়,, তারা যদি আবার এমন করে,, তখন হুজুর বলছে যে তার জন্য কাজ করে দিতে হবে্.. বাড়ি বন করে রাখতে হবে..
এর জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস লাগবে,, একটা এক রংয়ের মোরগের রক্ত আর চারটা ৪০০ মি.লি. এর পানির বোতল.৷ আর তিন দিনের জন্য একটা রঙ্গিন পানি রাখে গেছে,, বলছে, যদি এটা রঙ্গিন ই থাকে তাহলে,, সমস্যা আছে আরও,, আর যদি সাধারণ পানি তে পরিণত হয় তাহলে সমস্যা নাই..

 গতকালকে ৩ দিন হইছে পানির কোনো পরিবর্তন নাই।  উনাকে জানানো হলে, উনি বলছে পানি টা ছিটিয়ে দিতে বাসায়... আর উনি আমাবস্যার সময় আসবে..

 আমার বাসার মানুষ রাক্বী বিষয়ে জানে না... আমি জানি আলহামদুলিল্লাহ...  কিন্তু সেদিন হুজুর দেখে সন্দেহ করি নি তেমন কিছু.. কিন্তু উনার কার্যক্রম অনেক সন্দেহ লাগতেছে...  আমি সত্যি ই জানিনা উনি কি আদৌও কুরআন দ্বারা রুকইয়াহ করে কি না...

এদিকে বিয়ের বয়স হইছে,,  বাড়ি থেকে অনেক চাপ,, আব্বা আম্মা অনেক পেরেশান,, বললেও তেমন ভাবে কোনো কিছু আমলে নেয় না... তাদের কাছে জরুরি হলো তাদের দ্বায়িত্ব...  বেঁচে থাকতে থাকতে মেয়ের বিয়ে দিতে চায়...

আমি এতেদিন যাবত কুফরির জন্য কোনো কবিরাজ এর কাছে যাই নি।। এইগুলা থেকে বেঁচে থাকবার চেষ্টা করেছি...   ঈমানের সাথে সাংঘর্ষিক কোনো কিছু থেকে নিজেকে দূরে রাখবার চেষ্টা করছি.. আমার ইলম খুবই সীমিত... কিন্তু বারবার ঈমানি পরিক্ষায় পড়তেছি,, বুঝতেছি না কোনটা কি ঠিক... এখন এমন অবস্থা কিছুই বুঝতেছি না এলোমেলো লাগতেছে..
আরেকটা কথা বলে রাখা ভালো,, আশে পাশে তেমন কোনো রাক্বীও নেই.... রুকইয়াহ সেন্টার অনেক দূরে,, তবুও সেখানে গেলে কতটা কি হবে তাও জানিনা৷  কারন পরিচিতও কেউ নেই।। আর সব জায়গায় ই  এখন রুকইয়াহ এর নামে ব্যবসা খুলে বসছে...

আমার প্রশ্ন,,
১, এই হুজুরের কার্য পদ্ধতি জায়েজ ??
২, যদি কুফরি হয়ে থাকে,,  তাহলে আমার নিজ অসতর্কতার জন্য যে আমি তার কার্যপদ্ধতি অনুযায়ী পালক আর পানি দ্বারা গোসল করে ফেলেছি, এর জন্য কি ঈমানের ক্ষতি হবে??
(যদিও আমি এসবে বিশ্বাসী নই.. বাড়ির মানুষকে তেমন ভাবে কিছু বুঝানো যায় না,, তাদের ভাষ্য অনুযায়ী,,  কুফরি কাটাতে কুফরি লাগে,, এই হুজুরের পূর্বে এক হুজুর বলেছিলেন যে, "আমি এটা কাটাতে পারব না, তাহলে আমাকে কুফরি করতে হবে"...)

৩, এটা যদি নাজায়েজ হয় তাহলে,, আমার পরিবার যদি আমার কথা না শুনে এই হুজুরের দ্বারা বাড়ি বন্ধ করে নেয় তাহলে আমাদের সকলের ঈমানের কি ক্ষতি হবে?? এ অবস্থায় আমার করণীয় কি??
আমার আমল ঈমান কি বরবাদ হয়ে যাবে???
ঈমান আমল নিয়ে বড্ড বেশি চিন্তায় পড়ে গেছি...  এমন পরিস্থিতি গুলোতে আগে কখনও পরি নি... ঈমান হারানোর আশঙ্কায় অনেক ভয়াবহ অবস্থা..  নিজের অসতর্কতা আর নিজের করণীয় কিছু খুঁজে না পাবার কারণ!

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم

তাবিজে কুরআনের আয়াত, আল্লাহর নাম, দুআয়ে মাসুরা বা শিরকমুক্ত অর্থবোধক থাকলে তা  জায়িজ।  কেননা এসব তাবিজের ক্ষেত্রে মুয়াসসার বিজজাত তথা আরোগ্যের ক্ষমতা আল্লাহ তাআলাকেই মনে করা হয়। 
.
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُعَلِّمُهُمْ مِنَ الْفَزَعِ كَلِمَاتٍ: «أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ، مِنْ غَضَبِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ» وَكَانَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ يُعَلِّمُهُنَّ مَنْ عَقَلَ مِنْ بَنِيهِ، وَمَنْ لَمْ يَعْقِلْ كَتَبَهُ فَأَعْلَقَهُ عَلَيْهِ

আমর ইবনে শুআইব তাঁর পিতা ও তিনি তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন যে,রাসূল (সঃ) ইরশাদ করেন,তোমাদের কেউ যখন ঘুম অবস্থায় ঘাবড়িয়ে উঠে,সে যেন  أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ، مِنْ غَضَبِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ দো’আটি পাঠ করে। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর তাঁর উপযুক্ত সন্তানদের তা শিক্ষা দিতেন এবং ছোটদের গলায় তা লিখে লটকিয়ে দিতেন।{সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৮৯৫}

এ হাদীস স্পষ্টভাষায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আস রাঃ তাঁর অবুঝ সন্তানদের জন্য তাবীজ লিখে তা লটকিয়ে দিতেন।

حَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي مُعَاوِيَةُ بْنُ صَالِحٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَوْفِ بْنِ مَالِكٍ الأَشْجَعِيِّ، قَالَ كُنَّا نَرْقِي فِي الْجَاهِلِيَّةِ فَقُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ تَرَى فِي ذَلِكَ فَقَالَ " اعْرِضُوا عَلَىَّ رُقَاكُمْ لاَ بَأْسَ بِالرُّقَى مَا لَمْ يَكُنْ فِيهِ شِرْكٌ " .

আবূ তাহির (রহঃ) ..... আওফ ইবনু মালিক আশজা'ঈ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা জাহিলী (মূর্খতার) যুগে (বিভিন্ন) মন্ত্র দিয়ে ঝাড়ফুঁক করতাম। এজন্যে আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আবেদন করলাম- হে আল্লাহর রসূল! এক্ষেত্রে আপনার মতামত কি? তিনি বললেন, তোমাদের মন্ত্রগুলো আমার নিকট উপস্থাপন করো, ঝাড়ফুঁকে কোন দোষ নেই- যদি তাতে কোন শিরক (জাতীয় কথা) না থাকে। (মুসলিম ৫৬২৫ ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৫৪৪, ইসলামিক সেন্টার ৫৫৬৯)

আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী রহঃ উল্লেখ করেন-

إنما تكره العوذة إذا كانت بغير لسان العرب ، ولا يدرى ما هو ولعله يدخله سحر أو كفر أو غير ذلك ، وأما ما كان من القرآن أو شيء من الدعوات فلا بأس به

নিশ্চয় নিষিদ্ধ তাবীজ হল যা আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় লিখা হয়, বুঝা যায় না তাতে কি আছে? অথবা যাতে জাদু, কুফরী ইত্যাদি কথা থাকে। আর যেসব তাবীজে কুরআন বা দুআ সম্বলিত হয় তা ব্যবহারে কোন সমস্যা নেই। {ফাতওয়ায়ে শামী- এইচ এম সায়ীদ ৬/৩৬৩}

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত কার্য পদ্ধতি অধিকাংশই শরীয়ত বিরোধী। 

(০২)
তবে এর দরুন আপনার ঈমান চলে যায়নি।

(০৩)
আপনাদের আপনার ঈমান চলে যায়নি।
এক্ষেত্রে বৈধ রুকইয়াহ কারীর স্বরণাপন্ন হতে পারেন।

আরো করনীয় জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...