আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
46 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (10 points)
মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ যেমন - সৌদি আরব,কুয়েত,কাতার

কফালা সিস্টেম প্রচলিত। এই সিস্টেমে কফিল (স্পন্সর) ছোট একটা একটা কোম্পানির মালিক।  কোম্পানিতে লোক নিয়ে আসা হয় বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ইন্ডিয়া থেকে। তাদের বলা হয় আমেল। কিন্তু এর বাইরে ও আরেক সিস্টেম প্রচলিত যাকে বলা হয় ফ্রি ভিসা।   এই সিস্টেমে কফিল এর লোক  থাকে
কিন্তু ওই নির্দিষ্ট কোম্পানিতে কাজ না করে অন্য কোম্পানিতে বা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে।এক্ষেত্রে কফিলের নামমাত্র কোম্পানি থাকে বা থাকে না।
এর বিনিময়ে কফিল নির্দিষ্ট অংকের টাকা নেয়।
নিয়ে বাইরে কাজ করার অনুমতি দেয় তাদের ব্যবসাই এটা।


এক্ষেত্রে যারা বাইরে কাজ করে তারা অন্যান্য দের চেয়ে বেশি করে। ও কফিলকে টাকা দেয় নির্দিষ্ট অংকের


মধ্যপ্রাচ্যে এমন লক্ষ লক্ষ প্রবাসী আছে যারা ফ্রি ভিসায় কাজ করে।


আমার প্রশ্ন হলো

এই যে ফ্রি ভিসায় তারা কাজ করে
এক্ষেত্রে তার আয় কি হালাল হচ্ছে??

আশা করি জানিয়ে বাধিত করবেন


আর ফ্রি ভিসা সম্পর্কে আরেকটু জেনে উত্তর দিবেন।

কারণ এর সাথে লক্ষ লক্ষ প্রবাসীর রিজিকের ব্যপার জড়িত।

এক্ষেত্রে ফিকহে হানাফি কি বলে...

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের ধোকামূলক কোনো কাজের অনুমতি নেই। 
ধোকা মূলক কাজ শরীয়তে নাজায়েজ।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ   

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}

★রাষ্ট্রীয় আইন-কানুন প্রতিটি নাগরিকের জন্য মান্য করা আবশ্যক-যতক্ষণ না তা শরিয়া বিরোধী হয়। 
শরীয়াহ বিরোধী আইন না হলে বিনা ওযরে তাহা না মানলে গুনাহগার হতে হবে।

ইসলামী স্কলারগন বলেছেন, 
রাষ্ট্রীয় আইন অনুসরণ না করলে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, জান-মালের ক্ষতি এবং নানা দুর্ভোগে পতিত হয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর মানুষের নিরাপত্তা, কল্যাণ সাধন এবং বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধ করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব-যা শরিয়তের দৃষ্টিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কেউ যদি এসব আইন লঙ্ঘন করে তাহলে সে নিজেকে নানা বিপদাপদ, শাস্তি ও লাঞ্ছনার মধ্যে নিক্ষেপ করবে-যা ইসলামে নিষেধ।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَاصِمٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ جُنْدُبٍ، عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ يَنْبَغِي لِلْمُؤْمِنِ أَنْ يُذِلَّ نَفْسَهُ " . قَالُوا وَكَيْفَ يُذِلُّ نَفْسَهُ . قَالَ " يَتَعَرَّضُ مِنَ الْبَلاَءِ لِمَا لاَ يُطِيقُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
হুযাইফা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ  কোন মু'মিন ব্যক্তির জন্য নিজেকে অপমানিত করাটা শোভনীয় নয়। সাহাবীগণ প্রশ্ন করেন, সে নিজেকে কিভাবে অপমানিত করে? তিনি বললেনঃ এমন কঠিন বিষয়ে লিপ্ত হওয়া যার সামর্থ্য তার নেই।

সহীহ,তিরমিযী ২২৫৪, ইবনু মাজাহ ৪০১৬, আহমাদ ২৩৪৪৪, সহীহাহ্ ৬১৩।

আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব।

শাইখ বিন বায রাহ. বলেন,

أن القوانين إذا كانت لا تخالف الشرع فلا بأس بها، النظم تسمى بالقوانين وتسمى بالنظم، فكل قانون ونظام ينفع المسلمين ولا يخالف شريعة الله لا بأس به، من المرور أو في القضاء أو في أي الدوائر الحكومية أو في أي مكان.

“আইন-কানুন যদি শরিয়ত বিরোধী না হয় তাহলে তাতে কোনও সমস্যা নাই। শৃঙ্খলাকে আইন বলা হয়। সুতরাং যে সকল আইন-শৃঙ্খলা মুসলিমদের উপকার করে ও আল্লাহর আইন লঙ্ঘন করে না তাতে কোনও সমস্যা নাই। যেমন: ট্রাফিক, বিচার বিভাগ, সরকারি অফিস বা অন্য যে কোন স্থানে হোক না কেন।” 

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
ফ্রি-ভিসায় যারা কাজ করছে,এটা সে দেশের আইন বিরোধী হলে সে কাজ ও ইনকাম কোনোটিই হালাল হবেনা।

এক কোম্পানিতে কাজের জন্য গিয়ে নির্দিষ্ট কোম্পানিতে কাজ না করে অন্য কোম্পানিতে বা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করলে সেক্ষেত্রে চুক্তির খেলাফ কাজ হয়,এতে যে চুক্তি ভঙ্গ করছে,তার চুক্তিভঙ্গের গুনাহ হবে।
তবে যে কাজ করছে,তার কাজ ও ইনকাম কোনোটিই হারাম হবেনা।
বরং হালাল হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...