আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
61 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম। আমি ইন্টার ফার্স্ট ইয়ার এ পড়ি।  আমাদের ক্লাসে 2 জন মেয়ে আছে যারা বাহ্যিকভাবে সমকামীদের মতো। মানে তারা স্বামী-স্ত্রী তথা বিবাহিত। এখন তাদের যুক্তি হচ্ছে, "যে মেয়েটি স্বামীর ভূমিকায় আছে সে ছোট থেকেই ছেলেদের মতো চলাফেরা করত,,ছেলেদের মতো পোশাক, চালচলন, চুল এমনকি তার কন্ঠও ছেলেদের মতো। তার স্তনও পুরুষদের মতোই মানে ফ্ল্যাট। গতবছর তার পিরিয়ড বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই সে ক্রোমোজোম টেস্ট করে এবং ফলাফল আসে XX এর পরিবর্তে XY (কতটুকু সত্য আল্লাহু আ'লাম) মানে ছেলেদের সেক্স ক্রোমোজোম। তো সে মেয়েটি যেহেতু ছোট থেকেই ছেলেদের মতো চলাফেরা পছন্দ করত তাই সে ট্রান্স হতে চাচ্ছিল তাই সে নাকি এই ব্যাপারে কোনো এক শায়েখের সাথে কথা বলেছে শায়েখ সব শুনে বলেছে সে চাইলে ট্রান্স হতে পারবে বরং তার জন্য ট্রান্স হওয়াটাই জরুরী (তবে তার কথার সত্যতা আমার জানা নেই) তারপর সে আমাদের ক্লাসেরই আরেকটা মেয়ের সাথে রিলেশনের পর 23 শে মার্চ বিয়ে করে (স্থানীয় একটি মাসজিদে) হানাফি মাযহাবের ফতোয়া অনুযায়ী মাহরাম ছাড়া। তাই তারা নাকি হাসবেন্ড ওয়াইফ। তাই তারা বিবাহিত দম্পতির মতোই আচার আচরণ করে। 18+ হলে নাকি সে মেয়েটি অপারেশন করে ছেলে হয়ে যাবে। এখন আমি এই ব্যাপারে একজন ডক্টরের সাথে কথা বলেছিলাম যে এটা কি কখনো সম্ভব যে একটি মেয়ে স্ত্রী যৌনাঙ্গ বিশিষ্ট অথচ তার ক্রোমোজোম XY? তখন সে ডক্টর বলেছিল এটা কখনোই সম্ভব না কারণ আমাদের সেক্স ক্রোমোজোমই আমাদের লিঙ্গ নির্ধারণ করে। অর্থাৎ সত্যিই যদি মেয়েটির ক্রোমোজম XY হতো তবে তার লিঙ্গ পুরুষালি হতো মেয়েলি হওয়া অসম্ভব। এখন ওরা আমার সাথে খুব ঘনিষ্ঠ ভাবে মিশয়ে চায়। আমি কি তাদের বিরোধিতা করব নাকি সমর্থন করবো? তাদের সাথে বন্ধু হিসেবে মিশা কি আমার জন্য জায়েজ হবে?

1 Answer

0 votes
ago by (578,370 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
জাতীয় ফাতাওয়া বোর্ড- "আল হাইয়াতুল উলয়া লিল জামেয়াতিল কওমিয়্যাহ" থেকে একটি ফাতাওয়ায় বলা হয়, ট্রান্সজেন্ডার হারাম ও নাজায়েয।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন শয়তানকে অভিসম্পাত করে বলেছেন—
لَّعَنَهُ اللهُ وَ قَالَ لَاَتَّخِذَنَّ مِنْ عِبَادِكَ نَصِیْبًا مَّفْرُوْضًا،وَّ لَاُضِلَّنَّهُمْ وَ لَاُمَنِّیَنَّهُمْ وَ لَاٰمُرَنَّهُمْ فَلَیُبَتِّكُنَّ اٰذَانَ الْاَنْعَامِ وَ لَاٰمُرَنَّهُمْ فَلَیُغَیِّرُنَّ خَلْقَ اللهِ وَ مَنْ یَّتَّخِذِ الشَّیْطٰنَ وَلِیًّا مِّنْ دُوْنِ اللهِ فَقَدْ خَسِرَ خُسْرَانًا مُّبِیْنًا،یَعِدُهُمْ وَ یُمَنِّیْهِمْ ،وَ مَا یَعِدُهُمُ الشَّیْطٰنُ اِلَّا غُرُوْرًا،اُولٰٓىِٕكَ مَاْوٰىهُمْ جَهَنَّمُ وَ لَا یَجِدُوْنَ عَنْهَا مَحِیْصًا.

...শয়তানকে আল্লাহ লানত করেছেন। সে (আল্লাহকে) বলেছিল, আমি তোমার বান্দাদের মধ্য হতে নির্ধারিত এক অংশকে নিয়ে নেব। এবং আমি তাদেরকে সরল পথ হতে নিশ্চিতভাবে বিচ্যুত করব, তাদেরকে (অনেক) আশা-ভরসা দেব এবং তাদেরকে আদেশ করব, ফলে তারা চতুষ্পদ জন্তুর কান চিরে ফেলবে এবং তাদেরকে আদেশ করব, ফলে তারা আল্লাহর সৃষ্টিকে বিকৃত করবে। যে ব্যক্তি আল্লাহর পরিবর্তে শয়তানকে বন্ধু বানায়, সে সুস্পষ্ট লোকসানের মধ্যে পড়ে যায়। সে ওদের প্রতিশ্রুতি দেয় এবং আশা-ভরসা দেয়। প্রকৃতপক্ষে শয়তান তাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয় তা ধোঁকা ছাড়া আর কিছু নয়। তাদের সকলের ঠিকানা জাহান্নাম। তারা তা থেকে বাঁচার জন্য পালানোর কোন পথ পাবে না। (সূরা নিসা (৪) : ১১৮-১২১)

কারো অবস্থা যদি বাস্তবিকই এমন হয় যে, সে পুরুষ হয়েও নারীর তুলনায় পুরুষের প্রতি বেশি আকর্ষণ বোধ করে, তদ্রূপ নারী হয়েও কেউ যদি পুরুষের তুলনায় নারীর প্রতিই বেশি আকর্ষণ বোধ করে তবে এটি তার মানসিক রোগ বা শয়তানের কুমন্ত্রণা। শরীয়তের দৃষ্টিতে একে প্রশ্রয় দেয়ার কোন সুযোগ নেই। বরং তার জন্য মনের এই অবস্থার চিকিৎসা ও সংশোধন করা জরুরি। এর জন্য যেমন শাস্ত্রীয় চিকিৎসাব্যবস্থা আছে, তেমনি শরীয়তের আখলাক অধ্যায়ে স্বতন্ত্র শিক্ষা রয়েছে, যাতে আত্মশুদ্ধি ও কলবের পবিত্রতা বিষয়ে মূল্যবান নির্দেশনা দেয়া আছে এবং এ আত্মিক ব্যাধি সংশোধনের জন্য অন্যান্য হেদায়েতের পাশাপাশি বিভিন্ন দুআও শেখানো হয়েছে। সে সব হেদায়েত গ্রহণ না করে যদি মানসিক ব্যাধি ও বিকৃত চিন্তাকে জিইয়ে রাখা হয়, তাহলে তা হবে চরম গোমরাহী।

আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজীদে ইরশাদ করেন—
وَ مَنْ اَضَلُّ مِمَّنِ اتَّبَعَ هَوٰىهُ بِغَیْرِ هُدًی مِّنَ اللهِ.
আল্লাহর হেদায়েতের পরিবর্তে যে ব্যক্তি নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, তার চাইতে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে হতে পারে? (সূরা কাসাস (২৮) : ৫০)


হাদীস শরীফে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন—
لَعَنَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْمُخَنَّثِينَ مِنَ الرِّجَالِ، وَالْمُتَرَجِّلَاتِ مِنَ النِّسَاءِ، وَقَالَ: أَخْرِجُوهُمْ مِنْ بُيُوتِكُمْ، قَالَ: فَأَخْرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فُلَانًا، وَأَخْرَجَ عُمَرُ فُلَانًا.

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীরূপ ধারণকারী পুরুষদের উপর এবং পুরুষরূপ ধারণকারী নারীদের উপর লানত করেছেন এবং বলেছেন, তাদেরকে তোমাদের ঘর থেকে বের করে দাও।

বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অমুককে (তাঁর ঘরে আসলে) বের করে দিয়েছেন এবং অমুককে উমর রা. বের করে দিয়েছেন।(সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৮৮৬)


আরেক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে—
لَعَنَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمُتَشَبِّهِينَ مِنَ الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ، وَالْمُتَشَبِّهَاتِ مِنَ النِّسَاءِ بِالرِّجَالِ.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐসব পুরুষকে লানত করেছেন, যারা নারীর বেশ ধারণ করে এবং ঐসব নারীকে লানত করেছেন, যারা পুরুষের বেশ ধারণ করে। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৮৮৫)

অপর হাদীসে এসেছে, আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন—
أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَعَنَ الرَّجُلَ يَلْبَسُ لِبْسَةَ الْمَرْأَةِ، وَالْمَرْأَةَ تَلْبَسُ لِبْسَةَ الرَّجُلِ.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লানত করেছেন এমন পুরুষের ওপর, যে নারীর মত পোশাক পরিধান করে এবং এমন নারীর ওপর, যে পুরুষের মত পোশাক পরিধান করে।(মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৮৩০৯) এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/466

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ট্রান্সজেন্ডার হওয়া বা করা কিংবা এ কাজে সহযোগিতা করা সবকিছুই হারাম ও নাজায়েয। এদের সাথে মিশা বা ঘনিষ্ঠ হওয়া কোনোটাই জায়েয হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...