ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
জাতীয় ফাতাওয়া বোর্ড- "আল হাইয়াতুল উলয়া লিল জামেয়াতিল কওমিয়্যাহ" থেকে একটি ফাতাওয়ায় বলা হয়, ট্রান্সজেন্ডার হারাম ও নাজায়েয।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন শয়তানকে অভিসম্পাত করে বলেছেন—
لَّعَنَهُ اللهُ وَ قَالَ لَاَتَّخِذَنَّ مِنْ عِبَادِكَ نَصِیْبًا مَّفْرُوْضًا،وَّ لَاُضِلَّنَّهُمْ وَ لَاُمَنِّیَنَّهُمْ وَ لَاٰمُرَنَّهُمْ فَلَیُبَتِّكُنَّ اٰذَانَ الْاَنْعَامِ وَ لَاٰمُرَنَّهُمْ فَلَیُغَیِّرُنَّ خَلْقَ اللهِ وَ مَنْ یَّتَّخِذِ الشَّیْطٰنَ وَلِیًّا مِّنْ دُوْنِ اللهِ فَقَدْ خَسِرَ خُسْرَانًا مُّبِیْنًا،یَعِدُهُمْ وَ یُمَنِّیْهِمْ ،وَ مَا یَعِدُهُمُ الشَّیْطٰنُ اِلَّا غُرُوْرًا،اُولٰٓىِٕكَ مَاْوٰىهُمْ جَهَنَّمُ وَ لَا یَجِدُوْنَ عَنْهَا مَحِیْصًا.
...শয়তানকে আল্লাহ লানত করেছেন। সে (আল্লাহকে) বলেছিল, আমি তোমার বান্দাদের মধ্য হতে নির্ধারিত এক অংশকে নিয়ে নেব। এবং আমি তাদেরকে সরল পথ হতে নিশ্চিতভাবে বিচ্যুত করব, তাদেরকে (অনেক) আশা-ভরসা দেব এবং তাদেরকে আদেশ করব, ফলে তারা চতুষ্পদ জন্তুর কান চিরে ফেলবে এবং তাদেরকে আদেশ করব, ফলে তারা আল্লাহর সৃষ্টিকে বিকৃত করবে। যে ব্যক্তি আল্লাহর পরিবর্তে শয়তানকে বন্ধু বানায়, সে সুস্পষ্ট লোকসানের মধ্যে পড়ে যায়। সে ওদের প্রতিশ্রুতি দেয় এবং আশা-ভরসা দেয়। প্রকৃতপক্ষে শয়তান তাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয় তা ধোঁকা ছাড়া আর কিছু নয়। তাদের সকলের ঠিকানা জাহান্নাম। তারা তা থেকে বাঁচার জন্য পালানোর কোন পথ পাবে না। (সূরা নিসা (৪) : ১১৮-১২১)
কারো অবস্থা যদি বাস্তবিকই এমন হয় যে, সে পুরুষ হয়েও নারীর তুলনায় পুরুষের প্রতি বেশি আকর্ষণ বোধ করে, তদ্রূপ নারী হয়েও কেউ যদি পুরুষের তুলনায় নারীর প্রতিই বেশি আকর্ষণ বোধ করে তবে এটি তার মানসিক রোগ বা শয়তানের কুমন্ত্রণা। শরীয়তের দৃষ্টিতে একে প্রশ্রয় দেয়ার কোন সুযোগ নেই। বরং তার জন্য মনের এই অবস্থার চিকিৎসা ও সংশোধন করা জরুরি। এর জন্য যেমন শাস্ত্রীয় চিকিৎসাব্যবস্থা আছে, তেমনি শরীয়তের আখলাক অধ্যায়ে স্বতন্ত্র শিক্ষা রয়েছে, যাতে আত্মশুদ্ধি ও কলবের পবিত্রতা বিষয়ে মূল্যবান নির্দেশনা দেয়া আছে এবং এ আত্মিক ব্যাধি সংশোধনের জন্য অন্যান্য হেদায়েতের পাশাপাশি বিভিন্ন দুআও শেখানো হয়েছে। সে সব হেদায়েত গ্রহণ না করে যদি মানসিক ব্যাধি ও বিকৃত চিন্তাকে জিইয়ে রাখা হয়, তাহলে তা হবে চরম গোমরাহী।
আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজীদে ইরশাদ করেন—
وَ مَنْ اَضَلُّ مِمَّنِ اتَّبَعَ هَوٰىهُ بِغَیْرِ هُدًی مِّنَ اللهِ.
আল্লাহর হেদায়েতের পরিবর্তে যে ব্যক্তি নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, তার চাইতে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে হতে পারে? (সূরা কাসাস (২৮) : ৫০)
হাদীস শরীফে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন—
لَعَنَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْمُخَنَّثِينَ مِنَ الرِّجَالِ، وَالْمُتَرَجِّلَاتِ مِنَ النِّسَاءِ، وَقَالَ: أَخْرِجُوهُمْ مِنْ بُيُوتِكُمْ، قَالَ: فَأَخْرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فُلَانًا، وَأَخْرَجَ عُمَرُ فُلَانًا.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীরূপ ধারণকারী পুরুষদের উপর এবং পুরুষরূপ ধারণকারী নারীদের উপর লানত করেছেন এবং বলেছেন, তাদেরকে তোমাদের ঘর থেকে বের করে দাও।
বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অমুককে (তাঁর ঘরে আসলে) বের করে দিয়েছেন এবং অমুককে উমর রা. বের করে দিয়েছেন।(সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৮৮৬)
আরেক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে—
لَعَنَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمُتَشَبِّهِينَ مِنَ الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ، وَالْمُتَشَبِّهَاتِ مِنَ النِّسَاءِ بِالرِّجَالِ.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐসব পুরুষকে লানত করেছেন, যারা নারীর বেশ ধারণ করে এবং ঐসব নারীকে লানত করেছেন, যারা পুরুষের বেশ ধারণ করে। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৮৮৫)
অপর হাদীসে এসেছে, আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন—
أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَعَنَ الرَّجُلَ يَلْبَسُ لِبْسَةَ الْمَرْأَةِ، وَالْمَرْأَةَ تَلْبَسُ لِبْسَةَ الرَّجُلِ.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লানত করেছেন এমন পুরুষের ওপর, যে নারীর মত পোশাক পরিধান করে এবং এমন নারীর ওপর, যে পুরুষের মত পোশাক পরিধান করে।(মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৮৩০৯) এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-
https://www.ifatwa.info/466
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ট্রান্সজেন্ডার হওয়া বা করা কিংবা এ কাজে সহযোগিতা করা সবকিছুই হারাম ও নাজায়েয। এদের সাথে মিশা বা ঘনিষ্ঠ হওয়া কোনোটাই জায়েয হবে না।