আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
31 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম,
আমি ২ টি ব্যবসা পরিচালনা করি এরমধ্যে একটি ব্যবসার শুরুতে ২জন ভাই থেকে  ১ লাখ টাকা ইনভেস্ট নেই মুদারাবা সিস্টেমে।  তাদের দেওয়া টাকাই একমাত্র মূলধন ছিলো আমি কোন টাকা খাটাইনি। কিন্তু ব্যবসা এটা তেমন ফলপ্রসু হয়নি প্রায় ৩০ হাজারের মতো লস হয়। আর বাকি টাকাও একটি কারণে আমি খরচ করে ফেলেছি। তারা যদিও কিছুই বলেন নি আমাকে। কিন্তু আমার খারাপ লাগা কাজ করে বিধায় আমি তাদের আমার অপর ব্যবসা যেটা আবার লাভজনক  সেখানের একটা অংশ মালিকানা দিয়ে দেই যেন একটা নির্দিষ্ট প্রফিট তারা পায়।  এই ব্যবসায় তাদের যে পরিমাণ  মালিকানা দেওয়া হয়েছে তা কোন ভ্যালুয়েশনের মাধ্যমে হয়নি। অর্থাৎ আমার কোম্পানির ভ্যালু অনুযায়ী হয়নি আমি তাদের আগের ব্যবসায় লস হওয়া এবং বাকি টাকাও খরচ করে ফেলার পরও তাদের কিছু না বলাতে কৃতজ্ঞতা সরূপ দিয়েছি আর তারাও আপত্তি জানাননি কেননা তাদের মোটামুটি একটা পরিমাণ টাকা আয় হচ্ছে।

এখানে উল্লেখ যে,
 তাদের  দেওয়া টাকা সব নানা খাতে খরচ আর আটকে আছে। তাই  ২য় ব্যবসায় তাদের টাকা মূলত ব্যবহার হচ্ছে না। আমার আগের মূলধনই ব্যবহার হচ্ছে যা আমি নিজে ইনভেস্ট করেছি।

এখন আমার প্রশ্ন হলো,
১- তাদের এই মালিকানা দেওয়াতে কোন শারঈ আপত্তি আছে? যেই ব্যবসায় আসলে তারা ইনভেস্ট করেননি। তবে তারা সন্তুষ্ট এবং আমিও সন্তুষ্ট?
২- এই ব্যবসায় এসেট একদম অল্প টাকার, ৫-৭ হাজার টাকার মতো। এতোটুকু এসেট কি শেয়ার দরাদরি করে  বিক্রির জন্য যথেষ্ট?
৩- তাদের এই ব্যবসার ৩৫ হাজার টাকা যা আমি খরচ করেছি তার উপর কি জাকাত ধার্য্য হবে যা ব্যবসার জন্য দিয়েছিলো কিন্তু আমার কিছু ভুলের কারণে আমি নিজে খরচ করেছি
 নাকি আমার ২য় কোম্পানির শেয়ার দরের উপর?

1 Answer

0 votes
by (556,350 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

ব্যবসার ক্ষেত্রে এক পক্ষের মাল,অপর পক্ষের শ্রম দেওয়াকে মুদারাবা বলা হয়।
এটি জায়েজ আছে। 

ইসলামী ফিকাহর পরিভাষায় একপক্ষের মূলধন ও অপরপক্ষের শ্রম, মেধা ও বুদ্ধির সমন্বিত রূপে যে ব্যবসা অস্তিত্ব লাভ করে তাকে মুদারাবা ব্যবসা বলা হয়। যিনি মূলধনের মালিক তাকে ‘রব্বুল মাল’ বা ‘সাহিবুল মাল’ ও যিনি শ্রমদান করেন বা উদ্যোগ নিয়ে মূলধন ব্যবহার করেন তাকে ‘মুদারিব’ বলা হয়। নবী (সা.) নবুয়ত লাভ করার আগে হজরত খাদিজা (রা.) এর সঙ্গে এ ব্যবসা করতেন, যা তিনি নবুয়ত  লাভ করার পরও কিছু দিন বহাল রেখেছিলেন। সাহাবায়ে কেরামের অনেকে এ ব্যবসা করতেন। আল্লামা কুরতুবি (রহ.) উল্লেখ করেছেন, ‘কিরাজ অর্থাৎ মুদারাবার বৈধতার ব্যাপারে মুসলমানদের মাঝে কোনোরূপ দ্বিমত নেই।’ (বিদায়াতুল মুজতাহিদ ২/২১৬)।

মুদারাবার ক্ষেত্রে শরীয়তের উসুল হলো যাহা লাভ হবে,তাহা শতকরা হারে উভয়ের মাঝে বন্টন করার চুক্তি করতে হবে।

কোনো নির্দিষ্ট টাকার চুক্তি করা যাবেনা,লোকসান হলে আগে লাভের টাকা থেকে সেটা পূরন করা হবে,অতঃপর মূলধন থেকে পূরন করা হবে।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ     

بَاب الشَّرِكَةِ وَالْمُضَارَبَةِ

حَدَّثَنَا أَبُو السَّائِبِ، سَلْمُ بْنُ جُنَادَةَ حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ الْحَفَرِيُّ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ اشْتَرَكْتُ أَنَا وَسَعْدٌ، وَعَمَّارٌ، يَوْمَ بَدْرٍ فِيمَا نُصِيبُ فَلَمْ أَجِئْ أَنَا وَلاَ عَمَّارٌ بِشَىْءٍ وَجَاءَ سَعْدٌ بِرَجُلَيْنِ .

শারীকাত (অংশিদারী) ও মুদারাবা ব্যবসা

আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বদর যুদ্ধের দিন সাদ (রাঃ) , আম্মার (রাঃ) ও আমি গানীমাতের মালের ব্যাপারে অংশীদার হই (এই মর্মে যে, আমরা যা পাবো তা তিনজনে ভাগ করে নিবো)। আম্মার ও আমি কিছুই আনতে পারিনি। অবশ্য সাদ (রাঃ) দু’জন যুদ্ধবন্দী নিয়ে আসেন।

নাসায়ী ৪৬৯৭, আবূ দাউদ ৩৩৮৮, বায়হাকী ফিস সুনান ৪/১৯৪, ইরওয়া ১৪৭৪। 

বিস্তারিত জানুনঃ 

মুদারাবা পদ্ধতিতে ব্যবসায় যদি লোকসান হয়,সেক্ষেত্রে এই ব্যবসা শুরুর পর প্রথমবারেই তাদের লোকসান হয়,সেক্ষেত্রে তো তাদের কোনো লাভই নেই।
তাই সরাসরি মূলধন থেকে ক্ষতিপূরণ হবে।
কিন্তু যদি আগে থেকেই ব্যবসা চলে, এখন লোকসান হয়েছে, সেক্ষেত্রে আগে তো লাভও হয়েছিলো,(যদিও তাহা বন্টনকৃত হোক) সেই আগের লাভের টাকা হতে লোকসানের ক্ষতিপূরণ করতে হবে।
অতঃপর মূলধন হতে। 

تبيين الحقائق شرح كنز الدقائق وحاشية الشلبي: 
"قال - رحمه الله - (وما هلك من مال المضاربة فمن الربح)؛ لأنه تابع ورأس المال أصل لتصور وجوده بدون الربح لا العكس فوجب صرف الهالك إلى التبع لاستحالة بقائه بدون الأصل كما يصرف الهالك العفو في الزكاة قال - رحمه الله - (فإن زاد الهالك على الربح لم يضمن المضارب)؛ لأنه أمين فلا يكون ضمينا للتنافي بينهما في شيء واحد".
(کتاب المضاربۃ،باب المضارب یضارب،ج:5،ص:67،ط:المطبعة الكبرى الأميرية - بولاق، القاهرة) 
সারমর্মঃ-
মুদারাবার সম্পদ হয়ে যাহা লোকসান হবে বা ক্ষতিগ্রস্ত হবে,তাহা লভ্যাংশ থেকে পূরন হবে।
কেননা সেটা অনুগত,আর মূলধন হলো আসল।
যদি লাভ থেকে ক্ষতি বেশি হয়,সেক্ষেত্রে বাকি টুকু মূলধন থেকে পূরন করা হবে।

এক্ষেত্রে যে ব্যবসায় শ্রম দিচ্ছে,সে যদি শুধু শ্রমই দিয়ে থাকে,ইনভেস্ট না করে থাকে,তাহলে তার তো মূলধন নেই,তাই সে উক্ত লোকসানে ভাগীদার হবেনা। 

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার কাজটি শরীয়ত সম্মত নয়।

১ম ব্যবসার বিষয়টি সমাধান না করে এভাবে তাদেরকে ২য় ব্যবসা হলে লভ্যাংশ দেয়া শরীয়ত সম্মত নয়।

১ম ব্যবসার যে ৩০ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে,এটা ঐ ২ জনের মূলধন (এক লাখ টাকা) হতে মাইনাস হয়ে অবশিষ্ট মূলধনের টাকা তারা পাবে।

এক্ষেত্রে বাকি টাকা যেহেতু আপনি খরচ করে ফেলেছেন,সুতরাং এই টাকা আপনার কাছে পাওনা হিসেবে থাকবে।

আপনি সেই পাওনা টাকা শোধ করবেন।

পাওনা টাকার হিসাব করে আপনি আস্তে-ধীরে নিজের ২য় ব্যবসার লভ্যাংশ হতে তাদের পাওনা টাকা পরিশোধ করতে পারবেন।

তবে নতুন করে তাদের থেকে মূলধন না নিয়ে তাদেরকে ২য় ব্যবসার লভ্যাংশ দিতে পারবেননা।

(০২)
কমেন্ট বক্সে বিষয়টি আরো স্পষ্ট করলে জবাব প্রদানে সুবিধা হতো। 
জাযাকাল্লাহ। 

(০৩)
সেই টাকা তো আপনার নয়,এটা তাদের টাকা।
এটার যাকাত (টাকাটি উসুল হওয়ার পর) তাদের দিতে হবে।
আপনার নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (6 points)
আচ্ছা আমি যদি সে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য একটা সময় নেই এবং তাদের থেকে খুবি অল্প টাকা নিয়ে তার বিনিময়ে আমার এই ২য় ব্যবসার লভ্যাংশ তাদের দিতে থাকি তাহলে কি আপত্তি আছে?
by (556,350 points)
এই লভ্যাংশ যদি তাদের ঋন পরিশোধ বাবদ দেন,তাহলে সেটা জায়েজ হবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...