আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
90 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (13 points)
edited by


আসসালামু আলাইকুম। 

https://ifatwa.info/104780/ এই প্রশ্নের উত্তর বিশদ ভাবে পেয়েছি। জাজাকাল্লাহু খাইরান। 

পাশাপাশি আরও কিছু জানার ছিল, তাই এই Q/A পোস্ট করা। 

আমি লিখতে ভুলে গেছি, আমার ভাগ্নির বয়স ৪+

মানতাহা অলিদ নামি কি ঠিক আছে?  (অলিদ বাবার নাম)
ঠিক না হলে কি "মানতাহা অলিদ" এর পরিবর্তে "মানতাহা বিনতে অলিদ" করলে অর্থ ঠিক থাকবে/রাখা যাবে? (অলিদ বাবার নাম)

মারিয়া নামের অর্থ কি?


দয়া করে বলবেন, 
- মানহা নামের অর্থ কি?
- মাহেক নামের অর্থ কি?
- মাহিরা নামের অর্থ কি?


আমি যেহেতু মেয়ের মামা, তাই তার  বাবা/মা কে অপশন দিতে চাচ্ছিলাম। যাতে তারা তাদের পছন্দ মতো রাখতে পারে যদি নাম পরিবর্তন করতে হয়। 

আপনি যদি আরেকটু কস্ট করে বলতেন খুব ভালো হতো। 

জাজাকাল্লাহু খাইরান।

নোটঃ আমি কমেন্টে প্রশ্নগুলো করেছিলাম। মনে হলো কমেন্ট থেকে হয়তো আপনার/এডমিন এর নজরে আসে না, তাই এখানে আবার প্রশ্ন করা। আপনার জ্ঞাতার্তে, যাতে আপনাকে ২ বার কস্ট করতে না হয়। দয়া করে যে কোন একটা ইগ্নোর করবেন। 

1 Answer

0 votes
by (58,470 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব,

শরীয়তের বিধান হলো কোনো মহিলা যদি তার স্বামীর  নামের সাথে নিজের নাম লাগায়,তাহলে কোনো সমস্যা নেই। জায়েজ আছে। (আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল ৭/১২)   

তবে নিজের নামের সাথে পিতার নাম লাগানোই সুন্নাহ। একজন মানুষের নাম তার বাবার সাথেই যুক্ত হওয়া উচিত। এটাই মুসলিম নামকরণের মৌলিক নীতি। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, পালক পুত্রদেরকে তাদের পিতার সাথে সম্পর্কিত করে ডাকো। এটি আল্লাহর কাছে বেশী ন্যায়সংগত কথা। আর যদি তোমরা তাদের পিতৃ পরিচয় না জানো, তাহলে তারা তোমাদের দীনী ভাই এবং বন্ধু না জেনে যে কথা তোমরা বলো সেজন্য তোমাদের পাকড়াও করা হবে না, কিন্তু তোমরা অন্তরে যে সংকল্প কর সেজন্য অবশ্যই পাকড়াও হবে। আল্লাহ ক্ষমাকারী ও দয়াময়। (আহযাব:০৫)

সাভাবিকভাবে এই আয়াত থেকে বোঝা যায় যে, ইসলামে নাম পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে কিছু বাধ্যবাধকতা আছে। মনে চাইলেই পিতার নাম বাদ দিয়ে স্বামীর নাম ব্যবহার করা ঠিক নয়। অবশ্য কেউ যদি স্বামীর নাম ব্যবহার করতে চায় সেটাও নাজায়েজ হবে না। কেননা কখনো কখনো স্বামীর নাম ব্যবহার করাটাও প্রয়োজন হয়ে পড়ে।

একজন নারী বিবাহের পরে তার আগের নাম পরিবর্তন করে স্বামীর নাম ব্যবহার করবে এটা ইসলামিক আদর্শ বা সংস্কৃতির কোন অংশ নয়। এই ঐতিহ্যের অ-মুসলিম সমাজে (বিশেষ করে ১৪ ই শতাব্দীর ইংল্যান্ডের ফরাসি পরিচিতি) প্রবণ প্রবণতাগুলির মধ্যে রয়েছে, যার মধ্যে একটি নারী এর উপাধি বিয়ের পর তার সামাজিক অবস্থান, সেইসাথে তার আইনগত সম্বন্ধকে চিত্রিত করেছে।

একজন মহিলা তার স্বামীর উপাধি গ্রহণ করে দেখানোর জন্য যে এখন থেকে, সে তার স্বামীর দায়িত্ব এবং তার পরিবারের একটি অংশ ছিল। এমনকি এ সময়ে, মুসলিমদের নারীরা কিছু আইনি অধিকার থেকে বঞ্চিত হয় যেগুলি নারীদেরকে উত্তরাধিকারসূত্রে ভাগ করে নেওয়ার অধিকার এবং সম্পত্তি এবং অন্যান্য সম্পদের ক্রয় ও অধিকার হিসাবে প্রদান করে।

আমরা আমাদের নবীর সাহাবীগণের মধ্যে এমন কিছু সাহাবি দেখতে পাই তারা যারা পিতা মাতার নামে নয় বরং অন্য নামেই পরিচিত ছিলেন। যেমন অন্ধ সাহাবি যিনি নামাজের আজান দিতেন। তিনি ইবনে উম্মে মাকতুম। তিনি তার মায়ের নাম দ্বারাই পরিচিত ছিলেন। এমনকি তাইমিয়াহ নামটি বিখ্যাত ইসলামি বিশেষজ্ঞ ইবনে তায়মিয়াহের নাম, যিনি এই নামের সাথে সুপরিচিত, মূলত একটি গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি যিনি তার পিতার পরিচয়ে ছিলেন না।

অতএব, এটা বলা যেতে পারে যে, দেশে আইন বা প্রগতিশীল সামাজিক রীতিনীতির আইন অনুযায়ী আইনি সমস্যা বা যথেষ্ট সামাজিক চ্যালেঞ্জ রোধ করার জন্য একজন মহিলা বিয়ের পর তার উপাধি পরিবর্তন করেন, সে ক্ষেত্রে তিনি তা করতে পারেন। মুসলিম নারীর জন্য তার নিকাহ (বিবাহের চুক্তি) পরে তার উপাধি পরিবর্তন না করাই ভালো।

নিজের নামের সাথে বাবার নাম যুক্ত করা নিষেধ নয়। তবে এটি ওয়াজিব ফরজ তথা আবশ্যকও নয়। আল্লাহ তাআ’লা বলেন,

 ادْعُوهُمْ لِآبَائِهِمْ هُوَ أَقْسَطُ عِندَ اللَّهِ

 ‘তোমরা তাদেরকে তাদের পিতৃপরিচয়ে ডাক। এটাই আল্লাহর কাছে ন্যায়সঙ্গত।’ (সূরা আহযাব ৫)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১. "মানতাহা বিনতে অলিদ" নাম রাখা ঠিক আছে। এতে কোন সমস্যা নেই।

*মারিয়া (ماريا) আরবি শব্দ থেকে এসেছে। অনেকের এটি একটি হিব্রু ভাষার শব্দ। এর অর্থ আল্লাহ তা’আলার সেবিকা ও ইবাদাতকারিণী। তবে ভাষা অনুযায়ী মারিয়া নামের অর্থের কিছুটা তারতম্য রয়েছে। যেমন আরবি ভাষায় অর্থ উজ্জ্বলতা অথবা বিশুদ্ধতা। এছাড়াও মারিয়া নামের আরো অর্থ খুজে পাওয়া যায় যেমন প্রিয়, যিনি পবিত্র, বিশুদ্ধতা, উজ্জ্বল, ফর্সা রঙের মহিলা।

* মানহা নামের আরবী অর্থ “আল্লাহর উপহার, দিক, জীবনের পথ ইত্যাদি”।

যদি কেউ নামের সাথে বাবার নাম যুক্ত করতে চায় তাহলে উত্তম হলো বিন / বিনতে যুক্ত করে বলা বা লেখা। কিন্তু নামের সাথে যদি মেয়ের বাবার নাম যদি যুক্ত না করা হয়, তাহলে এতে কোনো গুনাহ হবেনা। কোনো সমস্যা নেই।

*মাহেক নামের অর্থ সুগন্ধ, সুগন্ধবাসী, সফল ইত্যাদীতবে এটি ছেলেদের নাম।

*মাহিরা নামের আরবি অর্থ হলো পারদর্শী।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...