আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
45 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (9 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম,
উস্তাদ আমি একটা বিরাট সমস্যায় পড়ে গিয়েছি, আমি এই সমস্যা থেকে কোনো ক্রমেই বের হতে পারছি না। আমাকে কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে সঠিক গাইড-লাইন দিয়ে উপকার করবেন প্লিজ।

বছর খানেক আগে এক বোন খুব বিপর্যন্ত/ডিপ্রেশনে ছিলো, হাঁত কাটা, কস্টের স্টোরি,  পোস্ট শেয়ার করতো, তখন আমি মানবতার দিক দিয়ে বিবেচনা করে কয়েকটা কথা বলেছিলাম কুরআন ও সুন্নাহর যতটুকু জানতাম ভালো মন্দ।  তখন থেকে সে স্বাভাবিক হয়ে যাই আর আমাকে নিজের বড় ভাই বানিয়ে ফেলে। আমাকে ছাড়া কিছু বুঝে না, কারো কথা শুনে না এমন টা হয়ে যায়।

কিন্তু আমি জানি যে ইসলামে রক্তের বাহিরে ভাই-সম্পর্ক জায়েজ নেই, তাই তখন থেকে আমি ইগনোর করতে থাকি, এবং কথা অফ করে দেয়।

কিন্তু সে আবারো যোগাযোগ করতে থাকে আর আবারো কথা বলা শুরু হয়, আর তখন বুজতে পারি সেই মেয়ের কিছু টা হলেও মানসিক প্রোবলেম আছে, অনেকটাই এব নরমাল মনে হয়, তাকে সব কিছুই বুঝানো যাই, সে সব ই বুঝে, ইসলাম প্রেকটিস ও করে, কিন্তু আমাকে বড় ভাই বানিয়েছে আমি নন মাহরাম হওয়া সও্বেও,  আমাকে কোনো ভাবেই ছাড়ছে না, যেতে দিচ্ছে না।

তার কথা তার বিয়ে পর্যন্ত হলেও তার সাথে কথা বলতে হবে বড় ভাইয়ের মতো। তা না করলে যে মারা যাবে এমন হুমকি দেয়, আবারো হাত কাটে, এক সাথে অনেক ঔষধ খায়, ফাসি দিবে, এমন মরে যাবে ভয় দেখিয়ে আমাকে ভাই বানিয়ে আটকে রেখেছে। তার কাছে আমার ফ্যামিলির সবার নম্বর আছে, আমি যোগাযোগ অফ করলে সে কোনো না কোনো ভাবে আমার খোঁজ নেয় অথবা অন্য কে দিয়ে নেওয়ায়। কোনো ভাবেই আমার পিঁছু ছাড়ছে না।

আমার বয়স ২৮,  আমার বোনের বয়স ১৮।(দুইজনেই অবিবাহিত)।

যদিও কেউই  দুইজন দুজনকে ভাই-বোনের উর্ধে চিন্তা করি না, বা কেউ কোনো খারাপ সম্পর্কে জড়িত না। কিন্তু তবু ইসলামে তো এমন ভাই-বোন কথা বলা জায়েজ নাই। তাই আমি এখান থেকে বের হতে চাই৷  কিন্তু আমি বের হতে পারছি না। মেয়ের অবস্থা এমন হয়ে গেছে তার মায়ের পরে আমাকে বড় ভাই হিসেবে স্থান দিয়েছে, আমাকে ছাড়া বাঁচবে না এমন অবস্থা হয়ে গিয়েছে। খাওয়া-দাওয়া পড়াশোনা সব বন্ধ করে রাখছে। কান্না কাটি করে, চিল্লা চিল্লি করে, এক প্রকার পাগল টাইপ। দুই ফ্যামিলি বিষয়টি জানেন, অনেক মিমাংসা করার চেষ্টা করেছেন, কথা বন্ধ করতে বলেছেন, কিন্তু মেয়ের ফ্যামিলি ২ দিন না যেতেই হাত-পায় ধরে আবার রিকুয়েষ্ট করতে থাকে একটু কথা বলে সুস্থ করার জন্য,  ডাক্তারও নাকি বলেছে যে, সে যেটা চাই তাকে যেনো সেটা দেওয়ার চেষ্টা করে!

আর এই দিকে তাকে কথা বলার সুযোগ দিলে, আমার পড়াশোনা ও কাজের সময় অনেক নষ্ট হচ্ছে,আমাকে ঠিক মতো কাজ করতে দেয় না, আমার কাজে বাধা দেয়, আমার ডিসট্রাব হয়।তার কারণে বাধ্য হয়ে আমাকে অনেক সময় অনলাইনে থাকতে হচ্ছে । এই কারণে আমি নিজেই অনেক বিরক্ত,  চিন্তিত, ডিপ্রেসড এবং অসুস্থ ।

 আমি অনেক চেষ্টা করেছি৷ সর্পোট দিয়েছি, সে কোনো ভাবেই  সুস্থ বা স্বাভাবিক হচ্ছে না, আমাকে কোনো ভাবেই ছাড়ছে না, বরং আমার দিনের পর দিন সময় নষ্ট হচ্ছে, এখন আমার পক্ষে কথা বলাও সম্ভব হচ্ছে না।

তার ফ্যামিলি তাকে চিকিৎসাও করাচ্ছে না, আবার এই অস্বাভাবিক আচরণের কারণে বিয়েও দিতে পারছে না। বিয়ের জন্য পাএ নিয়ে আসলেও সে কোনো কারণ দেখিয়ে পছন্দ হয়নি বলে না করে দিচ্ছে। সে যেমন চাই ওমন জীবন সঙ্গী খুঁজতে বলে, কিন্তু ওমন ছেলে পাচ্ছে না। এভাবে সময় ফুরাতেই থাকছে, অবস্থার কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না।

আমার এখন করণীয় কি?

> যদি আমি আল্লাহ তাআলার আদেশ মেনে কথা বলা বন্ধ করে দেয়, আর তার যদি কোনো ক্ষতি হয়, বা সে যদি মারা যায়, আল্লাহ কি আমাকে দায়ী করবেন?

> না তার জীবন রক্ষার্থে তার বিয়ে পর্যন্ত  ভাই হিসাবে কথা বলা উচিত হবে? নাকি কথা না বলাই উওম হবে?

আমার এখন কি করা উচিত হবে?

উস্তাদ আমি খুব হতাশ, প্লিজ আমাকে সঠিক রাস্তায় চলার নসিহত করুন, পরামর্শ দান করুন!


জাযাকুমুল্লাহু খইর।

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠] 

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١] 

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
উপরোক্ত আয়াত সমূহে পরিস্কার ভাষায় মেয়েদের অন্যের সামনে নিজেকে প্রকাশ করতে, অপ্রয়োজনে কথা বলতে, আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে। যা পরিস্কার ভাষায় জানাচ্ছে যে, প্রয়োজন ছাড়া মেয়েদের সাথে কথা বলা জায়েজ নয়।

দ্বীনী বা বৈধ কোন জরুরী বিষয় থাকলে পর্দার আড়ালে থেকে কম কথায় শেষ করে নিবে। অযথা কথা বলা হারাম।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এভাবে গায়রে মাহরাম মহিলার সাথে কথাবার্তা বলা, ভাই বলে পরিচয় দেয়া কোনোটিই জায়েজ নয়।

এখন যদি আপনি আল্লাহ তাআলার আদেশ মেনে কথা বলা বন্ধ করে দেয়, আর তার যদি কোনো ক্ষতি হয়, বা সে যদি মারা যায়, আল্লাহ আপনাকে দায়ী করবেননা।

এক্ষেত্রে তার সাথে কোনক্রমেই কথা যাবেনা।

হ্যাঁ, সমাধানের একটি পথ আছে,তাহা হলো তার মারাত্মক অবস্থা বিবেচনা করে তাকে আপনি বিবাহ করে নিতে পারেন।
তাহলে আর কোনো সমস্যাই থাকবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...