USA সার্ভের বিধান

Question

আসসালামু 'আলাইকুম।
অনলাইন ইনকামের একটি মাধ্যম USA সার্ভের কাজটি হারাম কিনা, এ বিষয়ে জানতে চাচ্ছি। এটি সম্বন্ধে মৌলিক কিছু বিষয় নিম্নে উল্লেখ করা হলো :

১/ এ কাজটি বাংলাদেশ থেকে করা যায় না। আইপি এড্রেস অবশ্যই আমেরিকার হতে হয়, সে কারণে প্রক্সি কিনতে হয়। সাধারণ কোনো ভিপিএন দিয়েও কাজটি করা যায় না। তাই প্রক্সি/ভিপিএস দিয়ে প্রথমেই আমাদের ফোন/পিসিতে আমেরিকার আইপি এড্রেস দেওয়া হয়, যাতে সার্ভে সাইটগুলোতে প্রবেশ করা যায়।

২/ একটি ফেক প্রফাইল বানাতে হয়, নিজের মতো করে। সাধারণভাবে সেটি হয় মধ্যবয়স্ক কোনো নারী/পুরুষের, যার সন্তান রয়েছে। বাড়িতে রয়েছে বাবা-মা, বাৎসরিক ইনকাম ৬০/৭০ হাজার ডলার, আমেরিকারই কোনো একটা অঞ্চলে থাকে। এরকম প্রফাইল দিয়ে আসলে বোঝানো হয় যে, আমেরিকারই কোনো বাসিন্দা সার্ভের কাজটি করছে।

৩/ বিভিন্ন পণ্যের ফিডব্যাক করাই মূলত সার্ভের কাজ। পরিপূর্ণভাবে সার্ভেটি করতে পারলে নির্দিষ্ট পরিমাণ ডলার একাউন্টে জমা হয়, যা উইথড্র করা যায়।
বিভিন্ন পণ্যের মধ্যে অবধারিতভাবেই আমেরিকার মদ, সিগারেট ও তামাকজাত পণ্যের ফিডব্যাক করতে হয় মাঝেমাঝেই। অবশ্য হালাল প্রচুর জিনিসেরও সার্ভে আসে।
অর্থাৎ আদতে এগুলো না খেয়ে, না কিনেও মিথ্যা একটা ফিডব্যাক দিয়ে দিতে হয়।

প্রসঙ্গত উল্লেখিত, প্রক্সি/ভিপিএস কেনার ভালোরকম বিজনেস রয়েছে অনলাইনে। সে কারণে সার্ভে ওয়েবসাইটগুলোও জানে, তাদের সাইটে অন্য দেশের মানুষও প্রবেশ করবে এবং সেটা তারা আটকাতে পারবে না।
কিন্তু তারাও চায়, পণ্যের ফিডব্যাকটা একদম হুবহু আমেরিকার নাগরিকের মতোই আসুক।
বিষয়টা হচ্ছে তাই এরকম যে, কোম্পানি জানে আমি মিথ্যা বলব। কিন্তু তারা চায়, মিথ্যাটাও আমি সঠিকভাবে বলি।

এখন আমি জানতে চাচ্ছি, এ কাজটার বিধান কেমন হবে?
আর প্রক্সি/ভিপিএস কিনে আরও কিছু কাজ করা যায়। অর্থাৎ ছদ্মবেশ ধারণ করে অন্য দেশের আইপি এড্রেস দিয়ে কাজ করা। এ কাজগুলোর বিধান সম্পর্কেও জানাবেন দয়া করে।

আল্লহ আপনাকে অনেক অনেক জাঝায়ে খইর দান করুন...

Answer 1

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

১০৩৮৪ নং ফাতাওয়ায় আমরা উল্লেখ করেছি যে,

সহীহ বোখারীর প্রথম হাদীস যা হযরত উমর রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,

انما الاعمال بالنيات الخ

প্রত্যেক কাজ নিয়তের উপর নির্ভরশীল।নিয়ত ভালো থাকলে সওয়াব পাওয়া যাবে।আর নিয়তে কোনো প্রকার সমস্যা থাকলে সওয়াব পাওয়া যাবে না,এমনকি গোনাহও হতে পারে।

এবং ধোকা দেয়া হারাম।এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

ﻣﻦ ﻏﺸﻨﺎ ﻓﻠﻴﺲ ﻣﻨﺎ 

"যে ব্যক্তি ধোকা দেয় সে আমাদের দলভুক্ত নয়" (সহীহ মুসলিম-১০১)আরো জানুন-৬৪৭

সুতরাং এই মূলনীতির আলোকে বলা যায় যে,সরকার জনগণ এমনকি সাধারণ অমুসলিমকেও ধোকা দেয়া যাবে না।তবে আত্মরক্ষার জন্য নিজেকে লুকিয়ে রাখার অনুমোদন রয়েছে।

তাই বলা যায় যে,

(১)

কাউকে ঠকানো বা ধোঁকা দেয়ার নিয়তে বিপিএন ব্যবহার কখনো জায়েয হবে না।

বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/2171

তবে নিজের আত্মরক্ষার জন্য,বা কাজের সুবিধার্থে VPN ব্যবহার করা জায়েয হবে।কিন্তু যদি এমন হয় যে,সার্ভের জন্য বা ভিন্ন কোনো কাজের জন্য কয়েকটি দেশকে নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়,তাহলে এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট দেশের বাহিরের কারো জন্য বিপিএনকে ব্যবহার করে উক্ত সুবিধাদি গ্রহণ করা জায়েয হবে না।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

আপনার বিবরণ অনুযায়ী উক্ত সার্ভে কাজে আপনি জড়িত হতে পারবেন না।কেননা তাতে মিথ্যা,ধোঁকা সহ অনেক খারাবি রয়েছে।তাই এগুলো জায়েয হবে না।কম্পানি বিভিন্ন পন্যকে তারা রিভিউ দেখিয়ে টাকা নিবে।তাই মিথ্যা জানার পরও কোনো প্রকার সম্ভাব্য পদক্ষেপ গ্রহণ না করা কম্পানির জন্য জায়েয হবে না, উচিৎ হবে না।